সত্য ভৌতিক ঘটনা

সত্য ভৌতিক ঘটনা

মি এখন যে ঘটনাটা শেয়ার করছি সেটা ঘটেছিল আজ থেকে প্রায় ৩/৪ বছর আগে। এটা এমন দুই বন্ধুর ঘটনা যারা প্রায় রাতেই সিনেমা হলে যেতো সিনেমা দেখতে। এবং হলের শো শেষ করে বাড়ি ফিরতে তাদের প্রায় বেশ রাত হয়ে যেত। এককথায় তারা দুজনেই ছিল সিনেমা ভক্ত। অর্থাৎ রাতে সিনেমা দেখাটা তাদের ছিল একটা নেশা। তারা দুজনেই একই গ্রামে বাস করত এবং তাদের দুজনের বাড়িই ছিল পাশাপাশি। তাদের গ্রামটি ছিল খুবই নিরিবিলি এবং সিনেমা হল ছিল তাদের বাড়ি থেকে প্রায় এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। সেদিন ছিল বুধবার। তারা হলের শো শেষ করে বাইরে বের হয়ে দেখতে পেল যে বাইরে একটু আগেই এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে। প্রতিদিন তারা হল থেকে বেড়িয়ে রিক্সায় করেই বাড়ি ফিরে। কিন্তু সেদিন প্রচণ্ড বৃষ্টির কারনে হলের বাইরে কোন রিক্সা বা কোন

যানবাহন ছিল না। তাই তারা পায়ে হেটেই বাড়ি ফিরার সিদ্ধান্ত নেয়। তাদের বাড়ি ফেরার রাস্তা ছিল মেইন রাস্তা থেকে একটু ভেতরে। দু একটা রিক্সা আর সাইকেল ছাড়া অন্য কোন যানবাহন সেই রাস্তায় যাতায়াত করতে পারেনা। রাস্তার দুপাশে ঘন জঙ্গল আর একটা মস্ত বড় বাঁশঝাড়। রাত তখন প্রায় শোয়া এগারোটা কি সাড়ে এগারোটার মতন হবে। তারা দুজনে তাদের বাড়ি যাওয়ার সেই রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছে। কিছুদূর যেতেই তারা তাদের সামনে একটি রিক্সা দেখতে পেল। তারা রিক্সার কাছে গেল এবং রিকশাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করল, ভাই যাবেন? রিকশাওয়ালা কোন উত্তর দিল না। কোথায় যাবেন তাও জিজ্ঞেস করল না। শুধু তার ঘাড় নাড়িয়ে ইশারায় হ্যাঁ বোধক সম্মতি জানাল। এরপর তারা দুজনে রিক্সায় উঠে। রিক্সা চলতে শুরু করল। কিছুদূর সামনে এগুতেই তাদের মধ্যে একজন রিক্সাওয়ালাকে জিজ্ঞেস করল, ভাই এত রাতে এই বৃষ্টির মধ্যে রিক্সা চালাতে আপনার ভয় করে না? কিন্তু রিকশাওয়ালার মুখ থেকে এবারও কোন উত্তর বেরুলো না। এবার তারা দুজনেই একটু অবাক হয়ে গেল। তাদের মধ্যে একজন সেই

রিকশাওয়ালার পায়ের দিকে তাকাল, এবং সে হাত দিয়ে ইশারা করে তার পাশের জনকে তাকাতে বলল। তারা দুজনে তাকিয়ে যা দেখল তাতে তাদের দুজনেরই শরীর শিউরে উঠে। তারা দেখল রিকশাওয়ালার পা দুটো কোন স্বাভাবিক মানুষের পায়ের মত নয়। বরং তার পা দুটো ছিল অনেকটা ঘোড়ার পায়ের মতন। এবং তার পা দুটি ছিল রিক্সার প্যাডেল থেকে অনেকটা উপরে। অর্থাৎ সে প্যাডেলের সাথে পা স্পর্শ না করেই রিক্সা চালাচ্ছে। তারা কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ রিকশাওয়ালা পেছন ঘুরে তাদের দুজনের দিকে তাকাল। এবার তারা দেখল, রিকশাওয়ালার সেই ভয়াবহ চেহারাখানা। তার চোখ দুটো ছিল এমন যে, কোন মানুষ মারা যাবার পর তার চোখ কোন কিছুতে খেয়ে ফেললে ভেতরে যেমনটা অন্ধকার থাকে। ঠিক তেমন। এবং তার মুখের উপরের মাংসগুলো অনেকটা খুলে খুলে পরছে এবং তা থেকে রক্ত বেয়ে বেয়ে পরছে। তাদের দুই বন্ধুর মধ্যে একজন ছিল একটু ভীরু টাইপের। এই পরিস্থিতি দেখা মাত্রই সে অজ্ঞান হয়ে যায়। এবং আরেক বন্ধু চিৎকার করে সেখান থেকে দৌড়ে চলে যায়।

অবশেষে সে একটা বাড়ির সামনে গিয়ে পরে। এরপর বাড়ির লোকজন বাইরে বেড়িয়ে আসে এবং সবকিছু শুনে আরও লোকজন ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে তার সেই বন্ধু অজ্ঞান অবস্থায় মাটিতে পরে আছে। কিন্তু সেখানে সেই রিক্সা আর রিকশাওয়ালা রুপি সেই বীভৎস চেহারার লোকটির কোন চিহ্নও সেখানে পাওয়া গেল না। এরপর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাকে ট্রিটমেন্ট করা হয় এবং আস্তে আস্তে সে সুস্থ হয়ে উঠে। এরপর তারা আর কোনোদিনও রাতে সেনেমা হলে সিনেমা দেখতে যায়নি।

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত