আমাদের গ্রামটা পুকুর, নদী আর বিলে ঘেরা।বিলটা আমাদের এলাকার দক্ষিনপাশে।এই বিলের নাম শান্তির বিল। এই বিলের মাঝে ঝাকড়া মাথা নিয়ে দাড়িয়ে আছে এক পাঁচ শতবর্ষী বটগাছ। হয়ত ৫০০ বছরেরও বেশি বয়স এই বটগাছের। তবে তার আগে কত বছর বয়স ছিল তা কেউ জানে না। কারন তখন এখানে বসতি ছিল না।
সে যাই হোক। বটগাছটা শুধু এই এলাকার সময় পরিবর্তের সাক্ষীই নয় বরং এই এলাকার সকল ঘটে যাওয়া ঘটনারও সাক্ষী। এই বটগাছে এমন করে জট ধরেছে যে একে বৃদ্ধের মত লাগে। সেই সাথে ভয়ঙ্করও।
দিনদুপুরে কেউ সাধারনত এই গাছের আশেপাশে যায় না। আর রাত দুপুরেতো কথাই নেই। মাঝে মাঝে বটগাছের পাতায় পাতায় নাকি আলো জ্বলে তাও আবার রাত দুপুরে।
কেউ কেউ বলে তখন ওখানে নাকি ভূতেদের মেলা হয়। আবার কখনো কখনো ঐ বটগাছ থেকে আলোর ছটা উড়ে গিয়ে আমাদের পূর্বপাড়ার একটা বটগাছে বসতে দেখা যায়। সবাই বলে জ্বিনরা নাকি চলাচল করে।
এই বটগাছের ডালপালা কাটাও নিষেধ আর পড়ে যাওয়া লকড়ি জ্বালানোও।একবারের ঘটনা এই গাছের একটা ডাল শুকিয়ে গেছিল আমাদের এলাকার রমিজ মিয়া সেই ডাল কেটে নিয়ে রান্নাবান্নার কাজে লাগিয়েছিল। সেই শুরু তার অসুখ আর কোনোদিনও সারল না। আর যতগুলো ছোলে ছিল সব এক এক করে মরে বংশ পুরো নির্বংশ হয়ে গেছিল।
সেই থেকে কেউ ঐ গাছের ডাল ভাঙাতো দূরের কথা তলায় পড়া ডালো কুড়ায় না। যারা রাতে বিলে মাছ ধরতে যেত তারা নাকি অনেক ঘটনার সম্মুখীন হত। এই যেমন দেখল একটা পাখি বসে মাছ ধরল আর উড়াল দেওয়ার সময় আলো হয়ে গেল। গিয়ে আবার ঐ বটগাছে বসল আর আলো নিভে গেল।
আমাদের এলাকার সবাই তাই বটগাছটাকে বেশ ভয় করে চলে। এর পাশে ফসলো ভালো হয় না বলে। পানির মৌসুম ছাড়া বাকি সময় এটি বিরান পড়ে থাকে।