লেখালেখি তো আমার ছোটবেলা থেকে অভ্যাস। তাই জয়েন করলাম গল্পের ঝুড়িতে।
 রাতের বেলা গল্প লিখব বলে কিবোর্ড চালানো শুরু করলাম।
 বাসায় আমি একাই ছিলাম। আম্মু, আব্বু আর বোন বাইরে গিয়েছিল।
 হঠাৎ দরজা নক হলো। দেখলাম আমার বান্ধবী মিথিলা। ক্লাস থ্রিতে থাকতে হঠাৎ স্কুলে আসা বন্ধ করেছিল। তখন তো আমরা ছোট ছিলাম। খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করিনি কখনো।
 মিথিলাকে দেখে আমি চমকেই উঠলাম। ধরে এনে সোফায় বসালাম। তারপর,
 “তুই কই ছিলি দোস্ত?”
 “ছিলাম তো। তোদের পাশেই।”
 “স্কুলে আসতি না যে…”
 “আসতাম, তোরা দেখতি না।”
 কথাবার্তা বেশি রহস্যময় মনে হলো। আমি প্রসঙ্গ ঘুরালাম।
 “বাবু(মিথিলার ভাই) কেমন আছে রে?”
 “আছে আছে। ভালোই।”
 আমি অস্বস্তির সাথে নড়েচড়ে বসলাম। মিথিলা এবার একটু সহজ হলো।
 “তুই এখনো লিখিস?”
 আমি একটু লজ্জ্বা লজ্জ্বা ভাব নিয়ে মাথা নাড়লাম। ছোটবেলা থেকে আমার লেখার অভ্যাসের কথা ও জানে। ওকেই আমার লেখা শুনাতাম শুধু।
 “কি লিখছিস এখন?”
 “এই তো। ভাবলাম হরর একটা গল্প সাজাবো। লাশ কাটা ঘর-টর নিয়ে। অবশ্য তুইও লিখিস নাকি?”
 “হ্যাঁ। লিখব না কেন? লিখি লিখি।”
 আবার সেই ঘোরের মধ্যে থাকা কথা, বুঝলাম।
 “দোস্ত, তোকে অনেক মিস করতাম। তুই কেন আসতি না, বল না?”
 মিথিলা হঠাৎ ছটফট করতে লাগল। দেখলাম আজান দিচ্ছে।
 “তুই একটু বস। আমি নামাজ পড়ে আসি।”
 মিথিলা কিছু না বলে আমার হাতটা ধরতে গেল। আবার ধরল না।
 আমি শান্তির সাথে নামাজ পড়তে পারলাম না। মন খচ খচ করছিল।
 নামাজ শেষে ড্রইং রুমে গিয়ে অবাক হলাম। মিথিলা নেই। দরজাও ভেতর দিয়ে বন্ধ।
 কিছুই বুঝলাম না। রাতে অশান্তিতে ছটফট করলাম।
 সকালে স্কুলে গিয়ে ক্লাসের একজনের কাছ থেকে জানতে পারলাম মিথিলার বাবা নাকি স্কুলে আসছে। আমি দ্রুত গেলাম।
 মিথিলার বাবা খুব কাঁদছিলেন। কারণ হলো ৪ বছর আগে এই দিনে মিথিলা, তার ভাই আর মা অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছে। আমি কিছু করলাম না। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললাম।
 বাসায় এসে ফোনটা ধরে দেখলাম আমার নোটসে এই গল্পটা লেখা আছে। আমার মনে হলো সব বুঝে গেছি।
  










