অদ্ভুত

অদ্ভুত

কলেজ থেকে বেরিয়ে সোজা কোরিয়া সার্ভিস এর দিকে রওয়ানা দিলাম।আমাকে আবার কে কি দিলো।আর দিলে কোরিয়া করেই বা কেন দিবে।কোরিয়ারে ডুকে সোজা কাউন্টারের দিকে এগিয়ে গেলাম।
,
বলুন আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি?(কাউন্টারে থাকা লোকটি)
,
আমার নামে মনে হয় একটা জিনিস এসেছে।(আমি)
,
আপনার নাম? (কাউন্টারে থাকা লোকটি)
,
লিমন।(আমি)
,
দাড়ান দেখছি।(কাউন্টারে থাকা লোকটি)
,
আচ্ছা।(আমি)
,
লিস্ট খুজে আমার মোবাইলে কল দিয়ে কনফার্ম হয়ে নিল।
,
হুম স্যার এই নিন আপনার জিনিস।এখানে একটা সাইন করে দিন।(কাউন্টারে থাকা লোকটি)
,
আচ্ছা।(আমি)
,
সাইন টাইন করে বেরিয়ে এলাম কোরিয়া সার্ভিস থেকে।ভাবতে লাগলাম কে দিতে পারে নিশ্চই বন্ধুদের মধ্যে কেউ এটা দিয়েছে।ছোট খাটো একটা বাক্স। ভিতরে নিশ্চই মজার কিছু হবে।বাসায় ফিরে খুলবো ভাবলাম।বাসায় পৌছাতেই সিফাতের ফোন।
,
কিরে দোস্ত কোথায় তুই?(সিফাত)
,
এইতো বাসায় আসলাম মাত্র।(আমি)
,
হলে যাবি ছবি দেখতে?(সিফাত)
,
কখন?(আমি)
,
একটু পরে।আমার সাথে আমার রুমমেটের যাওয়ার কথা ছিলো এখন সে বাসায় চলে গেছে।আজ আর ফিরবে না একটা টিকিট এক্সট্রা আছে তাই ফোন দিলাম তোকে।আসতে পারবি?(সিফাত)
,
হুম অবশ্যই।(আমি)
,
বাক্সটা টেবিল এর উপর রেখে বেরিয়ে পড়লাম ভাবলাম ফিরে এসে দেখবো কি আছে।বেরিয়ে সিফাত এর সাথে সিনেমা দেখতে গেলাম।সিনেমা শেষ হওয়ার পর দুজন বের হলাম হল থেকে।
,
খুব ভালো ছিলো সিনেমাটা তাই না?(সিফাত)
,
হুম আচ্ছা তুই তাহলে মেসে যা আমি বাসায় যাই।(আমি)
,
আচ্ছা বাই।(সিফাত)
,
বাই।(আমি)
,
সিফাত কে বিদায় দিয়ে বাসায় ফিরে এলাম।বাসায় ফিরে প্রচন্ড টায়ার্ড লাগছিলো তাই না খেয়েই বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম।ঘুম যখন ভাঙলো তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে গেছে।বিকেলেও কিছু খাইনি এখন প্রচন্ড খিদে পেয়েছে।সোজা কিচেনে চলে গেলাম খাওয়া দাওয়া শেষ করে ফ্রেশ হয়ে রুমে ডুকলাম।মোবাইল হাতে নিতে যাবো তখনি টেবিলে রাখা বাক্সটার দিকে চোখ গেলো।এগিয়ে গেলাম বাক্সটার দিকে।হাতে নিয়ে উলটিয়ে পালটিয়ে দেখতে লাগলাম।বাইরেটা পেপার দিয়ে মোড়ানো ভিতরে কি আছে কে জানে।আস্তে আস্তে খুলতে লাগলাম বাক্সটা।প্রথম বাক্সের ভিতরে আরেকটা বাক্স পেলাম।সেটাও কাগজ দিয়ে মোড়ানো।সেটাও খুললাম সেটার ভিতরে আরেকটা বাক্স।মনে মনে হাসতে লাগলাম নিশ্চিত বন্ধু দের মধ্যে কেউ এই কাজটা করেছে না হলে এরকম কাগজ দিয়ে মোড়ানো থাকতো না।সব কাগজ ছিড়ে ফেললাম ভিতরে মাঝারি রকমের একটা কাঠের বাক্স।এইবার নিশ্চিত হলাম এটা বন্ধু দের কেউ দেয় নি।ওরা কেউ হলে ফানি কিছু দিতো এটা তো একটা কাঠের বাক্স।তবুও বলা যায় না হয়তো কাঠের বাক্সের ভিতরে কিছু রেখেছে।বাক্সের উপরে কিছু একটা লেখা।ছোট ছোট অক্ষর হওয়ায় বোঝা যাচ্ছে না তাছাড়া বাক্সটা অনেক পুরোনো।আমি আতশ কাচ নিয়ে আসলাম।আতশ কাচ দিয়ে দেখতে লাগলাম।এইবার লেখা গুলো বড় হয়েছে কিন্তু অস্পষ্ট।পড়তে লাগলাম লেখা আছে……..
(Some Time Mistike Your Own rick)
(Be Careful)
লেখা গুলোর আগা মাথা কিছুই বুঝতে পারলাম না।কি সব লেখা তাই এসব নিয়ে আর মাথা ঘামালাম না।বাক্সটা খুলবো কি খুলবো না।পরে ভাবলাম সকালে খুলে দেখবো কি আছে।তাই বাক্সটা আবার টেবিলের উপর রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম।ঘুম ভাঙলো আর সকালে খুব দেরিতে।উটে খাওয়া-দাওয়া করে ফ্রেশ হয়ে বাক্সটা নিয়ে বসলাম।বেশ মজবুত কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এটি।আর উপর বিভিন্ন কারুকাজে ভরপুর।বাইরেটা দেখতে খুব আকর্ষনিয়। মুগ্ধ হয়ে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলাম বাক্সটার দিকে।এখনো জানাই বাক্সের ভিতরে আমার জন্য কি অপেক্ষা করছে।আস্তে আস্তে বাক্সটায় হাত দিলাম কিন্তু বাক্সটা কোন ভাবেই খুলতে পারলাম না।অথচ রাতে তো বাক্সের ডাকনাটা হাত দিয়ে আস্তে আস্তে চাপ দিলেই খুলে যেত। আর এখন কি হলো? বুঝলাম বাক্সটা সাধারাণ বাক্স নয়।এটি সকালে খুলা যাবে না এখন যে অবস্তা।এটি খুলতে হলে রাতের অপেক্ষা করতে হবে।এটি খুলার উপযুক্ত সময় রাত।রাতের জন্য অধির অপেক্ষায় বসে আছি।এখন আর বসে থেকে লাভ নেই রাতে খুলতে হবে এটা।তাই বেরিয়ে পড়লাম।সন্ধ্যা হওয়ার পর পরই খুব তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরলাম।ফিরেই বাক্স নিয়ে বসে পড়লাম।আস্তে আস্তে হাত দিলাম ডাকনায় যত খুলছি তত বাক্স থেকে আলো বের হচ্ছে।বাক্স টা একেবারে খুলে ফেললাম ভিতরে একটা কাগজ রাখা।আশ্চর্য হলাম একটা কাগজ থেকে এরকম আলো বের হতে দেখে।এটা বন্ধুরা কেউ দেয় নি। কে দিল এটা আর কাগজ টাই বা কিসের।ভয়ে ভয়ে হাত দিলাম।হাত লাগতেই কাগজ থেকে আলো বের হওয়া বন্ধ হয়ে গেল।কাগজটা হাতে নিলা আস্তে আস্তে খুললাম।ভিতিরে লেখা আছে..
…..স্বাগতম আমাদের জগতে…..
কার জগত? কিসের জগত? আমাকেই বা কেন স্বাগতম জানাচ্ছে? আমি ভাবছি এই সব কথা অন্য দিকে আমার হাতের কাগজটা আস্তে আস্তে বদলে যাচ্ছে।আমার সে দিকে কোন খেয়াল নেই।ভাবছি কে দিতে পারে এটা।হাতের কাগজটা বিছানায় রেখে উটে গেলাম।জানালায় দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগলাম।হটাৎ পিছন থেকে একটা আওয়াজ শুনলাম।
,
তোমার সব প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে আছে।
,
পিছনে ফিরে কাউকেই দেখতে পেলাম না। প্রচুর ভয় পেয়ে গেলাম।ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
,
কে কে কথা বলে?(আমি)
,
এই টুকু তেই ভয় পেয়ে গেলে?।
,
কে তুমি? আমাকে ভয় দেখাচ্ছো কেন?(আমি)
,
আমি তো একটু আগে তোমার হাতে ছিলাম।
,
মানে?(আমি)
,
আমি সেই কাগজ থেকে বের হয়েছি।
,
কাগজ থেকে বের হয়েছ মানে?(আমি)
,
আমি কাগজের ভিতরে ছিলাম।
,
আমার ভয় ততক্ষনে অনেকটা কমে গেছে।আমি বললাম…
,
তোমার নাম কি?(আমি)
,
আমার নাম সাইম।(সাইম)
,
তুমি সামনে এসো।(আমি)
,
আমি অদৃশ্য।(সাইম)
,
মানে?(আমি)
,
হুম আমি অদৃশ্য।(সাইম)
,
ওয়াও অদৃশ্য থাকতে খুব ভালো লাগে?(আমি)
,
হুম তুমিও চাইলে অদৃশ্য হতে পারো।(সাইম)
,
কি? সত্যি?(আমি)
,
হুম সত্যি অদৃশ্য হতে চাও?(সাইম)
,
হুম অবশ্যই আমি ভাবতেও পারছিনা আমি অদৃশ্য হতে পারবো।(আমি)
,
অদৃশ্য হওয়ার কথা শুনে লোভ সামলাতে পারলাম না।আমি বুঝতেও পারলাম না সামনে আমার জন্য কি অপেক্ষা করছে।
,
এখনই হবে অদৃশ্য?(সাইম)
,
হুম এখনই।(আমি)
,
প্রস্তুত হও লিমন।(সাইম)
,
অদৃশ্য কেউ একজন আমার হাত ধরলো আমার হাতটা জ্বলে যাচ্ছে।চিৎকার দিয়ে উটলাম..
,
আমার লাগছে ছাড়।(আমি)
,
উহু তা হবেনা একটু সহ্য কর।(সাইম)
,
প্রচন্ড ব্যাথা লাগছে চিৎকার করছি তবু সাইম শুনছে না।প্রচন্ড যন্ত্রনায় জ্ঞান হারালাম।কতক্ষন অজ্ঞান ছিলান যে জানে।যখন জ্ঞান ফিরলো তখন আর কোন ব্যাথা যন্ত্রনা নেই।শরীর টা একেবারে হালকা হয়ে গেছে।আমি আমার রুমেই আছি কিন্তু সামনে কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে উলটো হয়ে।
,
কে তুমি এদিকে ঘুরো।(আমি)
,
ঘুরে দাড়াতেই আমি অবাক হয়ে গেলাম।আমার সামনে আমি দাঁড়িয়ে।
,
কে তুমি?(আমি)
,
আমি সাইম কিন্তু এখন থেকে আমি লিমন তুমি এখন থেকে অদৃশ্য হয়ে থাকবে অন্য জগতে।কেউ শুনবে না আর তোমার কথা।আর আমি লিমন হয়ে এখানেই চিরদিন থাকবো।(সাইম)
,
চিটার।(আমি)
,
হা হা হা বাই বাই।(সাইম)
,
আমি আর এখানে থাকতে পারছি না কোন এক অজানা শক্তি আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে অন্য জগতে যেখান থেকে আর কেউ ফিরে আসতে পারে না।আমি হারিয়ে যাচ্ছি অন্য জগতে অন্যদিকে সাইম আমার যায়গা দখল করে আজীবন লিমন হয়ে থাকবে।নতুন জগতে গিয়ে দেখলাম সেখান থেকে আবার একটা বাক্স পাঠানো হচ্ছে পৃথিবীতে যেটা খুজে নিবে তার নতুন শিকার।বাক্সটার নতুন শিকার আপনি নন তো পাঠক বন্ধু?
………………………………………….  সমাপ্ত …………………………………………

গল্পের বিষয়:
ভৌতিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত