হোষ্টেলের করিডোরে

হোষ্টেলের করিডোরে

হোষ্টেল লাইফ।যে বা যারা কখনো থাকেন নি খুব মিস করছেন লাইফে। কেননা আপনি অনুভব ই করতে পারবেন না কতটা মজার ও কতটা যন্ত্রণার।এ যেন এক অতি যত্নে গড়া বিশাল পরিবার।

2009 এর ঘটনা। আমাদের রুমে আমরা ৪ জন। আর ফুল হোষ্টেলে প্রায় ১০০ এর কাছাকাছি মেয়েদের তলপি-তলপা সহ বসবাস।

মুসলমানদের পবিত্র ঈদুল আযাহার দিন ঘনিয়ে এসছে।আর তাই হোষ্টেল ও আনেক টা জন মানব শূণ্যে পরিনত হচ্ছে।আমার রুমে আমি ছাড়া বাকিরা চলে গেছে।

আমি তখন ইন্টারমিডিয়েড এর ছাএী । সাইন্স এর ছিলাম বলে পড়াশুনার ও প্রাইভেট এর খুব চাপ ছিল এবং প্রাকটিকাল কিছু কাজ ছিল। তাই আমি,সাফা,আজমেরী,সনি,সায়মা ও আনান্যা গ্রুপ এর চার জন ছিলাম বিভিন্ন রুমে। লোক সংখা বলতো এই ছিল পুরো হোষ্টেল জুরে ।

আমাদের কলেজে দুটি হোষ্টেল ভবন ছিল।চারতলা বিশিষ্ট। খুব চমৎকার নাম ও ছিল হোষ্টেল দুটির। সিনিয়র আপুরা যেটিতে থাকতে সেটার নাম শাপলা আর আমরা ছিলাম শিউলি হোষ্টেল এ।

আমার লাইফে আমি যতটুকু ইন্জয় করেছি তার সমস্তটাই হোষ্টেল জুরে।আমার আনন্দের ভুবন।কেননা সবাই আমায় খুব ভালবাসতো।

সাফা আমি ও আজমেরী। আমরা তিন জন এক রুমে চলে এসছি রুমের অনান্যদের বাড়ি যাওয়ার সুবিদার্থে।
থার্ড ফ্লেরে শুধু আমরা তিনজনই ছিলাম। অনেক মজা করছিলাম।কখন যে রাত প্রায় 3:25 টা বাজে গেল টের ই পাইনি।হঠাৎ সাফা দড়জা খুলল। ও বলল তোরা দাড়াতো করিডোর দিয়ে এত রাতে কারা হাটছে দেখে আসি। ও একটু সাহসী ছিল।আর আজমেরীর ছিল একটু ভিতু টাইপের।

সাফা দরজা খুলে বাইরে গেল।এদিকে আমি আর আজমেরী বায়োলজি প্রাকটিকাল খাতা লিখছি ও ড্রইং করছি।

কিছুক্ষন বাদে আজমেরী বলল সাফা তে বাইরে গেল এখনো আসছেনা কেন? ওর একটা বাজে হ্যাবিট ছিল বাথরুমে আনেকক্ষন কাটানোর।তাই মজা করে বললাম দেখ গিয়ে ও হয়তো ওর বাথরুম বয়ফ্রেন্ড এর সাথে টাইম দিচ্ছে।খুব মস্করা করতাম আমরা সবাই।

খানিকবাদে আমার ও সন্দেহ লাগলো ওর টাইম লাগে কিন্তু এখন ও কেন আসছেনা। তাই আমিও বেরিয়ে পড়ি।দড়জা খেলাই ছিল কিছুটা। বাইরে আসতেই একটা দমকা হাওয়া বয়ে গেল আমার শরীরের উপর দিয়ে।

আমি বাথরুমের দিকে গেলাম।সব গুলো ফাঁকা।পরে ভাবলাম ও হয়তো বেলকুনিতে।।আবছা আন্ধকার ছিল চারিপাশ। চাঁদের হাল্কা আলোয় দেখতে পেলাম এক কোন কিছু একটা আমি তো ধরে নিলাম ওই তে সাফা।তাই পা টিপে টিপে আস্তে আস্তে হাটতে লাগলাম।

ওর কাছাকাছি এসে ওর ঘারে হাত দিতেই বিকট এক আট্ট হাসিতে ফেটে পরলো।আমি বললাম আমায় ভয় দেয়া হচ্ছে তাই তো?

আমার দিক ঘুরতেই যা দেখলাম–
সাদা কাপড় পড়া এক যুবতী। আমাদের বয়সী কিন্তু চুল গুলো সাদা।চোখ দুটো নেই শুধু জ্বল জ্বল করছে অক্ষিকোটর।ইয়াবড় মুখ।এতো মুখ নয় যেন বিশাল অন্ধকার গহ্বর।রক্তের নেশায় মত্ত।কি বিশ্রী গন্ধ । আমি তো ভয়ে কাঁপছি। আমার সমস্ত শরীর অবস হয়ে যাচ্ছে। আনেক চিৎকার করছি কিন্তু মনে হচ্ছে গলা দিয়ে কোন আওয়াজ বের হচ্ছেনা।আমি দোয়া পড়তো চেষ্টা করি। এদিকে আমার শরীরে মনে হচ্ছে ছুরি মত যেন ডুকছে।ডাইনী টা আমার ঘারে কামর দেয়ার জন্য চেষ্টা করছে। আর আমি আমার সমস্ত শক্তি দিয়ে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

এক পর্যায় আমি ছুটে রুমের গেটে গিয়ে পরে যাই। কানে শুনছি অতৃপ্ত কন্ঠে ডাইনী টা বলছে তোর কপাল ভাল। কেননা ফযরের আজান পড়ে গেল। আমি অচেতন হয়ে যাই তারপর কি হয় জানিনা।
পর দিন সকালে যখন পানির ঝাপটায় চোখ খুলি। দেখি আরা সবাই কান্না করছে।

পরে জানতে পারলাম যে সাফা সেকেন্ড ফ্লোরে গিয়েছিল। আর করিডোরে যে ভুত বা আত্না ছিল তা এক বড় আপুর। তিনি অনেক আগে পারিবারিক কারনে হোষ্টেলে ফ্যান এর সিলং এর সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যায়।আর তার পর থেকেই এ আত্মা ঘুরছে।বিভিন্ন জন বিভিন্ন ভাবে তাকে দেখেছেন।

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত