আম্মুঃ মিনজু এই মিনজু ওঠ স্কুল যাবি না।
আমিঃ আম্মু আরেকটু ঘুমাই না।
আম্মুঃ ওঠবি না বলতিতে পানি এনে মাথায় ডালমু।
আমিঃ এই না না উঠতেছি।
আম্মুঃ যা ফ্রেস হয়ে আয় তাড়াতাড়ি।
আমিঃ ok. আচ্ছা ফ্রেস হতে হতে পরিচয়টা দিয়ে দেই। আমি মিনজু আর একটু আগে যার সাথে কথা বললাম তিনি হচ্ছেন আমার মা। পরিবারের সদস্য বলতে মা আর আমি আর বাবা অনেক আগেই আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। চলুন গল্পে ফিরে আসা যাক। ক্রিং ক্রিং ক্রিং (মোবাইলের শব্দ) মোবাইলের স্ক্রিনে দেখি আমার জানের দোস্ত সিহাবের ফোন
সিহাবঃ হ্যালো
আমিঃ হেলছি
সিহাবঃ হ্যালো হ্যালো।
আমিঃ হেলছি
সিহাবঃ হ্যালো হ্যালো হ্যালো।
আমিঃ আব্বে হেলছি তো আর কতো হেলতে বলতি হেলতে হেলতে কোমর ভাইঙ্গা গেলো
সিহাবঃ ফাইজলামি বন্ধ করবি না মাইর খাবি।
আমিঃ আচ্ছা ঠিকাছে বল কিসসে।
সিহাবঃ আমি মনির,আর সুপার ও থুক্কু কি কই প্রান্ত ওয়েট করতাছি তাড়াতাড়ি আয়।
আমিঃ আচ্ছা ঠিকাছে আসতাছি।
সিহাবঃ ok তাড়াতাড়ি আয়। টুট টুট টুট
আমিঃ মা স্কুলে গেলাম।
আম্মুঃ খেয়ে গেলি না বাবা।
আমিঃ না মা গেলাম বাই। এখন স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। দেখি রিকসা পাওয়া যায় কিনা ঔ তো একটা রিকসা এই রিকসা।
রিকসাওয়ালাঃ জ্বি বলেন
আমিঃ আর এস জাবেন।
রিকসাওয়ালাঃ জ্বি ভাই ওঠেন। এখন আমার গন্তব্য হচ্ছে স্কুল। স্কুলের সামনে এসে পরেছি দেখি স্কুল গেটের সামনে হারামি বন্ধুরা দারিয়ে আছে।
আমিঃ হ্যালো।
মনিরঃ আব্বে তোর হ্যালোর খেতায় আগুন। ওই ওরে সবাই ধইরা মার ডিসুমমম ঠাসসসস ঠুসসসসস
আমিঃ আরে মারাতাছোছ কেন
প্রান্তঃ এতো দেরি হইলো কেন।
আমিঃ প্রান্তিক সুপার বাস পাইলাম নাতো রিকসা দিয়া আসছি তাই দেরি হইছে। হা হা হা হা (আসলে আমরা বন্ধুরা সবাই প্রান্তিক সুপার বাস বলে ঢাকি)
প্রান্তঃ ঔ আমাকে একদম প্রান্তিক সুপার বাস বলবিনা বইলা রাখলাম।
আমিঃ আচ্ছা ঠিকাছে চল ক্লাসে যাই।
মনিরঃ এতো তাড়াতাড়ি যায়া কি করবি চল নদীর পারে যাই।
আমিঃ আচ্ছা ঠিকাছে চল যাই। নদীর পারে বসে আছি হঠাৎ একটা মেয়ে স্কুলে যাইতেছে আর আমার হারামি বন্ধুদের চোখ ও দিকে গেলো
সিহাবঃ মেয়েটা কি সুন্দর দেখ।
প্রান্তঃ চল মেয়েটার সাথে টাংকি মাইরা আসি।
আমিঃ ঔ তোরা স্কুলে পড়তে আইছো না মেয়েদের টাংকি মারতে আইছো।
প্রান্তুঃ দুইটাই এখন দেখ হোতা হে কেয়া
সিহাবঃ চল তাড়াতাড়ি
প্রান্তঃ আসসালামুআলাইকুম আপু কেমন আছেন।
মেয়েটাঃ জ্বি ভালো আপনি কে।
প্রান্তঃ আমি প্রান্ত আপনি এই স্কুলে নতুন।
মেয়েটাঃ জ্বি আমি এই স্কুলে নতুন।
আমিঃ আমিও কিন্তু এই স্কুলে নতুন আর আমার আশেপাশে এদের কে দেখতেছো না এরা হচ্ছে আমার ছোট ভাই। এদের যদি সমস্যা হয় এরা আমার কাছে আসে। আপনার যদি কোন সমস্যা হয় আপনি আমার কছে আসতে পারেন।
সিহাবঃ না আপু এই বেডা Class 10 এ চার বছর ধইরা পড়তাছে। ওর নাম হচ্ছে আদু ভাই। আপনার যদি কোন সমস্যা হয় আপনি আমার কাছে আসতে পারেন।
প্রান্তঃ কি বললি তুই তোর সাহস তো কম না। আজকে তোর একদিন কি আমার একদিন। (দুইজনের মধ্যে ঝগড়া শুরু)
আমিঃ ঔ তোরা থামবি মনির।
মনিরঃ জ্বী বস।
আমিঃ ঔ দুইটার গালে দুইটা থাবরানি মাইরা আয় তো।
মনিরঃ ওকে বস। ঠাসসসসস ঠাসসসসস ( দুইটার দুই গালে)
সিহাবঃ কিরে সালা মারলি কেন।
মনিরঃ টাংকি মারা বাদ দিয়া তাড়াতাড়ি আয় ক্লাসে সালা ছেচড়ার দল।
আমিঃ ঔ চল ক্লাসে যাই। কিরে প্রান্ত কান্দিস কেন।
প্রান্তঃ জীবনে একটাও প্রেম করতে পারলাম না। একটারে লাইন মারতে ছিলাম সেটাও ভাইঙ্গা দিলি।
আমিঃ তোর মতো অশিক্ষিত কে কে প্রেম করবে।
প্রান্তুঃ কি আমি অশক্ষিত।
আমিঃ তুই যে অশিক্ষিত এই বিষয় নিয়ে তোর সন্দেহ ছিলো নাকি।
প্রান্তঃ ভাই আমারো একদিন সময় আসবো তখন বুঝবি ঠেলা।
মনিরঃ বোঝাবুঝি বাদ দিয়া চল ক্লাসে যাই। ক্লাসে যায়া দেখি গরু স্যার মানে ইয়াছিন স্যার ক্লাস করাইতাছে। ইয়াছিন স্যার কে আমরা সবাই আড়ালে গরু স্যার বলে ডাকি।
সবাইঃ আসবো স্যার।
স্যারঃ বাজান রা আসেন আসেন, তা বাপজানেরা দেখোতো কয়টা বাজে এটাকি এখন ক্লাসে আসার সময়। আার স্কুলে আসে মানুষ ভদ্র হইয়া তোদের দেইখা তো মনে হয় না তোরা স্টুডেন্ট।
আমিঃ আপনারে দেইখাও তো মনে হয়না আপনি স্যার।
স্যারঃ কিবললি তো আমাকে দেইখা তোর কি মনে হয়।
আমিঃ গরু স্যার।
স্যারঃ কি বললি আমি গরু।
আমিঃ নান না না মানে স্যার আপনি আমাদের গুরু আপনি আমাদের গুরু। আপনি আমাদের কতো কষ্ট করে পড়ান। ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যা সাগর আপনাকে দেইখা ফেললল।
স্যারঃ হইছে আর তেল দিতে হবে না।
আমিঃ কি বলেন স্যার আমি তেল দিবো। আমার কি ওতো টাকা আছে নাকি স্যার। এমনাতেই পেট্রোলের দাম বেশী। ডিজেলে এর দামো বেশী। কিন্তু অকটেনের দাম মনে হয় একটু কমছে।
স্যারঃ ওই আমি কি বলি আর তুই কি বুঝিস। যা সিটে যায়য়া বোস।
আমরাঃ ওকে স্যার।
স্যারঃ সো স্টুডেন্টস তোমরা কি হোমওয়ার্ক করছো ক্লাসের সবাইঃ জ্বি স্যার
স্যারঃ মিনজু, সিহাব, মনির, প্রান্ত তোরা হোমওয়ার্ক করছিস।
আমরাঃ না মানে হোমওয়ার্ক করি নাই স্যার।
স্যারঃ কি হোমওয়ার্ক করিস নাই। মিনজু হোমওয়ার্ক করিস নাই কেন।
আমিঃ আসলে স্যার হইছে টা কি আমার না বন্ধুর বউ মরছে স্যার ( ভ্যা ভ্যা ভ্যা) ঢাহা মিথ্যা কথা।
স্যারঃ তোর বন্ধুর বউ মরছে তুই কান্দস কেন।
আমিঃ আমার বন্ধুর বউ মানে তো আমারো বউ তাই না স্যার।
স্যারঃ কি কি বললি।
আমিঃ না মানে স্যার আমার বন্ধুর বউ মানে আমার ভাবি ভাবি। ( কি বলতে কি বইলা ফালাইছি)
স্যারঃ আচ্ছা আজকের মতো তোদের মাফ করে দিলাম।
মনিরঃ থ্যাংকিউ স্যার। তারপর স্কুল ছুটির পর আমাদের চোখ আম গাছে।
মনিরঃ দেখ কতো বড়ো আম।
আমিঃ আয় আম চুরি করি।
সিহাবঃ আম চুরি করা ভালো না।
প্রান্তঃ ওই সিহাব রে ধইরা উত্তম মধ্যম দে তো।
আমিঃ থাক মারতে হবে না আমের মধ্যে ঢিল লাগা। ঔ জয় বাংলা লাগা ঢিল। টং টাস টাস( জালনা ভাঙ্গার শব্দ)
আমিঃ ঔ প্রান্ত কি করলি আমে ঢেল দিতে যায়া জানলায় ঢেল লাগাইলি।
প্রান্তঃ আমি লাগাইনাই সিহাব লাগাইছে।
সিহাবঃ সেটা আমি মিনজু মনির আর তুই জানিস বাড়িওয়ালা তো সেটা জানে না।
প্রান্তঃ এইটা ঠিক না।
বাড়িওয়ালাঃ ঔ কেরে আমার বাড়ির জানলার কাচ ভাঙ্গে।
আমিঃ আব্বে আগে বাচতে চাইলে পালা।
বাড়িওয়ালাঃ ধর ওদের ধর ধর। ওমনি বাড়িওয়ালার চেলা চামুন্ডারা ধইরা ফেললো
বাড়িওয়ালাঃ ঔ তোদের সাহস তো কম না একে আমার বাড়ির বাগানে আম চুরি করতে আসছোছ দুই আমার বাড়ির জালনার কাচ ভাংছোস।
মনিরঃ আমি কিছু করি নাই সব করছে প্রান্ত।
প্রান্তঃ আমি কিছু করি নাই সব করছে মিনজু।
আমিঃ ঔ আমি কিছু করি নাই সব করছে সিহাব।
সিহাবঃ ঔ আমার ঘারে দোষ দেস কেন তোদের একদিন কি আমার একদিন। আমাদের নিজেদের মধ্যে মারপিট শুরু।
বাড়িওয়ালাঃ ঔ তোরা থামবি লাঠিটা নে আয় তো। ঠাসসসসস “ঠাসসসসস।এই হচ্ছে আমাদের বন্ধু সমাজ। একে ওপরকে বাঁশ দিতে ওস্তাদ। কিন্তু কিছু কিছু বন্ধু আছে যাদের কে ছাড়া এক মহুর্তও চলে না। আপনাদের বন্ধু বান্ধবী কিরকম বলবেন কিন্তু। আর সরি পার্ট ছোট করে দেওয়ার জন্য পরিক্ষার কারনে পার্ট ছোট করে দিতে হলো ভবিষ্যতে আরো বড় করবো ইনসাআল্লাহ। আগের পর্ব যারা পাননাই কারা আমার টাইমলাইনে আসতে পারেন। ভুলত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।