শূন্য জগতের বাসিন্দা

শূন্য জগতের বাসিন্দা

রাতটি ছিল অমাবস্যার রাত। চারিদিকে থমথমে স্তব্ধতা। এরকম রাতে নিকটবর্তী জঙ্গলে হঠাৎ করে শেয়াল ডেকে ওঠে, অথবা ঝিঝিপোকা ক্রমাগত ডেকে যায়। কিন্তু আজ সুনসান নীরবতা,যেন তারাও জেনে গেছে আজ অশুভ কিছু এই রাতে ঘটতে চলেছে। জায়গাটি চট্টগ্রামের একটি পাহাড়ি এলাকা। ঘুটঘুটে অন্ধকার। কিন্তু তারপরেও দেখা যাচ্ছে পাহাড়ের পাদদেশে গাছগাছালির মাঝখানে একটি পরিত্যক্ত বাড়ি। যেখানে দেখা যাচ্ছে টিমটিমে একটি লণ্ঠনের আলো। দিনের বেলা এই বাড়িটির কোন অস্তিত্ব থাকে না, এমনকি শ্লোকপক্ষের রাতেও থাকে না। শুধু অমাবস্যার রাতেই এই বাড়ি দেখা যায় এবং এই বাড়িটি যারা দেখেছে পরের সকালে তাদের কোন হদিস পাওয়া যায় নি। তারা চিরকালের জন্য নিখোঁজ হয়ে যায়।

শায়লা এখন এই বাড়িটির সামনে কাঠ হয়ে দাড়িয়ে আছে। তার পরনে সাদা রঙের একটি আলখাল্লা। দূর থেকে তাকে দেখলে যে কেও আঁতকে উঠবে। কারণ দূর থেকে মনে হচ্ছে একটি ভূত দাঁড়িয়ে আছে। বাড়ির ভেতর থেকে বৃহৎ আকারের একটি মানুষ বেরিয়ে এলো। অন্ধকারে তার মুখ দেখা যাচ্ছে না। সে নিঃশব্দে হাতে একটি হারিকেন নিয়ে শায়লার দিকে এগোতে লাগলো। শায়লা লোকটিকে চিনতে পারলো। সে মফিজ। মফিজ কে? শায়লা কে? এই বাড়িটি কোথা থেকে এল? কেন শুধু অমাবস্যার রাতে এই বাড়িটি দেখা যায় এবং যারা এই বাড়িটি দেখতে পায় তারা কেন চিরদিনের জন্য নিখোঁজ হয়ে যায় জানার জন্য আগে জানতে হবে শায়লার সাথে এই বাড়ির সম্পর্ক কি এবং তার উদ্দেশ্য কি? এই বাড়িতে যারা থাকে তাদের সঙ্গে বর্তমান প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার কোন সম্পর্ক নেই। পিশাচ সিদ্ধ সাধনায় তারা লিপ্ত এবং শয়তানকে উপাসনা করার মধ্যেই তাদের সুখ, দুঃখ, জীবন ও মরণ নিহিত। যে অশরীরী শক্তির প্রতি যুগ যুগ ধরে সাধারণ মানুষ এক অমানুষিক আতঙ্কে উজ্জীবিত, সেই শক্তিতে ভরপুর এক অপদেবতাকে তারা উপাসনা করে। উপাসনার বদৌলতে অপদেবতা তাদেরকে আধিভৌতিক কিছু ক্ষমতা প্রদান করে।

শায়লা ও মফিজ দুজনই অপদেবতা উপাসনাকারী। যাদেরকে সংক্ষেপে বলা হয় প্রেত সাধক। মফিজ শায়লাকে বলল, “আসেন, আপনার জন্যই আমরা অপেক্ষা করছি। আজ আমাদের জন্য একটি বিশেষ রাত।” “কেন,আজ কি শূন্য জগতের বাসিন্দা দেখা দেবে?” জানতে চায় শায়লা। ঠিকই ধরেছেন। আজ মহামান্য শূন্য জগতের বাসিন্দা আজকের উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে হাজির হবেন। তাকে আহ্বান করার জন্য ভাল একটি মিডিয়ামের খোঁজ পেয়েছি। কিরকম মিডিয়াম?

আপনি তো জানেন শূন্য জগতের বাসিন্দার জন্য কয়েকমাসের একটি বাচ্চা চমৎকার মিডিয়াম। দুই বছরের একটি বাচ্চার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ব্যবস্থা কে করেছে?
মাহা করেছে। সে চমৎকার একটি কাজ করেছে। পাঁচদিন আগে সে করেছে কি একটা বটি। নিয়ে তার শ্বশুরবাড়ির সবাইকে হত্যা তত্যা করে তার দুই বছরের শিশুটাকে নিয়ে এখানে চলে এসেছে। বেজায় সাহস মেয়েটার।” বলেই মফিজ খ্যক খ্যক করে হাসতে লাগলো।

মাহার কথা শুনে শায়লার রীতিমত হিংসে হচ্ছে। আজ এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সবার এক স্তর করে ক্ষমতা বাড়বে। কিন্তু শুধু মাহার ৫ স্তর করে ক্ষমতা বাড়বে। মায়া তখন হাতের ইশারায় প্রত্যেক জড়বস্তুকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে পারবে, নিম্নশ্রেণি প্রাণীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। চোখের উপর চোখ রেখে সবার মনের কথা বুঝে নিতে পারবে। কিন্তু শায়লা পড়ে থাকবে তার একমাত্র নিষঠুরতার ক্ষমতা নিয়ে। সবার আগে প্রেত সাধকদের নিষঠুর হওয়ার ক্ষমতা প্রদান করা হয় যেন তারা পৃথিবীর সকল মায়া মমতা ভালবাসার বন্ধন কাটিয়ে উঠতে পারে। তারপর প্রেত সাধনায় শূন্য জগতের বাসিন্দার পরিতুষ্টির মাধ্যমে তাদের ক্ষমতা বাড়তে থাকে। এই ক্ষমতার পরিসরকে মাপার জন্য তারা বিভিন্ন স্তর আবিষ্কার করেছে।

বাড়িটিতে ঢুকে শায়লা শরীরে এক শিহরণ অনুভব করে। এক অমানুষিক ভয়ে সে কাতর হয়ে ওঠে। সে মাত্র কয়েকদিন আগে প্রেত সাধনায় যুক্ত হয়েছে। এখনও সে বাড়িটির পরিবেশের সঙ্গে খাপ খেয়ে নিতে পারে নি। আধো অন্ধকার ও আধো আলোয় সত্যিকারের অর্থেই বাড়িটি প্রেত সাধকদের বাড়ি। জায়গায় জায়গায় অন্ধকারকে আরাে একটু ঘনীভূত করে মোমবাতি জ্বলছে। বলা হয়ে থাকে শূন্য জগতের বাসিন্দা মোমবাতির আলো পছন্দ করেন। কপূরের সাথে মাংস পোড়ার একটি গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যপারটা হল শায়লা শুনতে পাচ্ছে একটু পর পর কেউ একজন গোঙানির মতো শব্দ করছে, যা একটা অনুষ্ঠান শুরু করার পর সবসময় হয়। পুরো ব্যপারটি সামলে নেওয়া একটি নতুন যুক্ত হওয়া প্রেত সাধকের জন্য খুবই কষ্টকর ও ভীতিজনক। তারপরেও শায়লা সাহস সঞ্চয় করে সামনে এগিয়ে গেল।

একটু এগোতেই শুনতে পেল অনেক মানুষের গুঞ্জন। তারমানে অনেক মানুষই এই অনুষ্ঠানে এসেছে। গুঞ্জনকে অনুসরণ করতে করতে শায়লা একটি হলঘরে পৌছালো। হলঘরে শত শত মানুষ। সবার পরনে হয়তো সাদা নয়তো কালো আলখাল্লা। যারা শায়লার মতো নতুন বা অনভিজ্ঞ প্রেত সাধক তাদের জন্য সাদা আলখাল্লা আর যারা অভিজ্ঞ প্রেত সাধক তারা কালো আলখাল্লা পড়ে আছে। হলঘরে থরে থরে চেয়ার সাজানো। ঠিক মাঝখানে একটি মানুষের খুলি এবং তার উপর একটি জবা ফুল।মানুষের খুলির চারপাশে চারজন মানুষ অজ্ঞাত কোন ভাষায় মন্ত্র জপছে।
শায়লাকে পিছন থেকে একজন ডাক দিল, শায়লা এদিকে শুনে যাও। শায়লা পিছনে তাকিয়ে দেখল তাদের লিডার জয়ারদার। হ্যা বলেন লিডার

তোমাকে একটি কাজ করতে হবে। দোতলায় চলে যাও। সেখানে মাহার বাচ্চাটাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। তাকে একটু নিয়ে আস।

শায়লা বাধ্য মেয়ের মতো দতালায় উঠে গেল। সেখানে একটি মাদুর বিছিয়ে বাচ্চাটিকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। পরম শান্তিতে বাচ্চাটি ঘুমিয়ে আছে। একটু পরই তাকে মহামান্য শূন্য জগতের বাসিন্দার জন্য উৎসর্গ করা হবে, এই কথা ভেবেই শায়লা আতঙ্কে শিউরে ওঠে।বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে শায়লা নিচে নেমে এল। ততক্ষণ অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গেছে। সবাই চেয়ারে বসে আছে। সামনে মঞ্চের মতো তৈরি করা হয়েছে। বাচ্চাটিকে জোয়ারদারের হাতে দিয়ে শায়লাও একটি চেয়ারে বসে পড়লো। মঞ্চে একজন একটি পাথরের মূর্তি বসিয়ে তার চারপাশে মশাল জ্বালিয়ে চলে গেল। মূর্তিটি দেখতে বীভৎস। হাত পা কিছু নেই। মুখের আকৃতি অনেকটা নেকড়ের মতো। চোখগুলো কোটরে ঢোকানো এবং মুখ থেকে সাপের মতো লকলকে একটি জিব বের হয় আছে।শায়লার চিনতে কষ্ট হল না, এটাই শূন্য জগতের বাসিন্দার কৃত্রিম মূর্তি। হঠাৎ করে হলঘরের আলো নিভে গেল। সবাই দেখতে পেলো জোয়ারদার মঞ্চে উঠে আসছেন। হাতে মাহার বচ্চাটি। মাহাও জোয়ারদারের পেছন পেছন মঞ্চে উঠে এলো। তার মুখ ভাবলেশহীন। এই অনুষ্ঠানের পর সে সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হবে। জোয়ারদার ভরাট কণ্ঠে বললেন,আমি সবাইকে মঞ্চে আসার জন্য আহ্বান করছি। সবাই মঞ্চের উপর উঠে আসলো। তারপর জোয়ারদার হাত দিয়ে ইঙ্গিত করতেই হলঘরের চারপাশে মশালের আগুনগুলো জ্বলে উঠলো এবং কোথাথেকে ঢোল বাজানোর শব্দ শোনা যেতে থাকলো। তারপর জোয়ারদার আবার মঞ্চের দিকে ইঙ্গিত করতেই মঞ্চের আয়তন বৃদ্ধি পেতে লাগলো। জোয়ারদার মঞ্চে উপস্থিত সবাইকে বললেন, সবাই এই মূর্তিটিকে ঘিরে গোল হয়ে বস। সবাই তাই করল। তারপর জোয়ারদার বলতে শুরু করলেন,

“আজ এই মঞ্চে উপস্থিত সকল প্রেত সাধকদের আমার ও শূন্য জগতের বাসিন্দার পক্ষ থেকে শুভেচছা। তারপর তিনি একটু থামলেন।পুরো মঞ্চে ঢোলকের শব্দ বাজছিল। হঠাৎ করে তা বন্ধ হয়ে গেল। তারপর আবার বলতে শুরু করলেন তিনি, আজ থেকে কোটি কোটি বছর আগে আমাদের এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে মাত্র একটি জগত ছিল, আর তা হল শূন্য জগত।সেই জগতের বাসিন্দারা ছিল অমর, তাদের ছিল তৈরি করার সৃজনশীলতা। তাদের কোন সীমাবদ্ধতা ছিল না। তারা একটি অদ্ভুত উপায়ে সৃষ্টি করল আলো আর এটাই ছিল তাদের সবচেয়ে বড় ভুল। (একটু বিরতির পর) সেই আলো পুরো মহাশূন্যে ছড়িয়ে পড়লো। তারপর সেই আলো থেকে এক মহান শক্তির সৃষ্টি হল। আর সেই শক্তিকেই পৃথিবীর সাধারণ মানুষ ঈশ্বর বা তাদের সৃষ্টিকর্তা বলে। ভাবতে শুরু করে। জয়ারদার আবার একটু থামলেন। শায়লার চোখে উৎসুক দৃষ্টি। সে ব্যাপারটি বুঝতে পারছে না। জয়ারদার আবার বলে উঠলেন, তারপর এই আলো থেকে তৈরি মহান সম্মিলিত শক্তি আলোর জগতে তার সৃষ্টি শুরু করল। সে সৃষ্টি করল প্রাণ। তবে প্রাণ সৃষ্টিকরণে শূন্য জগতের বাসিন্দারা সেই শক্তিকে লালন পালন করেছে। সেই শক্তি যখন নতুন সৃষ্টির। প্রেক্ষাপট তৈরি করলো তখন তারাও সহযোগিতা করেছে। কিন্তু সেই আলোর শক্তি শূন্য জগতের সঙ্গে পুরো যোগাযোগ ছিন্ন করে দিল। আলোর জগতে নতুন একটি মাত্রা তৈরি করল। নিজের জগতটার আয়তন বৃদ্ধি করতে শুরু করল। মহাশূন্য ও আলোর সৃষ্টিকর্তা যে শূন্য জগতের বাসিন্দা তা পুরপুরি অস্বীকার করল আলোর সেই মহাশক্তি। নিজের আয়তনটি সে বৃদ্ধি করেই চলল। শূন্য জগতটাকে সে ধ্বংস করার চেষ্টা করলো। কিন্তু যথাসময়ে শূন্য জগতের বাসিন্দারা আলোর জগত ও অন্ধকারের জগতের মধ্যে একটি দেয়াল তৈরি করে ফেলেছে। যার ফলে আলো শূন্যের অন্ধকারকে ভেদ করতে পারে নি। তবে আলোর জগতের প্রাণ সৃষ্টিকারী প্রথম মাত্রায় প্রাণের সঞ্চার ঘটাল। তারপর দ্বিতীয় মাত্রায় ঘটাল। তারপর তৃতীয় মাত্রায় প্রাণের সঞ্চার ঘটালে আমাদের মতো মানুষ এবং তীক্ষ বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন প্রেত সাধকের আবির্ভাব ঘটল। প্রথম ও দ্বিতীয় মাত্রার প্রাণ এই পৃথিবীতে ভূত প্রেত নামে প্রতিষ্ঠিত হতে লাগলো। জোয়ারদার আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করা মাত্রই পানির একটি গ্লাস ছুটে তার হাতে পৌছাল। তারপর ভরাট কণ্ঠে তিনি আবার বলতে শুরু করলেন,”আসলে আমি এত লম্বা বক্তৃতা দিতাম না। এমনিতেই আজ শূন্য জগতের বাসিন্দা আমাদের দেখা দিবেন, আজ আমাদের জন্য একটি বিশেষ রাত|

তারপরেও যারা নতুন তাদেরকে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টির রহস্য জানতে হবে। তাদেরকে বুঝতে হবে একজন গাদ্দার ধোঁকাবাজ কখনো প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় যে নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করে সে হতে পারে না। তিনিই এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের ঈশ্বর যিনি আলোর জগতকে সহযোগিতা করে সবচেয়ে বড় ভুল করেছেন, যিনি এই পৃথিবীর ঈশ্বরের শত্রু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত, যিনি পৃথিবীর মানুষদের কাছে শয়তান ও প্রেতদের বাদশাহ নামে পরিচিত। সৃষ্টির ইতিহাস যেন আমরা কখনো খুঁজে না পাই সে জন্য পৃথিবীর ঈশ্বর আমাদের মনে অন্ধকারের প্রতি এক আদিম ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও তার মাত্রা এই জগত ও অন্ধকারের জগতের মধ্যে এক অসীম দেয়াল তৈরি করেছে। যার ফলে আজ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে এই জগতের কোন প্রাণের যোগাযোগ সম্ভব হয়ে নি। কিন্তু শূন্য জগতের বাসিন্দার কসম আজ পৃথিবীতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়েছে। যে তৃতীয় মাত্রায় তাদের অস্তিত্ব লুপ্ত সেই মাত্রার জগতে তারা এক মাত্রা দিয়েই যোগাযোগ করতে পারছে। তারা আমাদের জানিয়েছে, এই আলোর জগতকে তারা অচিরেই ধ্বংস করে দেবে। এক্ষেত্রে তাদের আমাদের সহযোগিতা লাগবে। এই মিশন সফল হলেই আমরা প্রেত সাধকেরা অসীম শক্তি ও ক্ষমতার অধিকারী হব। আমরাও শূন্য জগতের বাসিন্দাদের মতো অমর ও অসীম সৃজনশীল হয়ে যাব। কিন্তু সাবধান, প্রেত সাধনায় লিপ্ত হলে তোমাকে সাধনা চালিয়ে যেতে হবে। শূন্য জগতের বাসিন্দাদের সন্তুষ্ট রাখতে হবে। এভাবেই তোমরা ক্ষমতার অধিকারী হবে। তুমি যদি আলোর শক্তির মতো গাদ্দারি কর তাহলে তোমাকে ফল ভোগ করতে হবে

এই বলার পর জোয়ারদার দুই হাত উপরে তুললেন। সাথে সাথে ঢলের শব্দে পুরো মঞ্চ মুখরিত হল। জয়ারদার চিৎকার করে বললেন “জয় হোক শূন্য জগতের বাসিন্দার। ধ্বংস হক যে এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্তাকে প্রেত বলে অধিষ্ঠিত করেছে। সবাই জয়ারদারের সঙ্গে গলা মিলিয়ে তিনি যা বললেন তা বলল। হঠাৎ জোয়ারদার ইশারা করা মাত্রই একটি তালোয়ার শূন্যে ভেসে ভেসে মঞ্চে হাজির হল। জোয়ারদার বললেন, “জয় হোক শূন্য জগতের বাসিন্দার। তার কাছে আলোর সৃষ্টির পবিত্রতা অমূলক। মঞ্চে উপস্থিত সবাই চিৎকার করে বলল ,জয় হোক জয় হোক। তারপর তালয়ারটি মাহার বাচ্চার গলায় কোপ বসাল। মুহূর্তে পুরো মঞ্চে আনন্দধ্বনি ও রক্তে ভরে গেল। জয়ারদার ও অন্য সবাই অপরিচিত এক ভাসায় শূন্যের প্রাণীদের ডাকতে শুরু করলো। মঞ্চের মাঝখানে খুলি থেকে হঠাৎ আগুন জ্বলতে শুরু করল। সবাই সেই আগুনটিকে ঘিরে নাচতে শুরু করল। নাচতে নাচতে সবাই সাক্রিফাইস হওয়া বাচাটির রক্ত মূর্তিটির দিকে ছুড়তে শুরু করল। এভাবে চলতে লাগলো, চলতেই লাগলো। তারপর শূন্য থেকে যাকে ডাকা হচ্ছিল সে আদৌ এসেছিল কি না, সে ব্যপারে আমি আর কিছু বলতে চাচ্ছিনা।

গল্পের বিষয়:
ফ্যান্টাসি
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত