চাচা আপন প্রাণ বাঁচা

চাচা আপন প্রাণ বাঁচা

-“হ্যালো !!! জানু মানু পানু। (রেগে গিয়ে) এই তোমাকে না বলেছি আমাকে মানু আর পানু নামে ডাকবে না।মানু আমার বাসার বিড়ালের নাম আর পানু আমার বাসার কুকুরের নাম।

ও আচ্ছা সরি ভুলে গিয়েছিলাম।কি কর বাবু? (পুনরায় রেগে গিয়ে) বাবু আমার ছোট ভাইয়ের নাম এটাও ভুলে গেছ? উফফ !!! আবার মিসটেক।তোমাকে খুব মিস করছি বেবি। (চিৎকার করে) বেবি আমার ছোট বোনের নাম রে ছাগল। (রেগে গিয়ে) দূর !!! তাহলে কি বলে ডাকব? পান্তা বুড়ি? (রাগ্বত স্বরে) কি বললে? কিছুনা।

আমার নাম যে বুবুন ভুলে গেছ? না ভুলিনি।এই নামে ডাকতেও ভয় হয়।কখন যেন বুবু বলে ডেকে ফেলি।যাই হোক,কি কর? এইতো খালার বাসায় যাব।তুমি? আমি ওয়াজে যাব। (অবাক হয়ে) যে ছেলেকে এক ওয়াক্ত নামাজও আজ পর্যন্ত পড়াতে পারলাম না,আজ সে কিনা যাবে ওয়াজে !!বিশ্বাস করতে পারছি না।

বিশ্বাস করতে না পারলে আমার কি করার আছে বল।মানুষ কি আর সবসময় একরকম থাকে?যাই হোক,তুমি তোমার খালার বাসায় যাও।আমিও একটু ঘুমিয়ে তারপর বের হব। ঠিক আছে আমান।সাবধানে যেও। ঘন্টাখানেক পর আমান একটি ফাস্ট ফুডের দোকানে বসে আছে। তার কিছুক্ষণ পর দুজন মেয়ে সেখানে প্রবেশ করল।এর মধ্যে একজন বোরকা,নেকাব পড়ে আছেআর একজন সালোয়ার কামিজ পড়ে আছে।

সালোয়ার কামিজ পরিহিতা মেয়েটি দেখতে খুব সুন্দর।আমান মেয়েটির দিকে বারবার তাকাচ্ছে শুধু।মেয়েটি বুঝতে পেরে একটু ইতস্তত বোধ করছে। আমান তা দেখে কিন্তু বেশ মজা পাচ্ছে।সে তখনি মনে মনে মেয়েটিকে ইম্প্রেস করার জন্য একটি দুষ্টু বুদ্ধি আঁটল।আর সাথে সাথে তার মোবাইলটি পকেট থেকে বের করল।

(অভিনয় করে) হ্যালো! হ্যাঁ আমি ডিরেক্টর আসাদ বলছি।শোন,টিভিতে নাটক করার জন্য কোনো মেয়ে সিলেক্ট করতে পেরেছিস? ধ্যাৎ! তোদের দিয়ে কিচ্ছু হবেনা।আমার এত বড় বাজেটের নাটক করার জন্য কোনো সুন্দরী,স্মার্ট নায়িকা পাব না তা কি করে হয়?আমি নিজেই নায়িকা খুঁজব।তোদের খোঁজা লাগবে না।যত্তসব অকর্মার ঢেঁকির দল। এই কথা বলে আমান যখনই মোবাইলটি তার পকেটে রাখবে,ঠিক তখনি সে খেয়াল করল বোরকা,নেকাব পড়া ভদ্রমহিলাটি তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে।

খালাম্মা কিছু বলবেন? আর সাথে সাথেই আমানের গালে ভদ্রমহিলাটি অভদ্রভাবে সজোরে থাপ্পড় বসিয়ে দিল। (গালে হাত রেখে অবাক দৃষ্টিতে) আপনি আমাকে থাপ্পড় দিলেন কেন খালাম্মা?আমি কি করেছি? আর তখনি ভদ্রমহিলাটি তার নেকাব খুলে ফেলল।আমান তো দেখে পুরোই থ।

এ যে বুবুন! তু….তু….তুমি এখানে? (রাগ্বত স্বরে) এই তোর ওয়াজ শোনা তাইনা? হারামি ! আমি তখনই বুঝতে পেরেছিলাম তুই মিথ্যে বলছিস।তাই খালার বাসায় যাওয়া বাদ দিয়ে ছোট বোনকে নিয়ে তোর বাসার সামনে দাঁড়িয়ে তোকে ফলো করছিলাম।

ছিঃ তুই এত বড় মিথ্যেবাদী আগে জানতাম না।তোর নজর এত ছোট ! আর কি বললি তখন?ডিরেক্টর? আহা! ফইকরার নেট প্যাকেজ কেনার টাকা থাকে না আবার উনি হচ্ছেন ডিরেক্টর!

আজ,এখন থেকে তোর সাথে আমার সব সম্পর্ক শেষ।আমি তোকে,তোর স্মৃতিগুলো ভুলে থাকতে পারব।কিন্তু তুই যাতে না ভুলে যাস সে ব্যবস্থাই এখন করব। এই কথা বলে বুবুনের অর্ডার করা গরম চিকেন স্যুপ আমানের মুখে ছুঁড়ে দিয়ে সেখান থেকে বুবুন আর তার ছোট বোন চলে গেল। আমান চিৎকার করে মুখে হাত দিয়ে মাটিতে গড়াগড়ি করতে থাকল আর কাঁদতে থাকল।

ফাস্টফুড দোকানের এক কর্মচারি আমানের এই অবস্থা দেখে ম্যানেজারকে সাথে সাথে বলল কারা যেন আমানের মুখে এসিড ছুঁড়ে মেরেছে।ম্যানেজার সাথে সাথে পুলিশের কাছে কল দিয়ে ব্যাপারটি জানাল। জানানোর পর আমানের মুখে তাড়াতাড়ি করে ঠান্ডা পানি ঢালতে থাকল। ফাস্টফুডের দোকান মাত্র খোলা হয়েছে বলে লোকজন কেউ আসেনি।কিন্তু আমানের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন দোকানে জড়ো হয়ে গেছে।

কিছুক্ষণ পর পুলিশ অফিসার আসল।এসে আমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করল। আপনার মুখে কি এসিড ছুঁড়ে দেয়া হয়েছে? “(অনেক কষ্টে উত্তর দিল) জ্বী না।গরম স্যুপ।”পুলিশ অফিসার কটমট দৃষ্টিতে ম্যানেজারের দিকে তাকাল।আর ম্যানেজার লজ্জা পেয়ে তার কর্মচারির দিকে জ্বলন্ত দৃষ্টিতে তাকাল। কর্মচারি ভয়ে জিহ্বায় কামড় দিয়ে মাথা নীচু করে রইল।

(আমানের দিকে তাকিয়ে) কারা এরকম কাজ করেছে আপনার সাথে আর কেনই বা করেছে? (আমতা আমতা করে) আমি তাদের চিনি না। তবে তারা মহিলা চাঁদাবাজ।আমার কাছে টাকা চেয়েছিল।আমি দিতে রাজি হইনি আর প্রতিবাদ করার কারণে আমার এই অবস্থা করেছে।”

এই কথা শুনে পুলিশ অফিসার ত অজ্ঞান।মাথায় পানি ঢেলে জ্ঞান আসার পর বলল, মহিলা চাঁদাবাজ যে আছে আজ প্রথম শুনলাম।

অবশ্য পুরুষ-মহিলার সমান অধিকার তো তাই পুরুষের পাশাপাশি মহিলা চাঁদাবাজ থাকতেই পারে।”

গল্পের বিষয়:
ফ্যান্টাসি
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত