শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস: আলোর পথযাত্রীদের আলো ক্ষীণ হয়নি আজও

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস: আলোর পথযাত্রীদের আলো ক্ষীণ হয়নি আজও

একটি জাতির শিরদাঁড়া ভেঙে দেওয়ার জন্য সে জাতির শিক্ষিত সমাজ ধ্বংস করাই যথেষ্ট। জাতিটি ধুঁকে ধুঁকে সহসাই মৃত্যুপথে ধাবিত হবে। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের পরই আইয়ুব সরকার কিংবা পাক-শোষকবর্গ স্পষ্টই অনুধাবন করতে পেরেছিলেন; বাঙালিকে খুব বেশিদিন করায়ত্তে রেখে রক্ত শোষণ করা যাবে না। যতটুকু রক্ত পান করা হয়েছে সেটারও জবাব দিতে হতে পারে। এই ভাবনা রেখেই সত্তুর এর নির্বাচনের ক্ষমতা হস্তান্তর বিলম্ব ও বঙ্গবন্ধুর সাথে ইয়াহিয়ার জরুরি বৈঠকের ছলনায় পর্দার আড়ালে গণহত্যার ভয়ংকর ছক। একাত্তরের ২৫ শে মার্চের সেই আঘাত কোনো প্রকারে সহ্য করে বিজয়ের প্রায় সন্নিকটে এসে মেধাশূন্য করার প্রয়াস, আহ! কী বিভৎস। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব—এর বিপরীত দিকটি আয়নায় উলটো প্রতিচ্ছবি দেখা ছাড়াই বলা যায়। ১৪ ডিসেম্বরের সেই দিনটি পালিত হয় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে।

বুদ্ধিজীবী

বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান অনুযায়ী—সমাজ সংস্কৃত প্রভৃতি বিষয়ে সচেতন এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানে দক্ষ ও শিক্ষিত ব্যক্তি। ইংরেজিতে যা ইন্টেলেকচুয়াল এর সমার্থক। তাঁরা যেকোনো বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের সাথে যুক্ত থাকতে পারেন। এঁরা একটি জাতিকে তাঁদের জ্ঞান বা বুদ্ধি দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন। সেটা হতে পারে পেশাগত বা ব্যক্তিগত অনুকম্পায়।

১. একজন ব্যক্তি বিমূর্ত, চিন্তাধারা ও তাত্ত্বিক বিষয়ে জড়িত;

২. দর্শনতত্ত্ব, সাহিত্যিক সমালোচনা, সমাজতত্ত্ব, আইন, রাজনৈতিক বিশ্লেষণকারী, তাত্ত্বিক বিজ্ঞানী হিসেবে একজন ব্যক্তির পেশা একান্তই উৎপাদনমূখী ভাবনায় নিমজ্জিত হবে;

৩. উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক এবং বিশেষজ্ঞ শিল্পবোদ্ধার জ্ঞান যা তাকে জনসমর্থন আদায়ে সক্ষম।

রক্ত দেওয়া শুরু যেখান থেকে: ২৫ মার্চ থেকে ৪ঠা ডিসেম্বর

২৫ মার্চে (শেষ প্রহরে) বাঙালি জাতিকে সমূলে বিনাশ করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শুরু হয় ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায়। আরেক অধ্যায় বলছি এই কারণে, প্রথম অধ্যায়টি শুরু হয় সেই ‘৪৭-র দেশ ভাগের পরপরই। সোনার বাংলা শ্মশান করার প্রয়াসে কী না করেছে পশ্চিম পাকিস্তানের জানোয়ার ও এদেশীয় তাদের দালালেরা? নিরঙ্কুশ জয়ের প্রেক্ষিতে ক্ষমতা হস্তান্তরে অনীহা ও ইয়াহিয়া খানের চক্রান্তের ফল ‘অপারেশন সার্চলাইট। ইতিহাসের অন্যতম জানোয়ার মেজর টিক্কা খান বর্বর এই হত্যাযজ্ঞের মাঠপর্যায়ে মূল ভূমিকা পালন করেন; পরিকল্পনা সাজান রাও ফরমান আলি।

যেকোনো মূল্যে অপারেশন সফল হওয়া চাই মর্মে ঢাকাতে ১০০ শতাংশ সফলতা নিশ্চিতকল্পে সারাদেশে একযোগে অপারেশন সংঘটিত হয়। আকস্মিক এই হামলার ভয়াবহতা ত্বরান্বিত করতে বন্ধ করে দেওয়া হয় রেডিয়ো, টেলিভিশন সেন্টার এবং সকল প্রকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। পরিকল্পিত গণহত্যার বলি সাধারণ মানুষ-সহ সমগ্র দেশের শিক্ষিত সমাজ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করার পরই চূড়ান্ত যজ্ঞে ঘি ঢেলে দেয়। হামলার প্রধান তিনটি লক্ষ্য স্থান ছিল। প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকা। হয়েছেও তাই; এখানে আঘাতের প্রচণ্ডতা সবচেয়ে বেশি। জগন্নাথ হলের ক্যানটিনের কর্মী সুনীল কুমার দাসের বিবরণে তার কিছুটা আঁচ পাওয়া যায়। একটি জাতীয় দৈনিককে তিনি বলেন,

“সেদিন (জগন্নাথ হলের) শহিদ মিনারের পাশে কত লোকের যে লাশের সারি ছিল, তার কোনো হিসাব নেই। হল থেকে ছাত্রদের, হলের শিক্ষক-কর্মচারীদের হত্যা করে লাশ এনে কবর দেওয়া হয়। আমি-সহ চারজন কর্মচারী একটা ড্রেনে লুকিয়ে ছিলাম। আমরা পরদিন সকালে পালিয়ে যেতে সক্ষম হই।”

সারাদেশেই চলে এই ভয়াবহ হামলা, তবে ঢাকা আক্রান্ত হয় সবচেয়ে বেশি।

মেজর টিক্কার জনসংযোগ কর্মকর্তা মেজর সিদ্দিক সালিক ‘উইটনেস টু স্যারেন্ডার বইয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেদিনে হামলার লোমহর্ষক বর্ণনা পাওয়া যায়,

“আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গণকবরগুলো জরিপ করছিলাম। সেখানে আমি তিনটি ঢিবি দেখতে পাই, যার প্রতিটি ৩ থেকে ১৫ মিটার ডায়ামিটারের ছিল। সেগুলো নতুন মাটিতে ভরাট করা। কিন্তু কোনো অফিসার মৃতের প্রকৃত সংখ্যা জানাতে রাজি ছিল না। আমি দালানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম, বিশেষত ইকবাল ও জগন্নাথ হলের, যেগুলো আমার মনে হলো, অ্যাকশনের মাধ্যমে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে”।

যখন মেজর নিজে দুটো হল গুঁড়িয়ে দেওয়ার বর্ণনা স্বীকার করেছেন সেখানে অন্য যেকোনো উক্তি ম্লান হয়ে যায়।

‘রোড টু বাংলাদেশ: উইটনেস টু স্যারেন্ডার’ বইতে বলা হয়েছে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কথা

মূল লক্ষস্থলের বাকি দুটি ইস্ট পাকিস্তান রাইফেল সদর এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইন। এদেশীয় সামরিক শক্তিকে ভেঙে দিতে বাকি দুটো স্থানেও হামলায় সেই রাতের ভয়াবহতার সীমা অতিক্রম করে। ঘুমন্ত, নিরস্ত্র মানুষকে হত্যায় শুরু হওয়া সে অধ্যায় পূর্ণতা পায় (২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরেই) বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ভাষণে। শুরু হলো রক্তের দামে মাতৃভাষা ক্রয়ের পর মাতৃভূমি ক্রয় করার আরেক মহা-সংগ্রাম।

১৪ই ডিসেম্বর ১৯৭১ : এবার লক্ষ্য কেবল মেধাশূন্য করা

যুদ্ধে বিজয়ে পাল তখন আমাদের দিকে বইছে। ৩০ লাখ শহিদের রক্তের বন্যায় ভেসে যাওয়া দেশকে যাঁরা পরম মমতায় খুঁটিতে বেঁধে রাখতে পারতেন সেসব মেধাবী ব্যক্তিকে কীভাবে নাশ করা যায় সেই পরিকল্পনা শুরু হলো। পরাজয় তখন সুনিশ্চিত জেনে বাঙালি সত্ত্বার মাথায় গুলি হানে জানোয়ারের দল। যুক্তিহীন, মনগড়া কথায় ইসলাম ধর্ম ব্যবহার করে কেবল কি অন্য ধর্মের মানুষ! না, মেরেছে সামনে যাঁকে পেয়েছে তাঁকেই। ১৪ ডিসেম্বর বিজয়ের মাত্র দুইদিন আগে মূল হত্যাকাণ্ডে পরিচালিত হলেও ৪ঠা ডিসেম্বর থেকে প্রস্তুতি চলতে থাকে। ঐদিন থেকে আবারও নতুন করে কারফিউ দিয়ে মানুষকে বন্দি করার উপায় খুঁজে। নিরবে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিকে মিথ্যা কথায় তা না হলে জোর করে কিংবা সেখানেই হত্যা করেছে। বাধাদানকারী পুত্র বা কন্যাকেও সাথে নিয়ে একসাথে নির্যাতনের পর গুলি করে মেরেছে। কাউকে রায়েরবাজার বা মিরপুরে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়। সেসব স্থানে ছিল এদের তৈরি টর্চার সেল বা নির্যাতন কক্ষ। মেধা নির্মূলের এই অভিযানের পরিকল্পনায় সেই রাও ফরমান আলিই।

এত সুনিপুণ হত্যাকাণ্ড আদৌও সম্ভব হতো না যদি জামাতে ইসলামের রাজাকার, আলশামস, আলবদরের দল সাহায্য না করত। শয়তানের অনুসারী এসব কুলাঙ্গারদের অপব্যাখ্যার প্রমাণ পাওয়া যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অধ্যাপক এম. এন. মুনিরুজ্জামানকে জানলে। তিনি ও তাঁর স্ত্রী বেগম মুনিরুজ্জামান ছিলেন ধার্মিক। মুনিরুজ্জামানকে কোরআন[¹] অধ্যয়ন অবস্থা থেকে বড়ো সন্তান-সহ হত্যা করে তাঁদের দেহ টেনে নিয়ে জগন্নাথ হল প্রাঙ্গনে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকবৃন্দের জন্য নির্ধারিত সেই বাড়িতেই ছিলেন ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা।

গুলি শরীরে গ্রহণ করলেও প্রাণে বেঁচে যান। তাঁর স্ত্রী বাসন্তী গুহঠাকুরতার ভাষ্যে বেগম মুনিরুজ্জামান অসীম তেজস্বী শক্ত মস্তিষ্কের মানুষ। জ্যেষ্ঠ পুত্র ও স্বামীকে হারিয়েও কী এক অসীম মনোবলে ড. গুহঠাকুরতাকে বাসার নিচে অচেতন পড়ে থাকতে দেখে বাঁচাতে এগিয়ে গেছেন বাসন্তীর কাছে। অথচ কিছুক্ষণ আগে ছেলে-স্বামীকে নিয়ে যাওয়ার পূর্বে মাটিতে আহত ছেলেটি পানি চাইছিল, নিজের স্তনের দুগ্ধে ছোটোবেলা বাঁচাতে পারলেও অন্তিমযাত্রায় এক-চামচ পানি মুখে দিতে পারলেন না; তার আগেই প্রাণটি চলে যায়। আনোয়ার পাশার লেখনিতে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম উপন্যাস ‘রাইফেল রোটি আওরাত-র লাইনগুলো চোখ ভেজায়, গায়ে শিহরণ জাগায়, মনে ক্ষোভ সৃষ্টি করে।

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ব্যক্তিত্ব শহিদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীকে নিয়ে গুগল ডুডল দ্বারা স্মরণ।

এই পশুরা কাকে বাদ রেখেছে সেদিন? শিক্ষাখাত ভেঙে দিতে প্রধানত শিক্ষাবিদরা লক্ষ্য ছিলেন। দর্শনশাস্ত্রের ড. গোবিন্দচন্দ্র দেব, বাংলা সাহিত্যের মুনীর চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ড. হাবিবুর রহমান-সহ সারাদেশে কেবল ৯৯১ জন শিক্ষাবিদকে হত্যা করা হয়। যেখানে মোট সংখ্যা প্রায় ১,১১১ জন। এছাড়া চিকিৎসক মোহাম্মদ ফজলে রাব্বি, আব্দুল আলীম চৌধুরী, শামসুদ্দীন আহমেদ, আজহারুল হক, ওবায়েদ হক প্রমুখ। সাংবাদিকরাও পরিকল্পনায় ছিলেন অন্যতম। শহীদুল্লাহ কায়সার, সেলিনা পারভীন; গীতিকার ও সুরকার আলতাফ মাহমুদ, রাজনীতিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। যুদ্ধের পর স্বাধীন দেশ থেকে নিখোঁজ হন চলচ্চিত্রকার জহির রায়হান।

শহিদ বুদ্ধিজীবী ধীরেন্দ্রনাথ দত্তই প্রথম পাকিস্তান সংসদে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি করেছিলেন।

নাম লিখে শেষ করা যাবে না। প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই অধ্যাপক মুনিরুজ্জামানের মতোই অবস্থা হয়েছিল কিংবা আরও কঠিন আরও খারাপ। সেইসব ঘটনা অগণিত নিবন্ধেও হবে না।

পরিসংখ্যানে শহিদ বুদ্ধিজীবী

২৫শে মার্চ থেকে ১৪ই ডিসেম্বর ১৯৭১; পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছেন হাজারের বেশি বুদ্ধিজীবী।

জেলাওয়ারি শহিদ বুদ্ধিজীবী।

বাংলাপিডিয়া তাদের পরিসংখ্যানে বলছে,

শিক্ষাবিদ — ৯৯১ জন

সাংবাদিক — ১৩ জন

আইনজীবী — ৪২ জন

চিকিৎসক —৪৯ জন

প্রকৌশলী — ৫ জন

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব — ৯ জন

অন্যান্য — ২ জন

পাওয়া যায়নি অনেকের মৃতদেহটিও

কেন তারা এত জ্ঞান রেখেছিলেন? সেটাই কি অপরাধ ছিল? যার জন্য মাতৃভূমিতে শেষ চিহ্ন লাশটিও টিও খুঁজে যেন না পাওয়া যায় তাই অজ্ঞাত স্থানে গণকবর (না-কি মাটিচাপা) দেওয়া হয়। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে সেসব স্থানের নিদর্শন বধ্যভূমি আবিষ্কারে স্পষ্ট হয়। ১৯৯৪ সালের ১৪ই ডিসেম্বর থেকে বধ্যভূমি আবিষ্কারের পরিকল্পনা হাতে নেয় ওয়ারক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি। স্থানীয়দের ভাষ্যে কিংবা পত্রপত্রিকা ঘেঁটে প্রায় ৯৪২টি বধ্যভূমিতে আমাদের মেধাবীদের কেবল কঙ্কালগুলো পাওয়া যায়। ১৯৭২ সালের ৩০শে জানুয়ারি অর্থাৎ স্বাধীনতার পর নিখোঁজ হন জহির রায়হান। এর আগে তিনি দায়িত্বে ছিলেন ‘বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটি-তে। তিনি বলেছিলেন,

“এরা (পাকিস্তানিরা) নির্ভুলভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনষ্ক বুদ্ধিজীবীদেরকে বাছাই করে আঘাত হেনেছে”

আজকের ১৪ই ডিসেম্বর : পালিত হচ্ছে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস

১৪ ডিসেম্বর বেশি সংখ্যক বুদ্ধিজীবী হত্যা করে দেয়ালের শেষ পেরেকটি গেঁথে দেয় পাক হানাদার বাহিনী। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ ১৪ই ডিসেম্বরকে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। রাও ফরমান আলী ২০,০০০ বুদ্ধিজীবী তথা শিক্ষিত সমাজের মানুষকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিলেন। বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী এই তথ্য উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ এখনও বাংলার অনেক স্থানে গণকবর ভেসে ওঠে, পাওয়া যায় যুদ্ধের সময় কার ভয়াবহতার চিহ্ন।

রায়েরবাজার বধ্যভূমি

স্মৃতিতে তাঁরা

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ঢাকার মিরপুরে প্রথম শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। স্মৃতিসৌধটির স্থপতি মোস্তফা হালি কুদ্দুস। ১৯৯১ সালে ঢাকার রায়েরবাজারে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নামে আরেকটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ শুরু হয় যা ১৯৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর নকশা করেন জামী-আল সাফী ও ফরিদউদ্দিন আহমেদ।

পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সাধ পূরণ হয়নি। সেই মেধাবী সন্তানদের আত্মত্যাগের মনোবল ও সাহসে আজও কোনো ব্যক্তির কাছে দেশের কাছে নত হয়নি বাংলাদেশ, নত হয়নি বাঙালি। তাঁদের (বুদ্ধিজীবী) দেখানো পথেই হাঁটছে স্বদেশ। সেই পাক কুলাঙ্গারদের প্রতি আমাদের দেওয়ার আছে ঘৃণা, ধিক্কার ও ইতিহাসের জবাব। এরা মানুষ ছিল কি? মানুষের চামড়া গায়ে সবাই কি মানুষ?

গল্পের বিষয়:
ইতিহাস
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত