পর্ব:১
***
শৈলপুর গ্রামের পুরনো কালী মন্দির টি সম্পর্কে ছেলে-বুড়ো সবাই জানে, এটা এখন অার স্বাভাবিক মন্দির নেই। এইখানে অশরীরী কিছু একটা অাছে এটা প্রায় সকলেই এখন বিশ্বাস করে।
_
কারণ, কিছুদিন ধরে গ্রামের লোকজন এই অশরীরীর স্বীকার হচ্ছে।
সেদিন, গ্রামের জলিল মিয়ার বিয়ে ঠিক হয়, তার পাশের গ্রামের এক মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মেয়ের সাথে। বলা অাবশ্যক, জলিল মিয়ার অবস্খা ও খুব ভালো বলা যায় না, তার অার্থিক অবস্থাও মোটামোটি।
_
বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যায়, তার সাথে বরের সঙ্গী হিসেবে তার চাচা, অার তার কয়েকজন সঙ্গী কে নিয়ে যায়। যাদের সাথে তার সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে।
_
কন্যা পক্ষের বাড়িতে পৌছে বিয়ে সম্পন্ন হতে প্রায় রাত অনেক গভীর হয়ে গেছে। তাই সকালে বউ নিয়ে বাড়ি ফিরবে বরযাত্রী। তাই সকলে থাকার জন্য জায়গা বের করে নিচ্ছে। তখন জলিল মিয়ার বন্ধু রফিক সেখান থেকে চলে অাসে বাড়ি ফিরার উদ্দেশ্যে। যেহেতু তাদের গ্রাম বেশী দূরে নয়। বলা বাহুল্য, রফিক ছিল একটু অন্য প্রকৃতির মানুষ। তার বুকে ছিলো অসীম সাহস অার বেশ স্বাস্থ্যবান সেই সাথে তার নারী দেহের প্রতিও অাকৃষ্ট একটু বেশীই ছিলো।
_
মেয়ের বাড়ি থেকে রফিকের গ্রামে অাসার পথে, গ্রামের প্রায় মাঝামাঝি মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দিরটি পুরনো হয়ে যাওয়াতে এখন অার সেখানে কেউ পূজো দিতে যায় না। তার উপর অশরীর ভর। তাই সহজে কেউ এ পথে অাসতে চায় না, অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে যায় গ্রামের মানুষ।
_
দুর্ভাগ্যবশত রফিকের বাড়ি টি ও খুব বেশি দূরে নয় মাত্র দশ মিনিটের রাস্তা মন্দির পার হলেই। অার অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে গেলে প্রায় এক ঘন্টা ক্ষাণিকের মতো লাগবে। রফিক খুব ভালো করেই জানতো, মন্দিরটি সম্পর্কে। কিন্তু অবস্থা বেগতিক দেখে, এমনিতেই সারাদিনের ক্লান্তি তার উপর অাবার মাগনা মেহেনত। তাই অার অন্য রাস্তা দিয়ে না গিয়ে সোজা রাস্তা দিয়েই হাটাঁর সিদ্ধান্ত নেয় সে।
_
সাহসী হলে কি হবে যেহেতু একা অাসছিল সাথে কেউ নেই। তার উপর রাত ও অনেক গভীর, তাই ভেতরে ভেতরে চাপা ভয় কাজ করছিলো। অাকাশে চাদেঁর অালো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, কিন্তু এই জায়গাটায় একটু হালকা অন্ধকার লাগছিলো কারণ এখানে প্রচুর ঝোপ-ঝাড়, জঙ্গল অার ঘন গাছ-পালার জন্য।
_
এমন ভূতুরে জায়গা থেকে পার হওয়ার জন্য মনে মনে দূয়া-দরূদ পড়তে লাগলো অার একটু একটু করে এগুতে লাগলো।
এভাবে বেশ কিছুক্ষণ হাঁটার পর মন্দীর পার হয়ে সামনে চলে অাসছে। অাশাতীত কিছু দেখতে না পেয়ে এবার মনের খুশিতে চলতে লাগলো।
_
কিন্তু কিছুদূর সামনে এগুনোর পর দেখতে পায় ঘুমটা দেয়া এক নতুন বউয়ের মতো কে যেন পাশের জঙ্গল থেকে বের হয়ে সড়ক পার হচ্ছে। তা দেখে মনের ভেতর সন্দেহ জাগে, এত রাতে নতুন বউ একা একা জঙ্গলে কি করছিলো? তা দেখার জন্য বউয়ের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তার উপর একা মেয়ে মানুষ। মনের ভেতর লোভ ও জন্মাতে থাকে।
_
যখন খুব কাছাকাছি চলে অাসে রফিক অার ঠিক তখনি দেখতে পায় অাসলে ওইটা কোনো মেয়ে/বউ ছিলো না। অইটা অাসলে এক অশরীরী। তার কায়া বদলে যাওয়াতে এখন অাসল রূপ বেরিয়ে এসেছে। চোখের সামনে দেখতে দেখতে এত উচুঁ হয়ে যায় যে, তিন জন মানুষকে একত্রিত করে দাঁড় করালে যতটুকু লম্বা হয় ঠিক ততটুকু বড় হয়ে গেছে, চোখের মণি গুলো অাগুনের শিখার মতো লাল টক-টকে হয়ে জ্বলছিল, হাত দুটো লম্বা অার চিকন।
_
এবার রফিকের ভরকে যাওয়ার পালা। তবু অনেক কষ্টে মনে জোর এনে তাকে জিজ্ঞেস করে, কে তুই? অার অামার কাছে কি চাস? তখন অশরীরীর উত্তর দেয়ার পালা।
(চলবে)…..?
গল্পের বিষয়:
ভৌতিক