আজ মায়ার বিয়ে।সে জানেনা তার বিয়ে কার সাথে হচ্ছে।বউ সেজে সেই সন্ধ্যা থেকে বসে আছে।বর্তমান সময়ে এসেও সে তার বরের ছবি দেখেনি।তবে নাম শুনেছিলো সবুজ।এসব ভাবতে ভাবতেই কেউ একজন এসে বলে গেলো বর এসে। শুনেই মনে এক ভয় কাজ করতে লাগলো।রাত ৮টায় তার বিদায় কার্য শেষ হয়ে গেল। বাসর রাতে বসে ভাবছে তার বর এতোটাও খারাপ না।দেখতে শুনতে ভালোই।
এদিকে সবুজ ভাবছে তার অচেনা একটি মেয়ে সাথে বিয়ে হয়েছে। কিভাবে কি বলবে যেয়ে।।।যাই হোক রুম এর সামনে গেলো।হঠাৎ খেয়াল করলো রুম থেকে কিছু শব্দ আসছে।শব্দটা এমন ছিলো যেনো কেউ করাত দিয়ে ঘষে ঘষে কিছু কাটছে।দরজায় কান দিয়ে শুনার চেষ্টা করলে সেই শব্দ পেলো না।এখন ঠিক হাড় চিবানোর শব্দ পাচ্ছে। সে ভয় পেয়ে গেলো।তখন রাত প্রায় ১টা।বাড়ির সব মানুষ ঘুমাচ্ছে।সে কি করবে বুঝতে না পেরে বাহিরেই কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে রইলো।তারপর আবার কারো কান্নার শব্দ পেলো। ভাবলো মায়া কাদছে তাই দরজায় টোকা দিলো। কারন খুলার সাহস তার ছিলো না।তারপর মায়া এসে দরজা খুলে দিলো।দেখলো সব ঠিকঠাক।সে ভাবলো তার ভুল ছিলো।কিছু না ভেবেই ঘুমিয়ে পরলো।হঠাৎ মাঝ রাতে আবার মাংস চিবানোর শব্দ পেলো।উঠে দেখলো
মাংস চিবানোর শব্দে উঠে সবুজ দেখলো মায়া ইঁদুর খাচ্ছে।দেখতে এতোটাই বাজে ছিলো যে তার বমি আসছিলো কিন্তু মায়া যেনো বুঝতে না পারে তাই কোনোভাবে বালিশ চাপা দিয়ে শুয়ে ছিলো।
ভোরে আযান দিচ্ছে এমন সময় সবুজ চোখ খুলে দেখলো মায়া তার সাথেই ঘুমাচ্ছে।তার শরীরে কোন রক্তের চিহ্ন নেই। সবুজ ভাবলো মায়া উঠলে তাকে জিজ্ঞেস করবে।
সকাল ৮টায় ডাইনিং টেবিলে মায়ার সাথে দেখা হলো।কিন্তু সে এতোটাই স্বাভাবিক ছিলো যেনো কিছুই হয়নি।তাই সবুজ ভাবলো রাতে হয়তো স্বপ্ন দেখেছিলো।
সারাদিন সব নরমাল ছিলো।যেই মাগরিবের আযান দিলো মায়া কেমন যেনো অস্বাভাবিক আচারন করতে লাগলো।কানে হাত দিয়ে সারা বাড়ি দৌড়াদৌড়ি করছিলো।
সবুজঃ কি হয়েছে? এমন করছো কেনো?
মায়াঃ আমার সহ্য হচ্ছে না। একদম সহ্য হচ্ছে না
সবুজঃ কেন? কি হয়েছে?
মায়াঃ ওদের চুপ করতে বলো
সবুজঃ কাকে কি বলবো?
এমন সময় মায়া সবুজকে জোরে ধাক্কা দিয়ে দৌড়ে চলে গেলো রুমে।সবুজ ধাক্কা খেয়ে অনেক দূরে ছিটকে পড়ে গেলো।তখন বুঝতে পারলো। একটা মেয়ে এতো জোরে ধাক্কা দিতে পারে না।।নিশ্চয়ই অশরীরী কিছু ভর করেছে
সবুজ নিজেকে কোনোরকম সামলে নিয়ে মায়ার পিছু নিলো।তাদের রুমে গিয়ে যা দেখলো তাতে তার মাথা ঘুরে যাচ্ছিলো
মায়া খাটে তার মাথা নিচে আর পা উপরের দিকে করে হাসছে।আর বলছে ” তোর বউকে নিয়ে যাবো।কেউ বাধা দিলে রেহাই পাবে না।মাত্র তো ক্ষতি করা শুরু।ওকে শুধু আমি চাই। তুই কেনো বিয়ে করলি।”
সবুজ অনেক ঘাবড়ে গেলো।কি করবে বুঝতে না পেরে তার মাকে সব কথা বলল।তার মা চেনা এক হুজুরকে ডেকে বিষয়টি খুলে বললো।তারপর হুজুর ঘরের সব দরজা জানালা বন্ধ করে দোয়া পাঠ করতে লাগলেন।
এখানে মায়া দোয়া শুনে আরও রেগে গেলো।এক ঝটকায় ঘরের সব ভেঙে ফেললো।বলতে শুরু করলো “তোরা আমার কিছুই করতে পারবি না।যত বাড়াবাড়ি করবি মায়ার তত ক্ষতি করতে থাকবো।এই বলে মায়ার উপর ভর করে থাকা অশরীরী মায়ার হাত দিয়েই একটি ব্লেড নিয়ে হাত পায়ে আচড় কাটছে।তা দেখে সবাই কান্না করে দিলো আর হুজুরকে চলে যেতে বলল।
এভাবে দিনের পর দিন মায়ার অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকলো।বলেছিলো আমাবস্যার রাতে নিয়ে চলে যাবে।
আর দুদিন বাকি আমাবস্যার। এই ভেবে সবুজ অনেক কান্নাকাটি করে।এমন সময় পাশের বাসার এক খালা একজন হুজুর নিয়ে আসে।হুজুর প্রথমে মায়ার হাত পা বাধে।। তারপর দোয়া পড়ে মায়ার উপরের আত্মাকে জিজ্ঞেস করে কিভাবে আসলো।ভুতটি জানায় যে ” মায়ার হলুদের দিন মায়া গায়ে হলুদ মেখে ছাদে উঠেছিল। তখন তাদের বাসার পাশে ময়লার ওখান থেকে হলুদের গন্ধে এসে ভর করে ওর উপর।এখন মায়াকে মেরে ওর মতো বানিয়ে নিবে।”
হুজুর দোয়া পড়ে তাবিজ আর পানি পড়া ছিটিয়ে দিলো।কিন্তু এতো সহজে ছারছিলো না বলে শুকনো লংকা পুড়ে তার নাকের সামনে নিতেই আত্মাটি চিল্লাচিল্লি করে মাফ চাইতে লাগলো।আর মায়ার শরীর ছেরে চলে গেলো।এভাবে মায়া রেহাই পেলো।
********************************************সমাপ্ত******************************************