পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেই কমবেশি হকি খেলা হয়। ফুটবল বা ক্রিকেটের মতো এতটা জনপ্রিয় না হলেও হকির জনপ্রিয়তা মোটেও কম নয়। এ খেলাটি পৃথিবীর প্রাচীন খেলাগুলোর একটি। যেসব খেলায় বল আর লাঠি দুটিই ব্যবহৃত হয় তার মধ্যে হকিকেই সবচেয়ে প্রাচীন বলে মনে করা হয়। কবে, কোথায় হকি প্রথম উৎপত্তি লাভ করে তা সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি।
অনেকে ধারণা করেন, সভ্যতার একেবারে শুরুর দিক থেকেই মানুষ হকি খেলে আসছে। তবে অন্তত ৫০০০ বছর আগে যে এ খেলাটির প্রচলন ছিল সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। খেলাটির নাম তখন অবশ্য হকি ছিল না। একে তখন বল আর লাঠির খেলা বলে ডাকা হতো।তিন হাজার বছর পূর্বেকার মিসরের একটি পিরামিডেও হকি খেলার দৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। ১১২২ খ্রিস্টাব্দের ইউরোপের একটি দেয়াল চিত্রে এ সম্পর্কিত আরও প্রমাণ পাওয়া যায়।রোম, স্কটল্যান্ড, মিসর, দক্ষিণ আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে একে অন্যান্য নামেও ডাকা হতো। তবে খেলার মূল নিয়মকানুন ছিল মূলত একই এবং তা আজকের হকি থেকে বেশ আলাদাই ছিল বলা চলে।
সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীতে ইংল্যান্ডে বিশৃঙ্খলভাবে প্রচুর হকি খেলা হতো। সে সময় একেকটি দলে ১০০ জন করে খেলোয়াড় অংশ নিত। গ্রামবাসীরা খেলাটিকে প্রচণ্ড পৌরুষ ও গর্বের বলে মনে করত। ফলে খেলাটি সে সময় মূলত ভয়ংকর এক রূপ নিয়েছিল। ১৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলত এ খেলা এবং অনেক খেলোয়াড়কে গুরুতর আহত হতে হতো। একজন রেফারি থাকলেও তাঁর বিশেষ কোনো ক্ষমতা ছিল না। মূলত এর কিছুকাল পর থেকেই খেলাটিতে বেশকিছু নিয়মকানুন যুক্ত হতে থাকে। ১০০ জনের বদলে খেলোয়াড় সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০-এ। খেলার মান বাড়ানোর জন্য রেফারির হাতে দেওয়া হয় বিশেষ ক্ষমতা। খেলাটিকে সভ্য করে তোলার জন্য ইংল্যান্ডের এটন কলেজ এতে যুক্ত করে বিশেষ কিছু রীতি। ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে দ্য হকি অ্যাসোসিয়েশন।
গ্রিসে এই খেলার উৎপত্তি ধরা হলেও হকি খেলা পূর্ণতা পায় ইংল্যান্ডে। ১৮৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত লন্ডনের উইম্বলডন হকি ক্লাব খেলাটিকে অনেক দিনের অগোছালো অবস্থা থেকে একটি নির্দিষ্ট রূপ ও মানদন্ড প্রদান করে। ১৮৯৫ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচে ইংল্যান্ড ৫-০ গোলে আয়ারল্যান্ডকে পরাজিত করে। ১৯০৮ সালে হকি অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৪২ সালে ব্রাসেলসে গঠিত হয় ফেডারেশন ইন্টারন্যাশনাল দ্য হকি। এটি হকির সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ১৯৫৮ সালে প্রথম বিশ্বকাপ হকির আয়োজন করা হয়। পাকিস্তান, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, হল্যান্ড, ইংল্যান্ড, কোরিয়া, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশ হকি খেলায় যথেষ্ট পারদর্শী।
ফিল্ড হকি একটি দলগত ক্রীড়া। এই খেলায় প্রত্যেক দলের খেলোয়াড়েরা হকি স্টিক দিয়ে বলে আঘাত করে, ঠেলে বা ছুঁড়ে বিপক্ষ দলের গোল পোস্টে প্রবেশ করিয়ে গোল করেন। এই খেলার সাধারণ নাম হকি। অনেক দেশেই ফিল্ড হকি পরিচিত হকি নামে। তবে যেসব দেশে আইস হকি বা স্ট্রিট হকির মতো অন্যান্য ধরনের হকিও খেলা হয়, সেখানে ফিল্ড হকি শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় খেলা হল ফিল্ড হকি। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য একাধিক আন্তর্জাতিক হকি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য অলিম্পিক গেমস, প্রতি চার বছর অন্তর আয়োজিত হকি বিশ্বকাপ, বার্ষিক হকি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ও জুনিয়র হকি বিশ্বকাপ।
ইন্টারন্যাশনাল হকি ফেডারেশন (এফআইএইচ) হকির আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এই সংস্থা হকি বিশ্বকাপ ও মহিলা হকি বিশ্বকাপ আয়োজন করে থাকে। এফআইএইচ-এর অধীনস্থ হকি রুলস বোর্ড হকি খেলার নিয়মকানুন স্থির করে। অনেক দেশেই সিনিয়র ও জুনিয়র হকি খেলোয়াড়দের জন্য ক্লাবস্তরে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যার বিচারে হকির স্থান বিশ্বে দ্বিতীয় (অ্যাসোসিয়েশন ফুটবলের পরেই) হলেও, হকি দর্শকদের মধ্যে খুব একটা জনপ্রিয় নয়। অল্প সংখ্যক খেলোয়াড়ই পূর্ণ সময়ের হকি খেলোয়াড় হিসেবে খেলে থাকেন। যেসব দেশে তীব্র শীতের জন্য আউটডোরে হকি খেলা সম্ভব নয়, সেই সব দেশে বেমরসুমে ইনডোরে হকি খেলা হয়। ইনডোর ফিল্ড হকি নামক এই খেলাটি সাধারণ ফিল্ড হকির তুলনায় একটু ভিন্ন।
ফিল্ড হকি একটি দলগত ক্রীড়া। এই খেলায় প্রত্যেক দলের খেলোয়াড়েরা হকি স্টিক দিয়ে বলে আঘাত করে, ঠেলে বা ছুঁড়ে বিপক্ষ দলের গোল পোস্টে প্রবেশ করিয়ে গোল করেন। এই খেলার সাধারণ নাম হকি। অনেক দেশেই ফিল্ড হকি পরিচিত হকি নামে। তবে যেসব দেশে আইস হকি বা স্ট্রিট হকির মতো অন্যান্য ধরনের হকিও খেলা হয়, সেখানে ফিল্ড হকি শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের জাতীয় খেলা হল ফিল্ড হকি। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য একাধিক আন্তর্জাতিক হকি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য অলিম্পিক গেমস, প্রতি চার বছর অন্তর আয়োজিত হকি বিশ্বকাপ, বার্ষিক হকি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ও জুনিয়র হকি বিশ্বকাপ।
ইন্টারন্যাশনাল হকি ফেডারেশন (এফআইএইচ) হকির আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এই সংস্থা হকি বিশ্বকাপ ও মহিলা হকি বিশ্বকাপ আয়োজন করে থাকে। এফআইএইচ-এর অধীনস্থ হকি রুলস বোর্ড হকি খেলার নিয়মকানুন স্থির করে। অনেক দেশেই সিনিয়র ও জুনিয়র হকি খেলোয়াড়দের জন্য ক্লাবস্তরে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যার বিচারে হকির স্থান বিশ্বে দ্বিতীয় (অ্যাসোসিয়েশন ফুটবলের পরেই) হলেও, হকি দর্শকদের মধ্যে খুব একটা জনপ্রিয় নয়। অল্প সংখ্যক খেলোয়াড়ই পূর্ণ সময়ের হকি খেলোয়াড় হিসেবে খেলে থাকেন। যেসব দেশে তীব্র শীতের জন্য আউটডোরে হকি খেলা সম্ভব নয়, সেই সব দেশে বেমরসুমে ইনডোরে হকি খেলা হয়। ইনডোর ফিল্ড হকি নামক এই খেলাটি সাধারণ ফিল্ড হকির তুলনায় একটু ভিন্ন।
গল্পের বিষয়:
ইতিহাস