আদমখোর

আদমখোর

আমরা অনেকেই হয়তো অনেকের কাছ থেকে আদমখোরের কথা শুনেছি। অর্থাৎ আদমখোর হচ্ছে এমন এক জিনিস যা বিভিন্ন কবরস্থান থেকে মৃত মানুষের মাংস, কলিজা খেয়ে বেঁচে থাকে। আমরা জানি যে, শহরাঞ্চলের তুলনায় সাধারনত গ্রামাঞ্চলের নিরিবিলি পরিবেশে অলৌকিক ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে থাকে। শহরে যারা বাস করে তাদের হয়তো এটা বিশ্বাস নাও হতে পারে। কিন্তু যারা গ্রামে থাকে তাদের কাছে এইসব ঘটনা নতুন কিছু না। এখন আমি এরকমই এক আদমখোর ও কবরস্থানের ঘটনা শেয়ার করছি।। যে ঘটনাটি ঘটেছিল যশোর জেলার মহেশখালি নামের এক গ্রামে। গ্রামটি ছিল একেবারেই নিরিবিলি। গ্রামের পাশে ছিল ছোট্ট একটা নদী আর তার ঠিক পাশেই ছিল একটা কবরস্থান। সেই কবরস্থানে প্রায়ই কিছু আজব আজব ঘটনা ঘটত। যেমন, সেখানে কোন লাশ দাফন করে আসলে পরদিন সেই লাশের আর কোন খোঁজ পাওয়া যেত না। অর্থাৎ পরদিন লাশের কবর পাওয়া যেত পুরপুরি মাটি খোরা অবস্থায়। এবং মাঝে মাঝে কবরের আশেপাশে দু একটা হার পরে থাকতে দেখা যেত। গ্রামের লোকজন

ব্যাপারটি বেশ সহজ ভাবেই নিল, এবং তারা মনে করল হয়তো কোন কুকুর-শেয়াল কিংবা কোন হিংস্র জীবজন্তু লাশ নিয়ে খেয়ে ফেলে। তাই তারা কবরস্থানে গার্ডের ব্যবস্থা করে। এবং গার্ডের থাকার জন্য কবরস্থানের পাশেই একটি ছোট্ট ঘর করে দেয়া হয়। এরপর বেশ কয়েকদিন আর এইরকম ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু ঘটনাটা ঘটল তার বেশ কিছুদিন পর। সেদিন ঐ গ্রামেরই ৪/৫ বছরের ছোট্ট একটা শিশু পানিতে ডুবে মারা গিয়েছিল। আর তার কবর দেয়া হল সেই কবরস্থানটিতে। ঐদিন গার্ড রাতে শুয়ে থাকা অবস্থায় হঠাৎ করেই মাঝ রাতে তার ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং ঘুম ভেঙ্গেই সে কিছু অদ্ভুত শব্দ শুনতে পায়। শব্দগুলো ছিল এইরকম যে, কোন হারগুর চিবুলে যেই রকম শব্দ হয়, ঠিক তেমন। সে ভাবল নিশ্চয়ই কবরস্থানে কোন শেয়াল- কুকুর এসেছে। তাই সে শব্দ শুনার সাথে সাথে এক হাতে তার লাঠি আর এক হাতে একটি হারিকেন নিয়ে কবরস্থানে যায়। সেখানে গিয়ে এবার সে যা দেখতে পেল তাতে তার প্রান বের হয়ে যায় যায় অবস্থা। সে তার হারিকেনের আলোতে স্পষ্ট দেখতে পেল যে, বিরাটাকার অদ্ভুত ধরনের

কিছু একটা কবর খুরে সেই শিশুটির লাশ বের করে ছিরে ছিরে খাচ্ছে। [সেই গার্ডের বর্ণনায় সেই অদ্ভুত ধরনের প্রাণীটি ছিল এইরকম যে, কোন একটা ৮/৯ ফুট উচ্চতার দেখতে অনেকটা মানুষের মত, কিন্তু তার মাথার অংশ ছিল মানুষের মাথা থেকে একদম আলাদা, কোন একটা হিংস্র জানোয়ারের মত। এবং তার পুরো শরীর ছিল বড় বড় লোমে ঢাকা] এই অবস্থা দেখা মাত্রই প্রচণ্ড ভয়ে তার হাতের লাঠি আর হারিকেন মাটিতে ছুরে ফেলে দিয়ে এক দৌড়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায় এবং একটা বাড়ির সামনে গিয়ে বেহুঁশ হয়ে পরে যায়। পরদিন সকালে তার জ্ঞান ফিরে এলে চোখ মেলে দেখে তার চারপাশে অনেক লোকজন দাঁড়িয়ে আছে। এরপর সে সবাইকে সব ঘটনা খুলে বলে। তারপর তাকে তার বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন পর হঠাৎ তার শরীরে প্রচণ্ড জ্বর হয়। এরপর থেকে আস্তে আস্তে সে প্রচণ্ড দুর্বল হয়ে পরে এবং একসময় সে মারা যায়। এরপর সেই কবরস্থানটি স্থানীয় লোকজন মাটি চাপা দিয়ে দেয় এবং সেখানে আর কোনোদিন কোন লাশ দাফন করা হয়নি।

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত