“শুভ এই শুভ”
ঝটকা মেরে পেছনে তাকালো শুভ। বরিশাল বিভাগীয় শহরের এই এসএসসি পরীক্ষার্থী তার প্রিয় বান্ধবীর ডাক শুনলে সব ফেলে চলে আসতে বাধ্য।
-কিরে মীম তুই না বাসায় যাবি?
-আরে আমার হঠাৎ চটপটি খাইতে মন চাইতাছে।
-ও। আমার তো টাকা নাই
-আরে আমি খাওয়াবো তোকে।
-অ্যাঁ সূর্য কোন দিক থেকে উঠলো রে?!
স্কুল থেকে বেরিয়ে আসতেই তিন চারটা ছেলেকে বাইকের উপর বসে থাকতে দেখা গেলো।
-ও মনু ছেমড়ি দেখছু এক্কেরে পাকা টমেটুর লাহান।
-হ ইচ্ছা করতাছে গাছ থেইকা পাইড়া নিতে।
শুভর গা জ্বলে উঠলো।
-অ্যাই শালার বাইকার তোগোর খাইয়া দাইয়া কাজ নাই ছেমড়িগো ডিস্টার্ব করছ ক্যা রে?
-ওরে আইছে রে সিয়াইডি অপিসার। ভাগ এহান থিকা!
-শুভ প্লিজ থাম তো!
-না থাম্মু না! তোর কাছে মাফ চাইবো!!!
-ঐ পিচ্চি কি কইছত?
-আমার শক্ত আছে।
-দেইখা লমু তরে…!
কোনোমতে ঠান্ডা হয়ে মীমের মুখের দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে সহ্য করে চলে যায়।
-তুমি এমন কেনো শুভ?
-দেখো মীম এই জন্যই তো আমি তোমাকে কেউ টিজ করুক তা চাই না!
-বাট তোমার কিছু হলে আমি ঠিক থাকবো?
-ওকে কখনো আর করবো না।
-হুম।
-কিছু বলার ছিলো।
-আমি জানি।
-না, তার পরও বলবো।
-এখন না। পরীক্ষাটা শেষ হোক তারপর।
-সেদিন কি ভিন্ন সাজে আসবো?
-মানে, আমাকে গত ঈদে একটা শার্ট দিয়েছিলি ওটা আজো পরা হয়নি।
-বলিস কি? এখনো পরা হয় নি?
-হুম।
এক দৃষ্টিতে একজন আরেক জনের দিকে তাকিয়ে থাকে। চোখের ভেতর পৃথিবী দেখতে পায়।
সে তন্ময়ে ছেদ পড়ে।
“বিলটা”। ওয়েটার দিয়ে গেলো।
-শুভ বাসায় যেতে হবে রে।
-ওকে চলে যা।
মন এক পলকে খারাপ হয়ে যায় শুভর।
বাসায় তাকেও ফিরতে হবে।
রিকশাতে তুলে দিয়ে বাসায় ফেরার পর দেখলো এক অদ্ভুত কান্ড।
মাথায় হুড দেয়া কয়েকটা দেহ ধুপ ধাপ করে পড়ছে ছাদের উপর।
“হোয়াট দ্য…”
ছাদের উপর দৌড়ে যেতে গিয়ে আম্মাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে।
-কই যাস?
-ছাদে।
-এতো সন্ধ্যা বেলা। যাস না।
-কিছু একটা হইতেছে ছাদে।
দরজা খুলতেই একটা ঠান্ডা বাতাস ছুয়ে গেলো তাকে।
এরপর আর কিছু মনে নাই।
-বাবা শুভ ওঠ।
ঘোলা চোখে তাকিয়ে আছে। দেখে বেডের উপর শুয়ে আছে সে।
-আমার কি হইছেলো আম্মা?
-তোরে বেহুশ পাইছি সিড়িঘরে।
এক রত্তি সময় খোজে সে। বেরিয়ে পড়ে বাসা থেকে। হঠাৎ সামনে দেখতে পায় বাইকারকে।
-তোরে আইজকা আল্লাহর কাছে পাঠামু।
-ভাই কি করছি আমি?
-হাইইইইইইইইইই
দু হাত দিয়ে নিজেকে ঢাকার চেষ্টা করে শুভ।
হঠাৎ সামনে একটা ব্ল্যাকহোল টাইপ গর্ত তৈরি হয়ে যায়।
-এই কি এইটা কি?!!!!!!!!
-আমি নিজেই জানি না। শুভও অবাক।
-তুই কেডা? অই অই?
-আমি… আমি…
-অ্যাই ছেমড়া অ্যাই…
-আমি আঁধার মানব। শুভ বললো।
আঁধার গর্তে বাইকার ছেলেটা ঢুকেই হারিয়ে গেলো…।