গুপ্তধন

গুপ্তধন

-আজ থেকে ১০০ বছর আগে। এই জায়গায় একটা মেয়ে গলায় ফাস দিয়ে মারা যায়। মেয়েটার নাম ছিল রুপালি। হারিয়ে যাওয়ার সাত দিন পর মেয়েটাকে ঝুলন্ত অবস্থায় খুজে পাওয়া যয়। কিন্তু মেয়েটার বাবা-মা তাকে নিয়ে দাফন করে নাই। সেই জায়গায় মাটি চাপা দিয়ে রাখছে। এই জায়গাটা তাদের ছিল। তাই তাদের জমিতেই মাটি চাপা দিছে দেখে কেউ কিছু বলতে পারে নাই। তারপর থেকে এই জায়গায় কেউ আসে না ভয়ে। কারন একজন মানুষ সাত দিন ফাঁসিতে ঝুলে থাকলে তার পরে সেই ভাবে তাকে এখানে মাটি চাপা দেয় আর মানুষ মনে করে এভাবে যদি কেউ মাটি চাপা দেয় তাহলে তার আত্মা ভুতে পরিণত হয়।
.
তার পরেও একদিন। একজন মানুষ শহর থেকে এখানে আসে তার আত্বীয়ের বাড়িতে সে জানতো না যে ঐ জায়গাটা খারাপ। ঐ জায়গার ইতিহাস কি? না জেনে সে ঐ জায়গায় যায় কিন্তু সে আর ফিরে আসে নাই ঐ জায়গায় সে মারা যায়। তার দেহে নানা ধরনের খামচির দাগ গলায় ফাঁশির চিহ্ন দেখলেই শরীরের লোম দাড়িয়ে যায় এতো ভয়ানক ভাবে তার মৃত্যু হয়। তার পর থেকে ঐ জায়গায় মানুষের চিহ্ন মুছে যেতে থাকে। কেউ আর ঐ জায়গাটার দুইশ গজের ভিতরেও ভিড়ে না। তাই আপনাদের বলছি ঐ জায়গায় বাঁচতে চাইলে ঢুইকেন না ঢুকলেই সেই মেয়েটার আত্মা আপনাদের খুন করে ফেলবে।
.
এসব কথা শুনে তো সবাই ভয় পেয়ে গেলো শুধু আমি ভয় পাইনি।কারন আত্মা বলতে কিছু নেই। কিছু পেতে হলে কিছু হারাতে হবে। তার পরেও আমি এই জায়গায় যাবো।
.
না হয় আমার জীবন টাই হারাবে আর যদি জীবন টা না হারায় তাহলে দেশের জন্য কিছু করতে পারবো।
.
আমরা চার বন্ধু। আমরা দেশের জন্য কিছু করতে চাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। তাই আমরা শহর থেকে তেলক্ষিয়া গ্রামে এসেছি। আমরা কোন এক সুত্রে জানতে পেরেছি এই গ্রামে গুপ্তধন আছে। তাই আমরা এই গ্রামটা ঘুরে ঘুরে গুপ্তধন খুজতেছি।কিন্তু আমাদের কাজ সফল হয় এবং জানতে পারি গুপ্তধন এই জায়গায়
আছে। আমরা রহস্যটা বুঝতে পেরেছি। কারন এই লোক যে কথা বলছে তার কথা গুলোও সত্যি এখানে যে যায় সে আর ফিরে না। কিন্তু এই যায়গায় যে মেয়েটা রুপালি ফাঁসি দিয়ে মারা যাওয়ার কারন টা কি এটার রহস্য আমরা খুজতেছি। সেই রহস্যটা জেনে ফেলেছি। রহস্যটা হলো।রুপালির বাবা ছিলেন এ এলাকার জমিদার তার সাতটি মেয়ে ছিলেন। কোন ছেলে সন্তান ছিলেন না। তাই সে একটা পীরের কাছে গেলো। তার পরে বললো “পীর বাবা আমার একটা ছেলে সন্তানের প্রয়োজন আমাদের জমিদার বংশে প্রদীপ জালানোর জন্য।”

তখন পীর বাবা বলেন
“তোর সাত নাম্বার মেয়েকে গলায় ফাঁসি দিয়ে সাতদিন ঝুলিয়ে রাখবি তোদের ঐ বাগান বাড়িতে। তার পরে ওটা ওখানেই মাটি চাপা দিয়ে দিবি তাহলেই তুই একটা ছেলের মুখ দেখতে পারবি তোদের বংশের প্রদীপ দেখতে পারবি।” রুপালির বাবা পীর বাবার কথা মতো তাই করলো। কিন্তু তাদের কোন ছেলে সন্তান হলো না।
.
-এটা শুধু রুপালির বাবা-মা আর তাদের পরিবার জানতো, তা ছাড়া গ্রামের সবাই জানে মেয়েটা নিজে থেকে ফাঁসি দিছে।কিন্তু না রুপালিকে মেরে তার পরে সেই বাগান বাড়িতে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে তার বাবা-মা।
.
পীর বাবা জানতো এখানে গুপ্তধন আছে। তাই সে এইরকম চাল খাটিয়েছিলো কারন ঐ খানে যদি এরকম ভুতুড়ে অবস্থা হয় তাহলে মানুষ ভয় পেয়ে আর এই বাগান বাড়িতে আসবে না। আর যদি কেউ এই আসে তাহলে তাকে খুন করলে সবাই ভাববে মেয়েটার আত্মা ভুত হয়ে খুন করেছে। সে তাই করতো কিন্তু সেও জানতো না যে এই গুপ্তধনের খবর আরেক জন জানে। সে পীর বাবা একদিন রাতে সেই গুপ্তধনের খুজে সেই বাগান বাড়িতে গেলো কিন্তু সে আর ফিরে আসে নাই তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। এসব রহস্য যেনে আমরা নিশ্চিত হলাম এখানে গুপ্তধন আছে।

তাই আমরা চার জন যেতে লাগলাম এই বাগান বাড়িতে। সত্যি কথা বলতে কি সবার ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। তার পরেও আমরা মৃত্যু কে সামনে রেখে চলছি দেশের জন্য।
.
চার পাশটা কি অন্ধকার। হঠাৎ মনে হলো পিছন থেকে কে যেনো শরীরে হাত দিলো,, ঐ কে রে।আরে আমি ভয় পাস কেন? আমার না সত্যিই ভয় করছে। আরে পাগল ভুত বলতে কিছু নেই। সবাই কে উৎসাহ দিচ্ছি আর গুপ্তধন খুজছি। হঠাৎ করে একটা সরু মতো একটা সুড়ঙ্গ পেয়ে গেলাম। সে যায়গা দিয়ে ঢুকতে কেউ সাহস পাচ্ছে না আমিও পাচ্ছি না তার পরেও ভয়ে ভয়ে ঢুকলাম মৃত্যুর দিকে। এখন দেখি ওরাও আমার পিছন পিছনে আসছে সাহসটা বেড়ে গেলো। আর তখনি কে যেনো আমাদের উপর আক্রমন করলো এ দেখি সেই লোকটা যার কাছ থেকে আমরা সব রহস্য জেনেছি।এখানে যে গুপ্তধন আছে আর পীর বাবার তার পর মেয়েটার মারা যাওয়ার কারন সব এই লোকটার কাছে জানতে পেরেছি।

-পরে আমরা তাকে ধরে ফেলি। কারন আমরা চার জন আর সে একা। পরে লোকটা বলে আমি তোমাদের ক্ষতি করতে আসি নাই আমি এসেছি তোমাকে
সাহায্য করতে। সারা জীবন তো মানুষ কে কষ্ট দিয়ে আসলাম। মানুষের সাথে সব সময় মিথ্যা কথা বলে জোর জুলুম করে জমি খেয়েছি। কিন্তু তোমাদের ব্যবহার দেখে আমার চোখ খুলে গেছে। এতো কিছু জানার পরেও মৃত্যুকে ভয় না করে দেশের জন্য কিছু করতেছো জীবন বাজি রেখে। তাই আমি তোমাদের সাথে দেশের জন্য কিছু করতে চাই।
.
– সে তার নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে এজন্য আমরা তাকে ছেড়ে দিলাম। তার পরে আমাদের সাথে তাকে যোগ করলাম।তার পরে সেই সুরঙ্গের ভিতর দিয়ে ঢুকতে লাগলাম। কি অন্ধকার হাতে লাইট ছিল সেইটা জ্বালিয়ে খুজছি গুপ্তধন কিন্তু পাচ্ছি না। অনেক খুজা খুজি করলাম কিন্তু পেলাম না সবাই হতাস হয়ে গেলাম। আর তখনি সেই লোকটা বলে আমার পিছন পিছনে আসো আমরা সবাই গেলাম তার পিছনে।অনেক দুর যাওয়ার পর সে আরেকটা সুরঙ্গ পাই আমরা সেই সুরঙ্গ দিয়ে
ঢুকেই অবাক হয়ে গেলাম। এখানে আর কোন অন্ধকার নাই মনিমুক্তা, হিরা,এসব ঝিলিক দিচ্ছে। আমরা তো সবাই খুশি আমাদের কাজ সফল হয়েছে। পরে আমরা সেই গুপ্তধন ওখান থেকে নিয়ে আসি। কিন্তু বাংলাদের সরকার কে দিতে পারি না। কারন আমরা যখন ঐ যায়গা থেকে বের হয়ে দেখি বাগান বাড়িতে মানুষের অভাব নাই সব গুলো মানুষ এক জুট যে তারা এই গুপ্তধন সবাই মিলে ভাগ করে নিবে। আমরা বাধা দিলে তারা সবাই আমাদের উপর এসে সেই গুপ্তধন গুলো নিয়ে যায়। তার পরে আমরা বলি। এটা নিয়ে আমরা পুলিশের কাছে কেস করবো। আর তখনি পুলিশ এসে এগুলো নিয়ে যাবে।
.
গ্রামবাসী সেই চারজনকে আস্ত রাখেনি……
সবাই মিলে চার জন কে মেরে ফেলে। তাদের মেরে সেই বাগান বাড়িতে ফেলে দিয়ে গুপ্তধন নিয়ে গ্রামবাসী চলে গেলো।
.
———–সমাপ্ত————

গল্পের বিষয়:
হাস্যরস
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত