পৃথিবীর বুকে এমন মানুষ খুবই কম আছে যিনি টাইটানিক নামক বিশাল জাহাজের সাথে পরিচিত নন। প্রায় ১০৮ বছর আগে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান জাহাজ টাইটানিক সমুদ্রে নেমেছিলো এবং হাজার হাজার মানুষ তাতে উঠেছিলো ৷ বিভিন্ন দেশ থেকে আনুমানিক ২,২২৩ জন যাত্রী সংগ্রহ করে নিয়ে আটলান্টিক সমুদ্রের অগাধ জলে যাত্রা শুরু করেছিলো টাইটানিক। হঠাৎ একদিন গভীর রাতে সেই দৈত্যাকার জাহাজ হিমশৈলের সাথে ধাক্কা খেলো, তারপর তলিয়ে গেল অকূল সমুদ্রে ৷ প্রাণ হারালো ১,৫০০ জনের বেশি মানুষ।
কিন্তু সত্যিই কি সেদিন টাইটানিক ডুবেছিলো? নাকি টাইটানিকের মতো হুবহু দেখতে অলিম্পিক জাহাজ ডুবেছিলো? এটি নিয়ে এক সময় অনেক তর্ক-বিতর্ক হয়েছিলো। চলুন তাহলে কিছুটা জেনে নেওয়া যাক, কেমন ছিলো তখনকার তর্ক-বিতর্ক!
রবিন গার্ডনার এর মতে, ১৫ই এপ্রিল ১৯১২ সালে যে জাহাজটি ডুবেছিল সেটি ছিল “অলিম্পিক” নামের আরেকটি জাহাজ যেটি দেখতে হুবহু টাইটানিকের মতো। কি বিশ্বাস করতে পারছেন না,তাইতো? না পারারই কথা। চলুন তাহলে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
১৯০৭ সালের ৬০ হাজার টন ওজনের দৈত্যাকার জাহাজ তৈরির কাজ শুরু করেছিল হল্যাণ্ডের বিখ্যাত জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘হোয়াইট স্টার লাইন’। দীর্ঘ ৫ বছর পর জাহাজটির নির্মানকাজ শেষ হয় ১৯১২ সালে। জাহাজটির দৈর্ঘ্য ছিলো প্রায় ২৭৫ মিটার যেটি দেখতে প্রায় ছোট-খাটো একটি শহরের মতো মনে হত। সেই সময় মানুষ কল্পনাও করতে পারেনি যে এত বড় জাহাজ কেউ তৈরি করতে পারে। এ কারণে কৌতুহলী মানুষের দৃষ্টি সবসময় টাইটানিককে ঘিরেই ছিল।
এই টাইটানিক যখন বানানো হয়েছিল তখন এর ডিজাইনার ‘থমাস এন্ড্রিউ’ দাবি করেছিলেন এই টাইটানিক কোনো দিন ডুবানো সম্ভব না। থমাস এন্ড্রিউ’র দাবি সত্যিও হয়েছিল। তৎকালীন সময়ে এটিই ছিলো মনুষ্যনির্মিত সবচেয়ে বড় জাহাজ। যেটি ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল লন্ডন থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে এবং যাত্রার চার দিনের মাথায় ১৪ এপ্রিল মধ্য রাতে সাগরের হিমশৈলির সাথে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়।
বিগত শতাব্দীর অন্যতম আলোচিত বিষয় টাইটানিক ডুবে যাওয়া কি সত্যিই কোনো দুর্ঘটনা! নাকি পরিকল্পিতভাবে কোনো অপরাধ, তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে প্রথম থেকেই। টাইটানিকের মালিকানা প্রতিষ্ঠান হোয়াইট স্টার লাইন তাদের পুরনো জাহাজের জন্য বীমা প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতে বিগত শতাব্দীর সবচেয়ে বড় ধাপ্পাবাজির আশ্রয় নেয়। টাইটানিকের মালিকানা প্রতিষ্ঠান হোয়াইট স্টার লাইনের ছিল একই রকম দেখতে দুটি জাহাজ। অলিম্পিক এবং টাইটানিক। তারা টাইটানিকের নাম করে পুরনো ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজ অলিম্পিককে আটলান্টিক সাগরে ইচ্ছাকৃতভাবে ডুবিয়ে দিতে চেয়েছিল কিন্তু পরে হিমশৈলির সাথে ধাক্কা খেয়ে অলিম্পিক ডুবে যায়। আর তাই টাইটানিক জাহাজ কখনোই ডুবেনি।
তাহলে কেন, কীভাবে ডুবেছিল অলিম্পিক? এতবড় হাত ছাফাই তারা কীভাবে করেছিল জানেন কি?
টাইটানিকের মালিকানা প্রতিষ্ঠান হোয়াইট স্টার লাইন ১৯০৭ সালে তিনটি বিলাসবহুল জাহাজ নির্মাণের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে নির্মাণ করা হয় অলিম্পিক। তারপর টাইটানিক এবং সব শেষে ব্রিটানিক। ১৯১১ সালের ১৪ জুন অলিম্পিক তার প্রথম যাত্রা শুরু করে। একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর অলিম্পিক তার পঞ্চম যাত্রায় ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ Hawke এর সঙ্গে ধাক্কা লেগে অলিম্পিকের নিচের দিকে দুটি বিশাল ছিদ্র হয়ে যায়। তখন হোয়াইট স্টার লাইন জাহাজ মেরামতের জন্য বীমা কোম্পানির কাছে বীমার টাকা দাবি করে।
কিন্তু বীমা কোম্পানি তাদের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায় কারণ বিট্রেনের আদলত থেকে রায় দেওয়া হয়, ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে অলিম্পিকের অসতর্কতার কারণে ধাক্কা লেগেছিলো। এক্ষেত্রে সব দোষ ছিলো অলিম্পিকের। তাই আদালতের এই রায়ের ভিত্তিতে বীমা কোম্পানি অলিম্পিককে বীমার অযোগ্য ঘোষণা করে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
তাই হোয়াইট স্টার লাইন কোম্পানির মালিক জেপি মরগান ও ব্রুজ ইজমি বীমার টাকা আদায়ের জন্য পরিকল্পনা শুরু করে। তারা দুজনেই ছিলেন কঠোর ও শোষক টাইপের ব্যবসায়ী। যখন অলিম্পিক জাহাজ ব্রিটিশ জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা খায় সেই সময় তাদের টাইটানিক জাহাজের নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে ছিলো। যেহেতু তাদেরকে টাইটানিক জাহাজ নির্মাণের জন্য প্রচুর বিনিয়োগ করতে হয়েছিলো তাই তাদের কাছে এই মুহূর্তে পর্যাপ্ত টাকা ছিলো না। এমতাবস্থায় বীমা কোম্পানি তাদের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা বীমা কোম্পানির কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য বিভিন্ন ফন্দি খুঁজতে থাকে।
তখনই তারা চিন্তা করেন, যদি অলিম্পিক জাহাজের নাম বদলে টাইটানিক রাখা হয় আর টাইটানিক নামধারী পুরনো জাহাজটি ডুবিয়ে দেয়া হয়, তাহলেই তারা বীমার পুরো টাকাটা পেয়ে যাবেন। দুই ধুর্ত ব্যবসায়ী এই সুযোগটির পুরোপুরি কাজে লাগান। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত অলিম্পিককে চলার উপযোগী করতে একে পূর্ণাঙ্গ মেরামতের জন্য বেলফাস্টে নিয়ে আসা হয়। তখন বেলফাস্টের টাইটানিকের নির্মাণ কাজও প্রায় শেষ। টাইটানিক আর অলিম্পিক ভেতর বাহির সবদিক থেকে দেখতে একদম হুবহু। পাশাপাশি রাখা অবস্থায় সাধারণ লোকের পক্ষে কিছুতেই বলা সম্ভব না কোনটা অলিম্পিক আর কোনটা টাইটানিক।
বামে অলিম্পিক ডানে টাইটানিক
১৯১২ সালের মার্চের প্রথম সপ্তাহে টাইটানিক ও অলিম্পিক শেষবারের মতো পাশাপাশি রাখা হয়। আর সেই সুযোগেই পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ধাপ্পাবাজির কাজটি করা হয়। আয়তনে প্রায় তিনটি ফুটবল মাঠের চেয়ে বড় দু’টি জাহাজকে বদলে ফেলা হয় মাত্র এক রাতের ব্যবধানে। হোয়াইট স্টার লাইন দাবি করে ১৯১২ সালের মার্চের ৭ তারিখে অলিম্পিক মেরামতের কাজ শেষ করে বেলফাস্ট ত্যাগ করে। কিন্তু এটি মূলত নতুন জাহাজ টাইটানিক। পুরনো জাহাজ অলিম্পিকের নাম ধারণ করে বন্দর থেকে বেরিয়ে আসে। তার ঠিক ৩ সপ্তাহ পরে পুরনো জাহাজ অলিম্পিক নতুন টাইটানিক নাম ধারণ করে এর প্রথম যাত্রার জন্য প্রস্তুতি নেয়।
এখন থেকে বর্ণনার জন্য যতবার টাইটানিকের কথা বলা হবে ততোবারই ধরে নিতে হবে সেটি মূলত পুরনো জাহাজ অলিম্পিক।
টাইটানিকের বেলফাস্ট থেকে সাউথ্যাম্পটন বন্দরে নিয়ে আসা হয় এবং নিউইয়র্কের প্রথম যাত্রার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তখন অনেক কর্মী কাজ থেকে ইস্তফা দেয়। আর তারা জানায় এখন থেকে তারা আর টাইটানিকে কাজ করবে না। তখন ব্রিটেনে কয়লা ধর্মঘট চলছিলো। ধর্মঘটের কারণে হাজার হাজার নাবিকেরা তখন কর্মহীন ছিল। সেই আকালের সময়ও কেন তারা চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলো? কারণ তারা জানতে পেরেছিল আর কয়েক দিনের মধ্যেই মর্গান ও ব্রুজের নির্দেশে জাহাজটিকে ডুবিয়ে দেয়া হবে।
আরো সন্দেহের বিষয় জাহাজের মালিক মর্গান নিজেই জনসম্মুখে ঘোষণা করেছিল টাইটানিকের প্রথম যাত্রায় সে অবশ্যই সফর করবে। কিন্তু পরে তিনি আর সফর করেন নি। বরং তিনি সহ আরো প্রথম শ্রেণীর ৫৫ জন ভিআইপি পারসন তাদের যাত্রা বাতিল করে। এবং পরবর্তীতে জাহাজের তিন ভাগের মাত্র দুই ভাগ যাত্রী নিয়ে টাইটানিক সাউথ্যাম্পটন বন্দর থেকে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। যে জাহাজে প্রথম যাত্রায় ভ্রমণ করতে পারাটা ছিল উচ্চ আভিজাত্যের বিষয়। সেখানে হঠাৎ করে কী এমন ঘটলো যে যাত্রীরা তাদের যাত্রা বাতিল করলেন?
তবে মর্গান ও ব্রুজ একটু চিন্তার মধ্যে ছিল কারণ মধ্য সাগরে জাহাজ ডুবানোর পর এতগুলো যাত্রীর কি হবে! তাই তারা একটি উদ্ধারকারী জাহাজ তৈরি রাখার পরিকল্পনা করে। তাদের আরো একটি পণ্যবাহী জাহাজ হলো ক্যালিফোর্নিয়ান। যেটি কয়লা ধর্মঘটের কারণে ব্রিটেনের লন্ডন বন্দরে আটকে ছিল। এরপর হঠাৎ করে রহস্যজনকভাবে ক্যালিফোর্নিয়ান কয়লা ছাড়াই বন্দর ত্যাগ করে আমেরিকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। সেই মুহূর্তে ক্যালিফোর্নিয়ায় যে পরিমাণ কয়লা ছিল তা দিয়ে কিছুতেই আমেরিকায় পৌঁছানো সম্ভব ছিল না। তাছাড়া বন্দর ছাড়ার মুহূর্তে জাহাজটিতে কোনো মালামাল বা যাত্রী কোনো কিছুই ছিল না। পুরোপুরি খালি জাহাজটিতে তখন ছিল শুধুমাত্র তিন হাজার কম্বল ও শীতবস্ত্র। টাইটানিক ডুবে গেলে একটি উদ্ধারকারী জাহাজে যা থাকা দরকার এবং যে পরিমাণ দরকার ঠিক তাই। ক্যালিফোর্নিয়ান তার পুর্ণ গতিতে আটলান্টিকের দিকে ছুটতে থাকে। হঠাৎ করেই ১৪ এপ্রিল মাঝ সাগরে গিয়ে ক্যাপ্টেনের নির্দেশে জাহাজের ইঞ্জিন বন্ধ করে দেয়া হয়।
টাইটানিক যাত্রা শুরু করার পর একই পথ দিয়ে যাওয়া পূর্ববর্তী একাধিক জাহাজ টাইটানিক এর সামনে থাকা হিমশৈলের খবর পাঠিয়েছে। তবে টাইটানিকের গতি তাতে একটুও পরিবর্তন হয়নি। এমনকি হিমশৈলের সামনে পড়লে রাতের বেলায় যেকোনো জাহাজের পর্যবেক্ষণ ডেকে তা সহজেই দেখা যায়। অনেকে মনে করে টাইটানিক ইচ্ছাকৃত ভাবেই হিমশৈলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। পরবর্তীতে দুর্ঘটনার অনুসন্ধানের সময় জাহাজের সেকেন্ড অফিসার বলেন, সে রাতে ডিউটি শেষ করে যাবার সময় তিনি প্রায় দেড় থেকে দুই মাইল দূরে হিমশৈলটি দেখতে পান। তিনি মনে করেন জাহাজটি ঘুরিয়ে সংঘর্ষ এড়ানোর মতো যথেষ্ট সময় ছিল। তাই তিনি বিষয়টি কন্ট্রোল রুমকে জানানোর প্রয়োজন মনে করেননি। ১৪ এপ্রিল রাত ১১ টা ৪৫ মিনিটে টাইটানিক ধাক্কা খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টাইটানিকের পাঁচটি কম্পার্টমেন্ট একেবারে ভেঙে যায়।
হোয়াইট স্টার লাইনের পরিকল্পনা মতো টাইটানিকের ক্যাপ্টেন দুর্ঘটনার নাটক সাজাতে গিয়ে সত্যি সত্যি এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়। পরিকল্পিত এ দুর্ঘটনায় ক্যাপ্টেন একেবারে হতবুদ্ধি হয়ে পড়ে। সাধারণত এধরণের আপদকালীন পরিস্থিতিতে একটি জাহাজের যা যা করণীয় টাইটানিক তার কোনোটিই গ্রহণ করেনি। হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার পর ক্যাপ্টেন জাহাজের ইঞ্জিন ঘুরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়। যাতে করে হিমশৈলের সঙ্গে জাহাজের আরো বেশি করে ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
আলামত দেখেই মনে হয় তারা চাইছিলো জাহাজ ডুবে যাক। জাহাজটাকে বাঁচানোর কোনো চেষ্টাই তখন তারা কেউ করেনি। হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লাগার দীর্ঘ ৩৫ মিনিট পর টাইটানিক থেকে উদ্ধারের জন্য রেডিও বার্তা পাঠায়। অথচ একটি জাহাজ ডুবে যাওয়ার জন্য আধাঘন্টা সময় যথেষ্ট। এছাড়া টাইটানিক ডুবতে শুরু করার এক ঘন্টা ২৫ মিনিট পর লাইফবোর্ড জাহাজ থেকে নামানো হয়। এমনিতেই জাহাজে থাকা লাইফবোর্ডের ব্যবস্থা ছিল মাত্র অর্ধেক লোকের জন্য। তারপরও যে কয়েকটি লাইফবোর্ড ছাড়া হয়েছে তার অধিকাংশই পুরোপুরি ভর্তি না করেই ছেড়ে দেয়া হয়। এর কারন হল টাইটানিকের ক্যাপ্টেন উদ্ধারের জন্য ক্যালিফোর্নিয়ানের অপেক্ষা করছিল। কিন্তু ক্যালিফোর্নিয়ান টাইটানিকের আশেপাশে থাকলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে একজন যাত্রীর জীবন রক্ষা করতে পারেনি।
রাত ২টার মধ্যে দৈত্যের মতো জাহাজটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে সমুদ্রের গর্ভে তলিয়ে যায়। সেই সঙ্গে ১৫০০ জনের বেশি ডুবে যায় সাগরের মাইনাস ২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বরফ-শীতল পানিতে। পরদিন সকালে লাইফবোর্ডে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। টাইটানিকের বেঁচে যাওয়া নাবিকরা দুর্ঘটনার একমাস পর ভয়ংকর স্মৃতি নিয়ে ইংল্যান্ডে ফিরে আসে। এ সময় তাদের স্বজনদের সঙ্গে প্রথমেই দেখা করতে দেয়া হয়নি। প্রায় ২৪ ঘন্টা এক প্রকার আটকে রাখা হয় তাদেরকে। সে সময় হোয়াইট স্টার লাইনের প্রভাবশালী কর্মকর্তারা জীবিত ফিরে আসা কর্মীদের হুমকি দেয়। বলা হয়, তারা টাইটানিক সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করলে তাদের পরিণতিও হবে জাহাজের মতোই।
তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারও বিষয়টি সঠিকভাবে ইনভেস্টিগেশন না করে এক প্রকার ধামাচাপা দিয়ে দেয়। আর এভাবেই টাইটানিক নাম ধারণ করে অলিম্পিক জাহাজটি সমুদ্রের গর্ভে আজও লুকিয়ে আছে ১৫১৭ জন যাত্রীর মৃত্যুর সাক্ষী হয়ে। আর অন্যদিকে প্রকৃত টাইটানিক অলিম্পিক নাম ধারণ করে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত সুন্দরভাবে সার্ভিস দেয় এবং জাহাজ নিমার্ণের দীর্ঘ ২৫ বছর পর সম্পূর্ণ সচল থেকে টাইটানিক জাহাজটি অবসরে চলে যায়।
সত্যি কথা বলতে যুগ যুগ ধরে অসংখ্য বিশেষজ্ঞরা টাইটানিককে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে আসছেন কিন্তু তারা যতই ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করুক না কেন, টাইটানিক চিরকালই থাকবে রহস্যের আড়ালে ঘেরা, সব জানার পরও যেন জানার আরও বহু কিছু রয়ে যাবে!