পিসিমা ও গোপাল

পিসিমা ও গোপাল

আমার ঠাকুরদাদার মুখে শুনেছি যে, রাজা কৃষ্ণ চন্দ্রের এক বিধবা পিসী বড় কৃপন ছিলেন। এ জন্য তার কাছ থেকে একটি পয়সাও আদায় করতে পারত না । তাই কথায় কথায় একদিন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র গোপাল ভাড়কে বলেছিল যে ‘ তুমি যদি পিসীমার পকেট হতে কিছু টাকা আদায় করতে পার তবে তোমায় বিলক্ষন পুরস্কার দিব’। গোপাল বলল ‘তার আর কি, কালই আদায় করব’। এই বলে গোপাল পিসীমার বাড়ি রওনা হল। পিসীমার বাড়ির সামনে ‘পিসীমা পিসীমা’ বলে চিৎকার কারতে শুরু করল। পিসীমা নিজেই বাইরে এলে জানালেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের কাছ থেকে আসছেন, তারপর নানা রকম কথা বলে শেষে বলল ‘ পিসীমা বড় ইচ্ছা ছিল যে একদিন তোমার প্রাসাদে থেকে যাই আর তোমার প্রসাদ পাই’। একথা শুনে পিসীমা বললেন ‘ এ আর কি কথা এখানেই আজ থেকে যাও আর আমার এখানে আমি নিজের হাতেই খাওয়াব’

 

তারপরের দিন গোপাল লুকিয়ে কিছু চিংড়ি মাছ এনে রেখে ছিল, পরে চুপি চুপি লাউ ঘন্টের সাথে মিশিয়ে দিল। কিছুখন পরে পিসীমা জিজ্ঞাসা করলেন ‘বাবা কোন তরকারীটা ভালো হয়েছে’ তখন গোপাল বলল ‘ পিসীমা লাউচিংড়িটা বড় সুন্দর হয়েছে’।

পিসীমা বললেন – ও কি কথা গোপাল! আমি বিধবা, আমি মাছ মাংস কিছু কি খাই, যে তোমাকে দেব? আমি মাছ ছুই না পর্যন্ত।

গোপাল বলল – পিসীমা! মাছ না খেলে এ চিংড়ি রাধল কে?

পিসীমা বললেন – কৈ মাছ কৈ?

গোপাল চিংড়ি মাছ দেখালো। তখন পিসীমা লজ্জায়, অপমানে ও ভয়ে বললেন – ‘ভুল চুকেই বা অমন হবে কেন? এঁকি হল’। পরে গোপালের হাত ধরে বললেন একথা যেন প্রকাশ না পায়। গোপাল তাতে কিছুতেই রাজি হয় না, পিসীমাকে কায়দায় পেয়ে খেলতে লাগলেন। কোন উপায় না দেখে পিসীমা গোপালকে কিছু টাকা দিয়ে অবশেষে কথা প্রকাশ যাতে না পায় তাতে রাজি করালেন ।

 

গোপাল টাকা পেয়ে রাজামশাকে তা দেখালেন এবং রাজামশায়ের কাছ থেকে উপযুক্ত পারিতোষিক পেয়ে খুশি মনে বাড়ি ফিরলেন।

গল্পের বিষয়:
হাস্যরস
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত