এক রাজ্যে বাস করতেন এক রাজা।রাজার ছিল নয়জন রাণী আর তিন কন্যা সন্তান।একদিন রাজা তার তিন মেয়েকে ডেকে পাঠালেন।
রাজা তিন কন্যাকে জিজ্ঞেস করলেন তিন কন্যা তাকে কীরকম ভালোবাসে।
বড় মেয়ে বলল,”বাবা,আমি তোমাকে মধুর মত ভালোবাসি”।
রাজা শুনে খুব খুশি হলেন।
দ্বিতীয় মেয়ে বলল,”বাবা,আমি তোমাকে চিনির মত ভালোবাসি”।
রাজা শুনে খুশি হলেন।
ছোট মেয়ে বলল,”বাবা,আমি তোমাকে ফেসবুকের মত ভালোবাসি”।
রাজা শুনে খুব দুঃখ পেলেন।
কিছুদিন পর রাজা তার বড় দুই মেয়েকে দুই রাজপুত্রের সাথে বিয়ে দিলেন, আর ছোট মেয়েকে শহরে নির্বাসনে পাঠালেন।
ছোট মেয়ে মনে দুঃখ নিয়ে শহরে পাড়ি দিল।শহরে গিয়ে ছোট মেয়ে একটা আইফোন কিনল।আইফোন দিয়ে সে একটা ফেসবুক আইডি খুলল।ফেসবুকে তার সাথে প্রিন্স জামাল নামের এক ছেলের সাথে পরিচয় হয়।তাদের মধ্যে প্রেম হয়।তারা মাঝেমধ্যে পার্কে বেড়াতে যায়।একদিন তারা বিয়ে করে ফেলে।
ঐদিকে গ্রামে থাকতে থাকতে রাজামশাইয় বোর হচ্ছিলেন।তিনি চিন্তা করলেন অবকাশ যাপন করতে শহরে যাবেন।রাজা মশাই উনার সেক্রেটারিকে ডেকে সবকিছু তৈরি করতে বললেন।
পরদিন সকালে রাজা মশাই সেক্রেটারি আর দুইশো লোকলস্কর নিয়ে অবকাশ যাপন করতে শহরের দিকে রওয়ানা দিলেন।
শহরে পৌঁছে রাজা থাকার জন্য একটা ফাইভ স্টার হোটেলে উঠলেন।রাজার সাথে লোকজন বেশি থাকায় হোটেল রুম খালি পেলেন না।তাই রাজা মশাই বাসা ভাড়া নেওয়ার চিন্তা করলেন।এখানেও দেখা দিল বিপত্তি।
রাজা অবকাশ যাপন করতে শহরে এসেছেন কিন্তু সাথে করে নয় রাণীর মধ্যে কাউকে সাথে আনেন নি।তাই বাড়ির মালিক রাজাকে ব্যাচেলর মনে করে বাড়ি বাড়া দিতে রাজি হয় নি।
থাকার জন্য হোটেলে রুম আর বাসা ভাড়া না পেয়ে রাজা মশাই ডিপ্রেশনে চলে গেলেন।নয় রাণীর কেউ সাথে না থাকায় রাজা কারো সাথে নিজের ডিপ্রেশনের কথা শেয়ার করতে পেরে আরও ডিপ্রেশনে চলে গেলেন।
ডিপ্রেশন দূর করতে রাজা মশাই জিন্সের পকেট থেকে নিজের নতুন আইফোন বের করে ফেসবুকে লগইন করলেন।তার পর একটা পোস্ট করলে,
“Feeling sad”
“আজ বউ সাথে না থাকায় বাসা ভাড়া পেলাম না।”
এইদিকে,রাজার ছোট মেয়ে বিছানায় শুয়ে শুয়ে ফেসবুকের নিউজফিড চেক করছিল।হঠাৎ একটা পোস্ট দেখে ছোট মেয়ের মন খারাপ হয়ে গেল।কারণ পোস্টে লেখা ছিল ডিজনি এই বছর মার্ভেলের একটাও মুভি আর সিরিজ রিলিজ দেবে না।
মনখারাপ করে ছোট মেয়ে আবার নিউজফিডে ঘুরতে শুরু করল।একটা পোস্ট পড়ে ছোট মেয়ের চোখে ঝলঝল করে পানি চলে আসল।সে সাথে সাথে পোস্ট যেখান থেকে করা হয়েছে সেখানের লোকেশন বের করল।তারপর নিজের গাড়িতে করে লোকেশনে পৌঁছাল।
রাজামশাই বাসা ভাড়া না পেয়ে কপালে হাত দিয়ে ফুটপাতে বসেছিল।আর আফসোস করছিলেন অবকাশ যাপন করতে কেন শহরে আসলেন।
এমন সময় একটা মেয়ে কন্ঠে রাজা মশাই “বাবা” ডাক শুনলেন। ডাক শুনে রাজা মশাই মাথা তুলে তাকিয়ে দেখলেন, তার সামনে ছোট মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে,যাকে তিনি কয়েক বছর আগে শহরে নির্বাসনে পাঠিয়েছিলেন।
ছোট মেয়ের বাসায় ভূরিভোজন করে রাজা মশাই নাকে তেল দিয়ে এক ঘুম দিলেন।ঘুম থেকে উঠে রাজা ফেসবুক নিয়ে কিছুক্ষণ চিন্তা করে ছোট মেয়েকে ডেকে পাঠালেন।তিনি ছোট মেয়ের কাছে নিজের ভুল বুঝতে পারলেন এবং ছোট মেয়েকে আবার আপন করে নিলেন।
শহরে অবকাশ শেষ করে রাজা মশাই ছোট মেয়ে আর ছোট মেয়ের জামাইকে নিয়ে নিজের রাজ্যে চলে গেলেন।
রাজ্যে ফিরে রাজা মশাই একটা ফেসবুক বিশ্ববিদ্যালয় খুললেন।রাজা ছোট মেয়েকে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিলেন এবং নিজের নয় রাণী আর তিন কন্যা নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস শুরু করলেন।