১৯. সুবিমলবাবুর ওখান থেকে অফিসে ফিরে
সুবিমলবাবুর ওখান থেকে অফিসে ফিরে আসতেই কতকগুলো কাজে সুব্রত দিন দুই এমনভাবে আটকা পড়ে গেল যে কোনদিকে আর সে নজর দেবারও ফুরসত পেল না।
ইতিমধ্যে একবার সে কিরীটীকে ফোন করেছিল। শুনলে কিরীটী কলকাতার বাইরে কোথায় গেছে দুদিনের জন্য। অমিয়াদিকে বলাই ছিল, অন্ততপক্ষে সকালে ও রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে দুবার সুব্রতকে ফোন করে নিয়মিতভাবে বাবলুর সংবাদ দেওয়ার জন্য। কেননা সুব্রতর একপ্রকার স্থির বিশ্বাসই ছিল, বিপক্ষ দল সহজে সুব্রতকে নিষ্কৃতি দেবে না। তাছাড়া মিঃ সরকারের খুনের ব্যাপারের সঙ্গে বাবলুর জীবন-রহস্যের যোগাযোগ সত্যিই যদি তার সন্দেহমত থেকে থাকে, তবে তারা বাবলুকে সরাবার চেষ্টা করবেই।
এই সব নানা কারণে সুব্রত ইন্টেলিজেন্স বিভাগের দুজন তরুণ যুবক শিশির ও সমরকে বাবলুর প্রহরায় নিযুক্ত করেছিল।
শিশির ও সমর দুজনে পর্যায়ক্রমে দিবারাত্র এক একসময় এক একজন অমিয়াদির বাড়ির পাশে পাহারা দিত।
বাবলু এ বাড়িতে আসার তৃতীয় দিন বিকালের দিকে হঠাৎ একসময় রাণু এসে বাবলুর সামনে দাঁড়াল। বাবলু দোতলার রাস্তার উপরে ঝুলন্ত বারান্দার রেলিংয়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে নীচের পার্কের ছেলেমেয়েদের দৌড়াদৌড়ি খেলাধূলা দেখছিল।
রাণু মৃদুস্বরে এসে বললে, বাবলু, তুমি আমার ওপরে সেদিনের ব্যবহারে নিশ্চয়ই রাগ করেছ, না?
হঠাৎ রাণুকে এত কাছাকাছি দেখে বাবলু বেশ যেন একটু থতমতই খেয়ে গিয়েছিল। সে অবাক হয়ে ভীত কাতর দৃষ্টি মেলে রাণুর মুখের দিকে তাকাল।
আমার উপরে রাগ কোরো না বাবলু। চল আমরা পার্কে বেড়িয়ে আসি। যাবে?
তার ভয়ে কোনমতে সেঁক গিলে বাবলু বললে, যাব।
রাণুর পিছনে পিছনে বাবলু পার্কে বেড়াতে গেল। পার্কে খানিকটা ঘুরে এদিক ওদিক বেড়াবার পর রাণু এক সময় বাবলুকে বললে, খুব বেশি লোকজন এখন পার্কে, তাই এত গোলমাল। খাওয়াদাওয়ার পর রাত্রে অনেক দিন আমি লুকিয়ে পার্কে বেড়াতে এসেছি। রাত্রে ঐ মোড়ে রামদিনের কুলপি মালাই পাওয়া যায়। খুব সুন্দর খেতে। আজ রাত্রে এসে খাওয়া যাবেখন, কেমন?
বাবলু বললে, কিন্তু রাত্রে বাড়ি থেকে বের হলে মা যদি বকেন!
দূর, মা জানতে পারবে কেমন করে? লুকিয়ে আসব না! বাবলু চুপ করে রইলো। কোন জবাব দিল না।
রাণুর বাবা ডাঃ বোস সাধারণত একটু বেশী রাত্রি করেই বাড়ি ফেরেন। কাজে কাজেই অমিয়াদির, সমস্ত কাজ করে শুতে যেতে রাত্রি সাড়ে এগারোটা বেজে যায়।
খাওয়াদাওয়ার পর রাত্রি নটার সময় রাণু এসে বাবলুকে বিছানা থেকে ডেকে তুলল। বাবলু আলাদা ঘরে একাই শুতে। রাণুর পাশের ঘরে। ঘুম ভেঙে বাবলু রাণুর মুখের দিকে তাকাল। বারান্দার ঢাকনি দেওয়া ইলেকট্রিক বাতির রশ্মিটা রাণুর মুখের উপরে এসে পড়েছে। চোখ দুটো যেন তার কী এক উত্তেজনায় চক্ করছে। ও সভয়ে চোখ বুজে ফেলল।
রাণু অধীর হয়ে বাবলুকে আবার ধাক্কা দিল, কই চল, যাবে না। দেরি হয়ে যাচ্ছে!
বাবলু উঠে বসল।
দুজনে পা টিপে টিপে এসে সিঁড়ির সামনে দাঁড়াল।
চাপা গলায় বাবলু বললে, আমার বড্ড ভয় করছে রাণুদি। মা যদি বকেন!
চল, চল বোকা মেয়ে! মা জানতে পারবে কী করে? আমরা তো একটুক্ষণ পরেই এসে আবার শুয়ে থাকবো। কেউ টের পাবে না।
আমার কিন্তু বড্ড ভয় করছে।
আয়, দেরি করিস নে। ফিরতে আবার দেরি হয়ে যাবে।
দুজনে এসে রাস্তার ওপারে দাঁড়াল।
অন্ধকার রাত্রি। তার উপর আবার ব্ল্যাক-আউটের মহড়া। ঘেরাটোপে ঢাকা গ্যাসের ম্লান আলো রাস্তার ওপর একটা যেন স্তিমিত আলোছায়ার সৃষ্টি করেছে।
বাড়ির সামনেকার অপ্রশস্ত জনহীন রাস্তাটা পার হয়ে রাণুর পিছু পিছু বাবলু এসে দেশবন্ধু পার্কের মধ্যে প্রবেশ করল।
পার্কটাও জনহীন। কেউ কোথাও নেই।
ময়দানের মাঝখান দিয়ে লাল সুরকির অপ্রশস্ত রাস্তা ধরে দুজনে এগিয়ে চলে।
অদূরে একটা বেঞ্চির ওপরে বসে কে যেন গান গাইছে।
ও আমার নীলমণি!
তোর জ্বালায় আর পারিনে নীলমণি!
ও আমার কেলে সোনা,
তুমি পাড়ায় যেও না;
পাড়ায় গেলে ধুলো দেবে
গায়ে সবে না।।
কে গাইছে রাণুদি? বাবলু চলতে চলতে থেমে গিয়ে প্রশ্ন করল।
ও বিশু পাগলা। এই পাড়াতেই থাকে। চল, আবার থামলে কেন? ওই গেটের মুখে কুলপী বরফওয়ালা থাকে। তাড়াতাড়ি চল। দুজনে এসে যখন ওদিককার গেটের সামনে দাঁড়াল, জায়গাটা খালি-খালি, জনমনিষ্যিও সেখানে নেই।
কই তোমার বরফওয়ালা, রাণুদি?
এখানে আজ নেই দেখছি। বোধ হয় ওই রাস্তার মাথায় বসেছে, চল দেখি!
বাবলু বাধা দিল, না না, রাণুদি, আজ থাক। চল আমরা বাড়িতে ফিরে যাই। আমার বড্ড ঘুম পাচ্ছে। আর একদিন এসে মালাই খাব। মা যদি আমাদের খোঁজেন, ব্যস্ত হবেন।
রাস্তার পাশের ঢাকনা দেওয়া গ্যাসের আলোয় খানিকটা রশ্মি এসে রাণুর মুখের ওপরে পড়েছে। সহসা রাণুর মুখের দিকে তাকিয়ে বাবলুর মনের মধ্যে যেন একটা অজানিত আশঙ্কা শিউরে উঠল। সমগ্ৰ মুখখানার মধ্যে যেন একটা হিংসা কুটিল জাকুটি। চোখের তারা দুটি কী এক উত্তেজনায় যেন জ্বলজ্বল করছে।
দুজনে চোখাচোখি হতেই একটু পরেই রাণু মুখের ওপরে একটা হাসি টেনে আনলে, হাসতে হাসতে বললে, কী ভীতু মেয়ে তুই বাবলু! আয় আয়। দুজনে আছি, ভয় কী? ওই তো রাস্তার মোড় দেখা যাচ্ছে! কতক্ষণই বা লাগবে। যাব আর আসব, চল।
সহসা বাবলু যেন বেঁকে দাঁড়াল। আবার রাণুর মুখের ওপরে একটু আগেকার হিংস্র কুটিল ভাবটা ফুটে উঠল। চট্ করে এগিয়ে এসে সে বাবলুর একখানা হাত দৃঢ় মুষ্টিতে চেপে ধরল এবং তীক্ষ্ণ রাগত স্বরে বললে, কী বললি পেত্নী, যাবিনে? তোকে যেতেই হবে। কোন কথা তোর আমি শুনব না। না যদি যাস, তবে তোকে খুন করে ফেলব।
সে রাত্রে পাহারা দেবার কথা ছিল শিশিরের। বাবলু আর রাণু যখন বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় এসে নামে, শিশিরের সদা সতর্ক দৃষ্টি তারা এড়াতে পারেনি।
রাত্রি নটার সময় ওদের দুজনকে বাড়ি থেকে বের হতে দেখে ও বেশ একটু আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল। হঠাৎ রাত্রে কেন ওরা বাড়ির বাইরে এল। দূর থেকে আড়ালে আড়ালে থেকে শিশির ওদের দুজনকে অনুসরণ করতে লাগল। ওদের দুজনেরই অজ্ঞাতে এবং ওদের অনুসরণ করতে করতে ওদের দুএকটা কথা ওর কানে আসতেই ও আরও বেশী সতর্ক হয়ে গেল।
ও স্পষ্টই বুঝল, বাবলুর অনিচ্ছা সত্ত্বেও রাণু তাকে সকলের অজ্ঞাতে বাড়ির বাইরে নিয়ে এসেছে!
কিন্তু কেন? এতটুকু মেয়ে রাণু!
বাবলু কিন্তু সহসা রাণুর পরিবর্তনে চমকে গেল। রাণু যেন রাগে তখন ফুলছে। ও বলতে লাগল, পেত্নী, রাক্ষুসী! কেন তুই আমাদের বাসায় এলি? কেন মা তোকে ভালবাসবে? কেন তোকে আদর করবে? কেন তুই মরিস না? কেউ তোকে চায় না!
রাণুদি। রাণুদি! ওকথা বলল না—বোলো না। আমি তো তোমার কিছু করিনি ভাই! আমি তোমাকে কত ভালবাসি। বাবলু কেঁদে ফেলল।
ভালবাসি। কে তোকে ভালবাসতে বলেছে? কে চায় তোর ভালবাসা! তুই আর আমাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারবি না। আর তোকে আমাদের বাড়িতে যেতে দেব না। তুই যদি আবার আমাদের বাড়িতে যাস, তবে তুই ঘুমালে রাত্রে চুপি চুপি উঠে বাবার অপারেশনের ছুরি দিয়ে তোর গলা কেটে ফেলব।
রাণুদি! রাণুদি! ওগো তোমার দুটি-পায়ে পড়ি, আমাকে মেরো না। আমি কোথায় যাব?
তা আমি জানি না। তোর যেখানে খুশী তুই মরগে যা।
ঠিক এমনি সময় একটা কালো রঙের দ্রুতগামী সিডনবডি মোটরগাড়ি সহসা এসে ওদের সামনে ব্রেক কষে দাঁড়াল। গাড়িটা আসার সঙ্গে সঙ্গেই দুজন লোক গাড়ির দরজা খুলে নেমে ওদের সামনে এসে দাঁড়াল।
শিশির ততক্ষণে চট করে বুঝে ফেলল, একটা প্রকাণ্ড ষড়যন্ত্র আছে এর মধ্যে। আর অপেক্ষা করা নয়, সে চট করে ওদের সামনে এসে দাঁড়াল।
সহসা অন্ধকার থেকে শিশিরকে ওদের সামনে আবির্ভূত হতে দেখে তোক দুটো চমকে ফিরে দাঁড়াল। একজন কর্কশ গলায় বললে, কে তুই? কী চাস্?
শিশিরও সমানে জবাব দিলে, তোরা কী চাস্?
সহসা এমন সময় দলের একজন এগিয়ে এসে শিশিরের নাকের ওপরে অতর্কিতে ঘুষি বসালে।
অতর্কিতে আঘাত পেয়ে শিশির ঘুরে পড়ল।
দলের অন্যজন ব্যগ্রকণ্ঠে বললে, মানকে, আর দেরি নয়, শিগগির ছুঁড়িকে গাড়িতে তোল।
শিশির কিন্তু ততক্ষণে সামলে নিয়ে আবার এগিয়ে এসেছে।
তিনজনে মারামারি শুরু হয়ে গেল।
ঐ ফাঁকে বাবলু বললে, শিগগির পালিয়ে চল রাণুদি।
রাণু তীক্ষ্ণ কণ্ঠে জবাব দিল, কোথায় যাবি তুই রাক্ষুসী! আমি যাব না।
বাবলু পালাতে চায়। রাণু তাকে জাপটে ধরল, না, তোকে যেতে দেব না।
এমন সময় আর একটা লোক গাড়ি থেকে নেমে এল।
বাবলু রাণুর ধত হাতখানা এক মোচড় দিয়ে ছাড়িয়ে অন্ধকারে অন্যদিকে লাফিয়ে পড়ল। ঠিক সেই সময় রাণুকে কে যেন একটা ভারী চাদর দিয়ে ঢেকে ফেললে। রাণু হাত-পা ছুঁড়ে চীৎকার করতে লাগল। কিন্তু বৃথা, লোকটা রাণুকে চাদরসমেত পোঁটলার মত তুলে নিয়ে গাড়ির মধ্যে গিয়ে ফেলে দিয়ে দরজা আটকে দিল এবং চীৎকার করে বললে, মানকে, গোবরা শিগগির আয়!
লোকটার চীৎকার শুনে মানকে-গোবরা, তাড়াতাড়ি শিশিরকে এক প্রবল ধাক্কায় ফেলে দিয়ে ছুটে গাড়ির মধ্যে গিয়ে উঠে বসল। রাস্তার একটা ইটে প্রচণ্ড আঘাত লাগায় শিশিরের মাথা তখন কেটে গিয়ে রক্ত ঝরছে। সে উঠে যাবার আগেই গাড়িটা অদৃশ্য হয়ে গেল।
ঘটনার আকস্মিকতায় বাবলু হতচকিত হয়ে গিয়েছিল। তারপর যখন দেখলে গাড়িটা চলে গেল, ও পায়ে পায়ে শিশিরের কাছে এসে দাঁড়াল। শিশির এক হাতে মাথাটা চেপে ধরে যন্ত্রণাকাতর কণ্ঠে বললে, কে?
আমি বাবলু।
বাবলু! শিশির চকিতে উঠে দাঁড়াল, তবে তোমাকে ওরা নিতে পারেনি?
একটু একটু করে তখন বাবলুর মনে সাহস ফিরে আসছে। সে শিশিরের কাছে আরও একটু এগিয়ে এল, কিন্তু ওরা যে রাণুদিকে নিয়ে গেল! কী হবে? আপনি কে?
আমার নাম শিশির। চল এখনি তোমাদের বাড়িতে যাই। সুব্রতবাবুকে ফোন করতে হবে।
বাবলুর সঙ্গে শিশির যখন ডাঃ বোসের বাড়িতে এসে প্রবেশ করল, ঠিক তখনই ডাঃ বোসও ফিরে এসে গাড়ি থেকে নামছেন। বাবলু ও শিশির গিয়ে বাড়িতে ঢুকতেই ডাঃ বোসও তাদের পিছু পিছু এসে বাইরের ঘরে প্রবেশ করলেন, কে আপনি? কাকে চান? এ কি বাবলু! এত রাত্রে
কোথায় গিয়েছিলে?
শিশির তখন সংক্ষেপে আগাগোড়া সমগ্র ব্যাপারটি ডাঃ বোসকে বলে বললে, আমি এখুনি সুব্রতবাবুকে ফোন করতে চাই। আপনার ফোন কোথায়?
ডাঃ বোস শিশিরের মুখে সমস্ত ঘটনা শুনে যেন হতবাক হয়ে গেছেন। কোন মতে হাত তুলে ঘরের কোণে ফোনটা দেখিয়ে দেন।
ওদিকে সুব্রত শিশিরের মুখে ফোনে সংবাদ পেয়ে অতিমাত্রায় চঞ্চল হয়ে বললে, আমি এখনি আসছি। তুমি অপেক্ষা কর।
বাড়ির মধ্যে সংবাদ পৌছাল। হন্তদন্ত হয়ে অমিয়াদি বাইরের ঘরে এসে ঢুকলেন, এসব কি শুনছি! রাণুকে নাকি কারা ধরে নিয়ে গেছে?
ডাঃ বোস তার মেয়ে রাণুর হিংসাপরায়ণ স্বভাবের সঙ্গে যথেষ্ট পরিচিত ছিলেন। শিশিরের মুখে সমস্ত ব্যাপার শুনে মেয়ের জন্য যেমন তিনি ব্যস্ত হয়ে উঠেছিলেন, মেয়ের কুৎসিত ব্যবহারে লজ্জাও পেয়েছিলেন ঠিক ততোধিক।
বাবলু তখন একটা সোফার ওপরে বসে হাতে মুখ ঢেকে ফুলে ফুলে কাঁদছিল।
স্ত্রীকে সংক্ষেপে সমগ্র ব্যাপারটা খুলে বলে ডাঃ বোস বললেন, রাণু যে আমাদের এতখানি খারাপ হয়েছে তা কোনদিনই ভাবিনি, অমিয়া!
অমিয়াদি স্বামীর মুখে সমগ্র ব্যাপার শুনে বিস্ময়ে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন। তার মেয়ের চিন্তার চেয়েও সুব্রতর কাছে মুখ দেখাবেন কী করে, সেই আসন্ন লজ্জাকর পরিস্থিতির চিন্তায় মূক হয়ে গেলেন।
অল্পক্ষণ পরেই সুব্রতর গাড়ি এসে বাইরে দাঁড়াল। ঝড়ের মতই দ্রুতপদে এসে সুব্রত ঘরের মধ্যে প্রবেশ করল। সুব্রতকে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করতে দেখেই বাবলু ছুটে এসে সুব্রতকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললে। বললে, রাণুদিকে ধরে দিয়ে গেছে দাদা মানকে, গোবরা! কী হবে?
কেঁদো না বাবলু, এখুনি রাণুকে আমরা ফিরিয়ে নিয়ে আসব।
আমিও আপনার সঙ্গে যাব দাদা। আমি তাদের সবকিছু জানি। কোথায় তারা রাণুদিকে ধরে নিয়ে গিয়ে রাখবে তা আমি জানি। হয় উত্তরের ঘরে, নয়তো পুরাতন বাড়ির নীচে তলায়। কয়েকদিন আমাকে তারা সে-বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। মিঞা সেখানে থাকে নিশ্চয়ই। মিঞার ঘরেই রাণুদিকে তারা আটকে রাখবে।