ভালবাসাটা সত্যিই অন্যরকম

ভালবাসাটা সত্যিই অন্যরকম

এই যে , আপনার ফোনটা দিন তোহ।(মেয়ে)

-জ্বী, কি বললেন?

-আচ্ছা আপনাকে দেখে তো সুস্থই মনে হচ্ছে।কিন্তু আপনি
যে কানে একটু কম শুনেন তা তো জানা ছিলো নাহ।(মেয়ে)

-হোয়াট ননসেন্স! আমি কানে কম শুনবো কেন?

-তাহলে আমি যা বললাম তা আপনি কি শুনেন নাই?(মেয়ে)

-কি বলছেন আপনি?

-আপনার ফোনটা দিন।(মেয়ে)

-কেন? আমি আপনাকে ফোন দিবো কেন? আমি তো
আপনাকে চিনি নাহ।

-কিন্তু আমি আপনাকে চিনি।(মেয়ে)

-কি করে চিনেন?

-আমি আপনাকে ভালবাসি।(মেয়ে)

-কিহ?

-আচ্ছা আপনি কি সত্যিই কানে কম শুনেন? এতে কিন্তু আমার
প্রেসটিজ কমবে। আপনি দ্রুত একটা ডাক্তারের শনাপন্ন হবেন।
ওকে।(মেয়ে)

-কি যা তা বলছেন আপনি।

-আমি যা তা বলি নি । বলছি যে আমি আপনাকে ভালবাসি।(মেয়ে)

-আর আপনি আমাকে চিনেনই বা কিভাবে?

-আমি আপনাকে রোজ ফলো করি। আপনার নাম শাকিল,আপনি এবার অনার্স ৩য় বর্ষে ঢাবি তে ফিজিক্স নিয়ে পরছেন।(মেয়ে)

(এখন অবশ্য অবাক হবার পালা,গড়গড় করে একের পর এক ডিটেইলস বললো)

-আআআআপনি এত কিছু জানেন কিভাবে?

-এত কিছুই না, আরো কত কি জানি।(মেয়ে)

-কিন্তু কিভাবে জানেন?

-কারন আমি আপনাকে ভালবাসি।(মেয়ে)

-কেন ?

-আচ্ছা আমি কিন্তু অনেক আগেই আপনার ফোনটা চেয়েছি।
ফোনটা দিন এবার।(একটু ঝাড়ি দিয়ে)(মেয়ে)

(আমিও বাধ্য ছেলের মত পকেট থেকে ফোনটা বের করে
দিলাম।)

-এই নিন।

(দেখলাম কি যেনো করলো। বাট ঠিক করে খেয়াল করতে পারি নি)

-এই নিন আপনার ফোন।(মেয়ে)

-কি করলেন?

-কিছু নাহ। যান এবার, আপনার পড়ার সময় চলে যাচ্ছে।(মেয়ে)

— আমার নামটা তো আগেই জানলেন।

আমি কোথায় পড়াশোনা করি তাও জানলেন।

রাতে বাসায় এসে, ফ্রেশ হলাম।খেয়েদেয়ে শুয়ে পরলাম।
ফেসবুক ঘোরাঘুরি করছি।রাত প্রায় ১০ টা বাজে।এমন সময় হটাত
ফোন, শাকিলা নামটা ফোনের স্ক্রিনে ভেসে উঠলো।

গভীরভাবে ভাবতে ভাবতে কলটা কেটে গেলো।

আবার ফোন। এবার রিসিভ করতেই হবে।

-আসসালামুয়ালাইকুম।

-ওয়ালাইকুমুস সালাম।(শাকিলা)

-জ্বী কে বলছেন?

-কানে কম শোনার সাথে সাথে কি চোখেও কম দেখেন
নাকি।

-চোখে কম দেখবো কেন?

-তাহলে আমাকে আবার জিজ্ঞেস কেন করলেন যে আমি
কে? আমার নামটা আপনার ফোনে তো সেভ করাই ছিলো।

-ও তার মানে আপনিই সেই অপরিচিতা।

-জি। (শাকিলা)

-তা ফোন করলেন কেন?

-এমনি, ভালবাসার মানুষের খোজ খবর নিতে হবে না, তাই আরকি।

-কিসের ভালবাসা, আমি তো কিছুই বুঝি নাহ।

( এই নিয়ে সেদিন রাতে অনেক কথা হলো, মেয়েটির
নামতো অলরেডি পাবলিশড,শাকিলা এবার আমারই ভার্সিটির ১ম বর্ষের
ছাত্রী।)

আজ অনেকটা দিন হয়ে গেলো শাকিলার সাথে আমার পরিচয়,
আমি ওকে অপরিচিতাই ডাকতাম।

কিন্তু ভালবাসাই আমি বিশ্বাসি নাহ।বিশ্বাসি না বললে ভুল হবে, বিয়ের
আগে বিশ্বাসি নাহ।

জন্ম মৃত্যু বিয়ে তিন বিধাতা নিয়ে।

কার সাথে কার বিয়ে হবে তা শুধু একমাত্র আল্লাহ পাক জানেন।

এক জনের আমানতের উপর আমার কোন অধিকার থাকতে পারে
নাহ, না নেই।

আমি যে মেয়েকে ভালবাসি তাকে আদোউ পাবো কিনা তার কি
কোন নিশ্চয়তা আছে? না নেই।সে তো অন্য কারো
আমানতও হতে পারে।

তাই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে বিয়ে যাকে করবো তাকেই
ভালবাসবো।

পড়শুনা কমপ্লিট করে একটা সরকারী চাকুরী করছি।

আমার অবশ্য চাকরী না করলে কারো কোন ক্ষতি হবে নাহ।

আজ অফিস বন্ধ, কারন আজ শনিবার,সরকারি অফিস গুলোতে শনিবার
দিন কাজ বন্ধ থাকে।তাই খুব বেলা করে ঘুমাচ্ছি।

পাশের রুম থেকে হো হো হাসাহাসির আওয়াজ পাচ্ছি। তার মানে কোন মেহমান এসেছে।

ফ্রেশ হয়ে ড্রয়িং রুমে গেয়ে ১২০ ভোল্টের একটা শক খেলাম।

একি , চোখটা ভালোভাবে কচলিয়ে আবার তাকালাম।

আরে এই মেয়েটার তো সাহস কম নাহ। আমার বাসায় চলে আসছে।

আর আমার বোন , মা সবাই তো আসর জমিয়ে ফেলেছে।

আমি আবার আমার রুমে এসে বিছানায় গা টা হেলিয়ে দিলাম।

আমারও যে শাকিলাকে ভাল লাগে না তা নাহ।আমারও ওকে ভাল
লাগে।হটাত দরজায় নক।

দেখি শাকিলা আমার দিকেই আসছে।

এসেই আমার উপর চড়ে বসলো।

-কি বলছিলে তুমি, আমাকে ভালবাসতে পারবে না, তাই নাহ? এবার
দেখো ।(শাকিলা)

এই বলেই আমার রুম থেকে চলে গেলো।

আমি তো পুরো বলদ হয়ে গেলাম।চুপচাপ বসে আছি।

রাতে সাদিয়া(ছোট বোন) রুমে আসলো।

-কিরে তলে তলে এতদূর, আর আমরা কিছুই টের পেলাম নাহ।
(সাদিয়া)

-কি যাতা বলছিস। কথা না পেচিয়ে সোজাসুজি বল।

-এই আমার সাথে ন্যাকামি করবি না একদম। মেয়েটার সাথে তোর
রিলেশন আমাদের জানাস নাই কেন?

-কি বলিস, কোন মেয়ে, কার সাথে রিলেশন?

-আকাশ থেকে পরছিস মনে হচ্ছে।(সাদিয়া)

-শাকিলা আপুর সাথে যে তোর এক বছরের রিলেশন তা আমাকে
বলিস নি কেন? আর তোকে বিয়ের কথা বললেই পালাস। এবার
তোর বিয়ে দিয়েই ছাড়বো।(সাদিয়া)

-যা খুসি তাই কর।

কিছুক্ষন পর আবার আম্মুর আগমন।

-এই মেয়েটার নাম্বার দে তোহ, আমি নাম্বারটা রাখতে ভুলে গেছি।

-কোন মেয়ের নাম্বার?

-কোন মেয়ে মানে? তুই যাকে বিয়ে করবি তার নাম্বার।

-আমি আবার কাকে বয়ে করবো।

-শাকিলার নাম্বারটা দে।

-০১৭৩২৩১০৭৮৬ সব কিছু কেমন যেনো গুলিয়ে যাচ্ছে।

সামনের মাসের ২৪ তারিখ নাকি আমার বিয়ে।

এই মেয়ে আমাকে বিয়ে করেই ছাড়বে।বিয়ের দিন তারিখ
ঘনিয়ে এলো।

আজকে আমার বাসর রাত, সরি আমাদের বাসর রাত।

সব কিছু খুব থীজি স্পিডে হয়ে গেলো।

-কিরে এখানে দারিয়ে কি করছিস?(আম্মু)

-কিছু নাহ।

-যা রুমে যা, বউমা অপেক্ষা করছে।(আম্মু)

– পরিশেষে রুমের দিকে যাবার জন্য পা বারালাম।রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলাম।

এক বিরাট মাপের ঘোমটা দিয়ে খাটের উপর কে যে বসে
আছে তা বুঝা যাচ্ছে নাহ।
তাই বুঝার জন্য কাছেই যেতে হবে।

কাছে যাবার সাথে সাথে ঘোমটা খুলে যা দেখলাম, তা দেখার
জন্য প্রস্তুত ছিলাম নাহ।

আপনারা আবার অন্য কিছু মনে কইরেন নাহ যে কি দেখলাম।
দেখিছি আমার বউকে।

শাকিলা দেখতে এমনিতেই অনেক সুন্দর।

আর আজ আমার মনের আশা পুরন হলো।

এখন থেকে আমার সব ভালবাসা আমার বউয়ের জন্য।

বাসর রাতে কি কি হয় তা কম বেশি সব বয়সের মেয়ে
ছেলেদেরই কম বেশি জানা আছে।

কারন আজকাল ছেলে মেয়েরা ইচড়ে পাকা।
তাই এই কথা গুলো না বলাই ভালো।

রাতে অনেক দুষ্টমির পর। ঘুমিয়ে পরলাম।
সকাল হয়ে গেছে অনেক আগে।
কিন্তু পাশে হাত দিয়ে দেখি কেউ নেই।

তার মানে শাকিলা আরোও আগে উঠেছে।
আমি আবার বিছানায় শুয়ে পরলাম।

কিছুক্ষন পর শাকিলার আগমন।
মনে হচ্ছে গোসল করে এসেছে।
ভেজা চুল গুলো তার উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের পিঠে ঝাপটে
আছে।

পড়নে হলুদ কালারের একটা শাড়ী।

হলুদ রঙ টাতে তাকে খুব ভালোই মানায়।

জানালা খুলতে যাবে ঠিক তখনই এক টানে নিজের কাছে নিয়ে আসলাম।

-এই ছাড়ো , কেউ দেখে ফেলবে।দরজা কিন্তু খোলা।
(শাকিলা)

-না কেউ দেখবে নাহ।

-ছাড়ো বলছি, সারারাত খালি দুষ্টমি করছো, এখন আবার শুরু
করছো।

-আমার বউ, আমি যা ইচ্ছে তাই করবো।

-উফফ এত ছেলে মানুষি করো নাতো। ছাড়ো।(শাকিলা)

-ওকে, তাহলে একটা পাপ্পি দাও, তাহলে ছাড়বো, নাহলে আজ
আর ছাড়ছি না।

-ওকে দিবো, তার আগে দরজাটা চাপিয়ে দিয়ে আসি, তা না হলে
কেউ দেখে ফেলবে।

-ওকে যাও।

-হাহা। বোকা হাদারাম কোথাকার, তুমি এখন আরো বেশি করে
ঘুমাও, আমি যাচ্ছি,।

-এই এই, তুমি কিন্তু চিটিং করছো,

ফ্রেশ হয়ে অফিসে গেলাম।

আজকে নিজের টাই নিজেই বেধে ফেললাম, বউকে দিয়ে
টাই বাধালে নাকি ভালবাসা বাড়ে, কিন্তু আজ সেটা হলো নাহ।

অফিসে চলে গেলাম,

এর মাঝে অনেক কথা হয়েছে।

রাতে বাসায় ফিরে আসলাম।

পরের দিন সকালে টাই বাধার জন্য শাকিলাকে ডাক দিলাম।

-এই আমার টাইটা একটু বেধে দাও তোহ।

-এত বড় হয়েছো একটা টাই ও বাধতে পারো নাহ?(শাকিলা)

(শাকিলা আমার পায়ের উপর দাঁড়িয়ে আমার টাই বাধছে, আর আমি তার
দিকে অপলক তাকিয়ে আছি। মেয়েটির নাকের উপর বিন্দু বিন্দু
ঘাম জমছিলো। বেশ ভালোই লাগছিলো।)

-এখন কই যাবা, সোনা।
.
-এই ছাড়ো , প্লিজ।(শাকিলা)

-উহুম, আজ আর ছাড়ছি না, তোমাকে বিশ্বাস নেই, তুমি আবার
পালাবে।

তাই তার সেই গোলাপী ঠোটে এক লম্বা পাপ্পি দিয়ে দিলাম।
-আজ রাতে তুমি বাসায় আসো তার পর তোমার মজা দেখাচ্ছি।

অত-পর রোজ সকালে টাই বাধার সাথে সাথে একটা পাপ্পি ফ্রী।

– ভালবাসাটা সত্যিই অন্যরকম। ——-

গল্পের বিষয়:
ফ্যান্টাসি
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত