গোপালের পিঠে পায়েস হলে জিভে জল আসে। আজ পৌষ মাসের সংক্রান্তি। বাড়িতে পিঠে পায়েস তৈরি হচ্ছে গোপাল দেখে গেছে। গোপাল সিদিন রাজবাড়ি দিয়ে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রকে খানিকক্ষণ পরে বললে, হুজুর আমার পেটের ব্যাথাটা বড্ড বেড়েছে আজ- আমায় একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি না ফিরলে যে চলবে না। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র বললেন, তোমায় নিয়ে একটু বেড়াতে যাব ভেবেছিলুম; তা তুমি যখন বলছ তোমার পেট ব্যথা তখন বাড়ি চলে যাও। আমি অন্য কাউকে নিয়ে যাচ্ছি।
গোপালের এক হিংসুক প্রতিবেশি গোপালকে দুচক্ষে দেখতে পারত না। সে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রকে বললে, হুজুর গোপালের মোটেই পেটব্যাথা হয়নি; ওর বাড়িতে আজ পিঠে পায়েস তৈরি হয়েছে আমি দেখে এসেছি, তাই গোপাল আপনাকে পেটব্যথার ধাপ্পা দিয়ে তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে গেছে। পায়েসের লোভে ঘর পালানো হাতে নাতে ধরার জন্য মাহরাজ কিছু পরেই
চাদরে মুখ ঢেকে গোপালের বাড়িতে হাজির হলেন। মহারাজ মাঝে মাঝে গোপালের বাড়ী যেতেন। গোপাল বারান্দায় বসে তখন মনের আনন্দে পিঠে খাচ্ছিল। সামনে এক বিরাট থালায় নানা রকমের পিঠে পায়েস, গোপাল কোন দিকে নজর না দিয়েই গপাগপ খেয়েই যাচ্ছিল মনের আনন্দে।
ছদ্মবেশ খুলে গোপালকে চমকে দেওয়ার পর মহারাজ বললেন, গোপাল এ কি দাওয়াই চলছে? তুমি না পেট ব্যথার নাম করে ছুটি নিয়ে বাড়ি এলে এখন তো দেখছি দিব্যি পিঠে খাচ্ছ। এই কি তোমার পেটে ব্যথা? তুমি এমন মিথ্যে কথা বললে।
গোপাল পিঠে খেতে খেতে সেয়ানার মত হাসতে হাসতে বললে, হুজুর আমার পেট ব্যথাই হোক আর আমাশাই হোক- পিঠে খেলে পেটে সয়। মাঝে মাঝে আমার পেট ব্যথা হয় হুজুর। এ হল পিঠে খাওয়া পেট ব্যথা। পিঠে যদি আজ এসে না খেতাম তবে আজকেই অক্কা পেতাম। তা হুজুরকে এই সামান্য আয়োজনে তো আমন্ত্রন জানাতে পারি না। নিজ গুনে এসেছেন কৃপা করে আপনিও পিঠে পূজো গ্রহণ করুন, ধন্য হই আমি আমার বংশজেরা।
গল্পের বিষয়:
হাস্যরস