সব ফুটবল টুর্নামেন্টেই কিছু সাফল্য প্রত্যাশী দল থাকে, আমরা ধরেই রাখি টুর্নামেন্ট এদের কেউই জিতবে। কিন্তু মাঝেমধ্যে সবার প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে এমন কিছু দল সফল হয়ে যায়,যাদের কেউ হিসাবের মধ্যে ধরে নি। এমন দলই হলো আন্ডারডগ।জেনে নিন ইতিহাসের সেরা কয়েকটি আন্ডারডগ দলের সাফল্যের কাহিনী।
ভিএফবি স্টুটগার্ট– বুন্দেসলীগা (২০০৬/০৭)
লীগের সবচেয়ে কমবয়সী দল, সাথে সামান্য আশা নিয়ে ভিএফবি স্টাটগার্ট কাঁপিয়ে দিয়েছিল ফুটবল দুনিয়া। ফুটবল পন্ডিত এবং দর্শকদের স্তব্ধ করে দিয়ে ২০০৬/০৭ এর বুন্দেসলীগা ট্রফি জিতে নিয়েছিল তারা।
দলে ছিল নিজদের শহরে জন্ম নেয়া সামি খেদিরা এবং মারিও গোমেজদের মত তরুণ খেলোয়াড়েরা। দলের ম্যানেজার ছিলেন আরমিন ভেহ। লীগে তাদের টপ স্কোরার ছিলেন মারিও গোমেজ।লীগ জয়ের জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। নিজেদের শেষ ম্যাচে এনার্জি কোটবাসকে ২-১ গোলে হারিয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে জিতে নেয় বুন্দেওলীগা ট্রফি।
মপেলিয়ের– লীগ ১ (২০১১/১২)
সেই মৌসুমে অলিভিয়ের জিরু গোল করেছিলেন ২১ টি।রেনে জিনার্ডের সেই মপেলিয়ের তিন পয়েন্টে এগিয়ে থেকে জিতেছিল লীগ ১। সেই লীগ জয় ছিল ক্লাবের ইতিহাসে প্রথম লীগ জেতা। এর আগে ১৯৯০ এবং ১৯২৯ এ ফ্রেঞ্চ লীগ জিতেছিল ক্লাবটি।
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ– লা লীগা (২০১৩/১৪)
রোজিব্লাঙ্কোস রা লালীগার একমাত্র দল যারা গত দশকে রিয়াল মাদ্রিদ-বার্সেলোনার একচেটিয়া লীগ জয়ে বাগড়া দিয়েছিল, তাও নিজেদের স্বল্প বাজেট দিয়ে দল গঠন করে।
২০১৩/১৪ মৌসুমে ডিয়েগো কস্তার বিধ্বংসী রূপ দেখা গিয়েছিল।দলের হয়ে করেছিলেন ২৭ গোল যার বেশিরভাগই এসেছিল মিডফিল্ডার কোকের পা থেকে, সেই মৌসুমে কোকে এসিস্ট করেছিলেন ১৩ টি।১৯৯৬ সালের পর প্রথমবার লীগ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদের এই রাইভাল দল।লীগে নিজেদের শেষ ম্যাচে বার্সার সাথে ১-১ গোলে ড্র করে লীগ জিতে নেয় ডিয়েগো সিমিওনের দল।
গ্রীস– ইউরো (২০০৪)
এবার আসি ইন্টারন্যাশনাল টুর্নামেন্টে। ২০০৪ সালে গ্রিসের ইউরো জয় ছিল সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত ঘটনাগুলোর একটি। টুর্নামেন্টের আয়োজক দল পর্তুগালকে দুইবার হারায় গ্রীসের দলটি।একবার গ্রুপ স্টেজে, একবার ফাইনালে। ওই টুর্নামেন্টএ গ্রীস মাত্র চতুর্থবারের মতো খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল। এর আগে কখনো কোয়ার্টার ফাইনালের গন্ডি না পেরোতে পারা গ্রীস ফাইনালে পর্তুগালকে হারিয়ে সেবার জিতে নেয় ইউরো।
লেস্টার সিটি – প্রিমিয়ার লীগ (২০১৫/১৬)
মাত্রই আগের মৌসুমে কোনোক্রমে রেলিগেশন এড়িয়েছিল দলটি, সেই মৌসুমে দলের কোচ হয়ে আসেন ক্লদিও রানিয়েরি। তাকে আনার উদ্দেশ্য ছিল তিনি যেন এই মৌসুমেও দলকে রেলিগেশন থেকে বাঁচান।
ইতালিয়ান এই কোচের ম্যানেজিং এর আন্ডারে দুর্দান্ত খেলা দেখায় জেমি ভার্ডি,রিয়াদ মাহরেজ এবং এন গোলো কান্তের দল। তাদের লীগ জেতার বিপক্ষে বাজি ধরা হয়েছিল ৫০০০ বনাম ১। সেই বাজিকে উড়িয়ে দিয়ে পুরো মৌসুম দাপটের সাথে খেলে দুই ম্যাচ হাতে রেখে লীগ জিতে নেয় দ্য ফক্সেস খ্যাত এই দলটি।