সোহেল রানা কলেজের সবচেয়ে হ্যান্ডসাম ছেলে পড়ালেখায় ও যেমন ভাল খেলাধুলাতেও সবার আগে।
কলেজের অধিকাংশ মেয়েরাই রানার প্রেমে পাগল।এদিকে কলেজের এক সুন্দরি মেয়েও তার প্রেমে পাগল।
মেয়েটির নাম ইভা।সেও মোটামুটি পড়ালেখায় ভাল।সে হটাত কয়েকমাস হল কলেজে ভর্তি হয়েছে।
সে কলেজে পুরাটা ক্লাস যুরে রানার দিকে তাকিয়ে থাকত।রানার উপর যেন তার একটা অজানা মোহ কাজ করতে শুরু করেছে।
ইভা জিবনেও কল্পনা করতে পারে নাই যে সে প্রেমে পরবে।কারন সে বরাবরই প্রেমের বিপক্ষে।
কিন্তু রানার মাঝে তার একটি অন্য রকম ফিলিংস কাজ করে সবসময়ই।কিন্তু রানা কখনই কোন মেয়েকে পাত্তা দেয় নাই।
অহংকার এর কারনে নয় তার লক্ষ ঠিক রাখার জন্য।রানার কাছে একমাত্র লক্ষ তার মা বাবার কষ্ট দুর করে নিজের পায়ে নিজে দারানো।
ইদানিং ইভা রানার সাথে সবসময়ই কথা বলার চেষ্টা করে।রানা বরাবরের মতই এরিয়ে যায় কিন্তু
সে বুঝতে পারে মেয়েটার প্রতি এক অদ্ভুদ টানের জন্ম হয়েছে
.
নাহ!!তার দুর্বল হলে চলবে না।তার মা বাবার শেবা করার একটা সুযোগ ও হাত ছাড়া করা চলবে না।
যে বাবা এত কষ্ট করে নিজে না খাইয়ে তার ছেলে কে খাইয়েছে।আজ তার অসুখের সময়ে সে প্রেম করে সময় নষ্ট করবে না।
তাই রানা ঠিক করল যে সে ইভার সাথে আর কোনদিন কথা বলবে না।কিন্তু ইভা তার সাথে সবসময়ই যেচে কথা বলতে আসত।
একসময় এমন হল যে সে ইভার কথা না শুনলে দিনটা খারাপ কাটত।রানার বুঝতে বাকি রইল না যে সে প্রেমে পরেছে।
কিন্তু সে কি করবে বুঝতে পারছিল না।তখন সে চিন্তা করল যে আপাতত মেয়েটার সাথে ফ্রেন্ডশিপ করা যাক।
শুধু দিনে একবার কথা বলতে পারলেই যথেষ্ট।আগে নিজের পায়ে দারাক,মা বাবার ইচ্ছাগুলি পুরন হোক তারপর সে ইভাকে তার মনের কথা বলবে।
তাই সে তার পরের দিন কলেজে ইভার সাথে ফ্রেন্ডশিপ পাতায় নেয়।কিন্তু ইভার কাছে শুধুমাত্র ফ্রেন্ডশিপ যথেষ্ট ছিল না।তাই ইভা রানা কে বলল
ইভা:-রানা আমার বেস্ট ফ্রেন্ড তুমি।জান আমি যেটা পৃথিবীর কারো কাছে প্রকাশ করি না সেটাও তোমার কাছে বলি।
যান আমার বান্ধবিরা বলে যে এটাকে ভালবাসা বলে।তোমার কি মনে হয়
সোহেল রানা:-যত্তসব ফালতু কথা।(মনে অনেকটা খুশি কারন সে এখনও বুঝতে পারছে না)এর মানে আমরা দুজনই
ইভা:-মানে!!আমরা দুজন বলতে
রানা:-আমরা দুজন বেস্ট ফ্রেন্ড।আর বেস্ট ফ্রেন্ডরাই সুখেদুঃখের অংশীদার হয়ে থাকে।এজন্যই তো তাদের বেস্ট ফ্রেন্ড বলা হয়ে থাকে
ইভা:-হুম।বেস্ট ফ্রেন্ড ফরেভার(অনেক দুঃখ নিয়ে মনের মধ্যো)
ইভা বুঝতে পারছেনা যে ছেলে সবকিছুতে এত শ্মার্ট আর সে এইটুকুই বুঝতে পারছে না।সে বুঝতে পারল যে সে তাকে একদম ভালবাসে না।
তাই চিন্তা করল তার সামনে আর আসবে না।
.
.
এদিকে রানা তাকে ১ সপ্তাহ না দেখতে পেয়ে পাগল প্রায়।একদিন কলেজে তার খোজ নিতে যায়।কিন্তু অদ্ভুদ ভাবে
ওই কলেজে মেয়েটার কোন নিশানা নাই।তাও সে তার সন্ধান করতে লাগে।
তার একমাত্র বান্ধবি সোভা।কলেজে নতুন বলে বান্ধবী সং্খা কম ছিল।তো শোভার কাছে যানতে পারে যে সে প্রায় জংগলে এক গাছের
নিচে বসে বই পড়ে।সে দেরি না করে বিকালে যায় সে জংগলে ও খুজতে খুজতে একসময় পেয়েই যায়।কিন্তু তখন ইভা
তার বাবা পরিদের সর্দার এর সাথে কথা বলছিল।
.
.
আসলে ইভা কোন সাধারন মেয়ে নয়।পরি জগতের রানী সে।কিন্তু একদিন রানাকে সেই জংগলে খেলতে দেখে যেখানে
সে প্রাই যাতায়াত করত।প্রথম দেখাতেই তাকে ভাল লেগে যায়।কিন্তু সে কোনদিন প্রেমে পরবে তাও আবার কোন মানুষের সাথে
সেটা ভাবতেই পারে নি।তার কথা বার্থা সব ইভার ভাল লাগতে থাকে।তাই সে পাতালে আসে ও একই কলেজে ভর্তি হয়।
এবার আগের কথায় ফিরে আসা যাক।রানা জংগলে গিয়েছে ইভা কে খুজতে।শেষে খুজে পায়।কিন্তু রানা যা দেখল সেটা দেখার জন্য সে প্রস্তুত ছিল না
রানা দেখল ইভা মাটি হতে চার ফুট উপরে ভাসছে আর কি যেন বলছে।এই দৃশ্য দেখার রানা অজ্ঞান হয়ে গেল।
কিন্তু জ্ঞান ফিরতেই সে ভয়ে চিতকার দিয়ে বিছানা ছেরে উঠল।উঠে দেখে রাত ৩ টা বাজে ঘরিতে।পরিবারের সবাই চিতকারে চলে আসল।
.
মা:-কি হয়েছে তোর
বাবা:-কি হয়েছে বাপ আমার চিতকার করলা কেন।খারাপ স্বপ্ন দেখেছ নিশ্চই।এজন্যই বলি ভয়ংকর ছিনেমা না দেখতে
শোভা:-ঠিক বলেছ আব্বু মনে হয় কোন পেত্নির স্বপ্ন দেখেছে নিশ্চই
রানা:-না বাবা আমি ঠিক আছি।হাল্কা খারাপ স্বপ্ন দেখেছি।যাও খুব ক্লান্তি লাগছে।
.
সবাই যে যার রুমে চলে গেল ঘুমানোর উদ্দেশ্য।কিন্তু রানার চোখে এক ফোটাও ঘুম আসছে না।সে যা এতক্ষন দেখল তার সবটাই কি স্বপ্ন ছিল।
না কাল একবার ইভার সাথে দেখা না করলে চলবে না।এদিকে রানা ছোটবেলা থেকে ভিতু।ভুতের ভয় পায় প্রচুর।
ভাবতেও কষ্ট হতে পারে কিন্তু সত্যো এই যে ছেলে সব দিক দিয়ে স্মার্ট সে ভুতে বিশ্বাস করে।এসব ব্যাপার আধুনিক যুগে না
চললেও তার মনে প্রচন্ড ভয়ের উদ্যোগ আনে।মুলত এ কারনেই সারারাত সে ঘুমাতে পারে নাই। এদিকে ইভাও অনেক ভয় পাচ্ছে।
প্রথম ভালবাসা হারানোর ভয়ে।এদিকে।পরীদের দেশে খবটা জানাজানি হয়ে গেছে।তাদের রাজার মেয়ে এক সাধারন মানুষের
প্রেমে পরেছে এটা সবার কাছে এক অদ্ভুদ ব্যাপার।তার মা বাবা সবাই তাকে হাজার বোঝানোর পরেও বুঝতে চাইল না ইভা।সে শুধু রানাকেই ভালবাসে।
.
.
পরীদেশের বাদশা:-তোর জন্য সবচেয়ে সুন্দর ও শুদর্ষন জ্বীন কে তোর বর হিসাবে নিয়ে আসব।যে কিনা তোকে সারাজীবন সুখে রাখবে
ইভা:-না বাবা না আমি শুধু রানাকেই ভালবাসি।আমি মানুষের মাঝে নিজেকে সামাল দিতে পারবানি।তোমার মেয়ে আমি।
তাই সব কিছুই পারব(বাংলা ছিনেমার কিছু ডায়লগ বলে গেল)
শেষমেষ তার মেয়েকে বোঝাতে না পেরে তার একমাত্র মেয়ের কাছে হার স্বিকার করল।ইভা অনেক খুশি।
কারন বাংলা ছিনেমার মত আর পথে বাবা এসে দারাবে না।কিন্তু ইভার হাল্কা ভয় লাগল।সে কিভবে রানাকে সব কিছু খুলে বলবে যে সে মানুষ নয়।
সে তখন আবার কলেজে গেল।রানা তাকে অনেখ দিন পর দেখতে পেয়ে আবেগ আর চেপে রাখতে পারল না।
নির্লজ্জের মত ইভাকে জরিয়ে ধরে ভালবাসার কথা বলে দিল।এদিকে ইভার আজকে সবচেয়ে খুশির দিন।সে সাথে সাথে রাজি হয়ে গেল।
এদিকে রানা যে কম খুশি সেটা নয়।দুজনেই খুশিতে এক অন্য জগতে হারিয়ে গেল।
.
.
প্রতিদিন তারা সাধরন কাপলস দের মত আলাপ,ঘোরাফেরা ইতাদি করতে লাগল।ইভার আত্তা যেন রানার সাথে মিশে যেতে চাইল।
এমন অবস্থা হল যেন তারা একে অপরকে ছারা নিশ্বাস ও নিতে পারবে না।রানা অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকালেই অগ্নিশিখা
চোখ নিয়ে তাকিয়ে থাকত ইভা।ইভার রাগি মুখটা রানা পাগল করে দিত।তাই রানা প্রায় ইভা রাগানোর পথ খুজে বেরাত।
একদিন তো রানা তার বেস্ট ফ্রেন্ড নুর ইসলামকেই মেয়ে সাজিয়ে নিয়ে প্রেম করছিল।ইভা প্রথমে রাগ হলেও পরে বুঝতে
পেরে লজ্জা পায়।রান একদিন তাকে একটি সুন্দর ড্রেস কিনে দেয় ইভাকে
ইভা:-তুমি এসব কিনতে গেলে কেন।তোমার অর্থ সমস্যার পরেও কেন এগুলা কর
রানা:-কেন তোমার পছন্দ হয় নাই
ইভা:-হয়েছে।কিন্তু এর থেকে যদি তুমি নিজের জন্য একটি জামা কিনতে আমার হাজার গুন বেশি খুশি হতাম।আর হ্যা
এভাবে টিউশুনির সব টাকা শেষ করলে তোমার পরে কিভাবে চলবে
রানা:-ও আমি ম্যানেজ করে নিব
ইভা:-এ নাও একটি সোনার হার দিলাম।এটা বিক্রি করে বাবা-মা ও নিজের স্বপ্ন পুরন কর
রানা:-না আমি এটা নিতে পারব না
ইভা রানাকে অনেক বুঝাল ও বলল ধার হিসাবে নিতে।পরে তার বাবা মার কথা চিন্তা করে রাজি হয়ে গেল।এভাবেই চলতে লাগল তাদের দুষ্টু মিষ্টি ভালবাসা।
.
.
কিন্তু হটাত রানা কেমন যেন হয়ে উঠল।ইভার সাথে দেখা করে না।ইভা কে দেখলে ভয়ে সেখান থেকে চলে যায়।
ইভা বুঝে উঠতে পারে না যে ভালবাসা থেকে হটাত ভয়ের জন্ম হল কিভাবে।সে এটার রহস্য বের করতে নিজের রাজ্যো ফিরে গেল
নিজের রাজ্যো ফিরে এসে ইভা খাওয়া দাওয়া সব ত্যাগ করে দিল।সবসময়ই মনের মধ্যো এক বিষন্নতা কাজ করে চলেছে।
তার সবসময় রানার কথা মনে পরে।কিন্তু রানার ভয়ের কারন সে হতে চায় না।সে পরীর দেশের রাজার মেয়ে একথাটাকি রানা বুঝতে পেরে গেছে।
নাহ আর কিছু মাথায় আসছে না।এবার যাইহোক সে খুজে বার করবেই ব্যাপারটা কি।
এদিকে সোহেল রানা ও ঠিক মত খাবার খাচ্ছে না বাড়ি হতে বের হচ্ছে না।এর কারন ভয়।রানা সবসময়েই ভয়ে ভয়ে চলে
এমনকি ঠিকমত কলেজেও যাচ্ছে না।ঘরের কাউকে সে কিছু বলছেও না।সবাই চিন্তায় পরে যায়।একদিন পরিবারের সবাই
এসে রানাকে এর কারন জিজ্ঞাসা করে
মা:-কি হয়েছে তোর বাবা।আমাকে বল তুই এরকম কেন করছিস।কোন সমস্যা থাকলে পরিবারের কাছ থেকে লুকাস না
রানা:-মা শুধু শুধু টেনশন করছ এমন কিছু নয়
বাবা:-কিছু না তবে খাওয়া দাওয়ায় অবহেলা দিচ্ছিস কেন?কেনই বা বাসা থেকে বের হচ্ছিস না।যে ছেলে কলেজে না
গিয়ে থাকতে পারে না সে আজ ৮ দিন কলেজে যায় নি।বন্ধুরা এসে ফিরে গেছে তাও বাইরে যাচ্ছিস না।আর সবসময়
এক উদাস ভাব স্পষ্ট দেখা যায় তোর চেহারায় বল বাপ কি হয়েছে তোর
রানা:-ওহ কোন কিছু নয়।কি বলব বাবা কিছুদিন যাবত অলস হয়ে পরেছি।আলসামির ভুত চেপেছে মনে হয়।টেনশন নিও না
কাল হতে আবার তোমারা তোমাদের পুরান রানাকেই পাবে
বাবা:-তাই যেন হয়।তোর চিন্তায় আমি আর তোর মা অস্থির হয়ে গিয়েছি
মা:-শুয়ে পর বাবা রাত অনেক হয়েছে।কাল কলেজ আছে আর আমি কলেজে তোর ছুটির আবেদন করেছি।তাই ঘুমিয়ে পর
রানা:-আচ্ছা আম্মু
.
.
রানা তার মা-বাবা কাউকেই কিচ্ছু জানায় নেই।তার এসবের কারন আলসামি মোটেই নয় বরং তাদেরকে হারানোর ভয় কাজ করছে।
এই ভয় আজকের নয় প্রায় ১০-১৫ দিন আগে এক অন্ধকার রাতে রানা বাসায় ফিরে আসছিল।রানা তার এক বন্ধুর বাসায় নোট নিতে গিয়েছিল।
ফিরতে গভীর রাত হয়ে যায়।রাত তখন ১২ টা বাজে।রানা এমনিতেই ভিতু তার উপর চুপচাপ এলাকা।
৪ কিলোমিটার পর্জন্ত কারো পায়ের জুতা পর্জন্ত নেই।রাত্রে সেই ফ্রেন্ডস দের বাসায় থাকার প্লান ছিল কিন্তু তাদের
বাসায় মেহমান থাকায় অগত্যা কিছুই বলা হল না।আর প্রেস্টিজ হারানোর ভয়ে এগিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব টাও নিল না।
একটা মুচকি হাশি দিয়ে চলে আসল।রানার বাসা থেকে তার সেই ফ্রেন্ডের বাসা ২ কিলো।
একা একা রাস্তায় হাটছে এর মধ্যো দেখল রাস্তার ধারে এক মহিলার লাশ পরে আছে।কি করবে বুঝে উঠতে পারছিল না।
দৌর দিবে এমন সময় তার মনে হল এই মহিলাকে সে চেনে।না একবার মুখ দেখলে সমস্যা নেই।কিন্তু সে যখন
মহিলাটির মুখ দেখল তার মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পরল।চারদিকে অন্ধকার ছেয়ে গেল।মহিলাটি আর কেউ না তার মা।
অনেক কাদতে ইচ্ছা হলল কিন্তু তার হৃদয় স্তব্ধ হয়ে গেল।মাকে সামাল দিতে গিয়ে দেখে কিছুদুর তার বোন
আর বাবার প্রানহীন শরীর পরে আছে।সে বুঝে উঠতে পারছিল না যে তার সাথে কি হচ্ছে।ঠিক এমন সময় এক ভয়ংকর
রুপি দানব তার সামনে এসে হাজির হল।আর হটাত করেই রানার পরিবারের সব সদস্যদের লাশ গায়েব হয়ে গেল।রানার
মনে তখন ভয়ের বদলে বদলা নেয়ার নেশা উঠে গেল।যদি নিজের প্রান চলে যায় তাও কোন সমস্যা নেই।
.
.
এদিকে সেই দানব টি তার দিকে আসতে থাকে।রানা চিতকার দিয়ে ওঠে।তার গর্জনে যেন বাড়ি কেপে উঠল
রানা:-কেন আমার পরিবারের লোকজনকে মেরেছ কি ক্ষতি করেছিল তারা
দানব :-ভয় পেয়ে গেছ।আমি তোমার পরিবারকে মারি নেই।তবে নমুনা দিলাম যদি কথা না শোন তাহলে মেরে ফেলব
রানার মনে তখন হাল্কা শান্তি পেল যে তার মা বাবা বেচে আছে
রানা:-কি কথা
দানব:-ইভার কাছ থেকে দুরে থাক।ইভার ধারেকাছে আসলেই আমি তোমার পরিবারের কাউকে বাচতে দেব না।মনে রেখ কথাটা
এই বলে দানবটি উধাও হয়ে গেল।এদিকে রানার মনে হাজার প্রশ্ন কাজ করছে।ইভা কে আর তার এই ভয়ংকর
দানবটার সাথেই বা কিসের সম্পর্ক।কিন্তু এখন এসব ভাবার সময় তার হাতে নেই।এক দৌড়ে বাসায় পৌছে যায়।মা-বাবা আর
বোনটাকে দেখতে পেয়ে তার জান ফিরে আসে।জরিয়ে ধরে কাদতে ইচ্ছা করে কিন্তু তাদের কিছুই না জানিয়ে রুমে গিয়ে শুয়ে পরে।
আর তখন থেকে পরিবারের ক্ষতির কথা ভেবে প্রেমের কোরবানি করে।
.
রানা পরেরদিন থেকে স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করে আগের মতই সাধারন ভাবে চলতে শুরু করে।
কারন রানা তার মা-বাবাকে চিন্তার মুখে ফেলে দিতে রাজি নয়।কিন্তু হটাতই ইভার সাথে দেখা হয়।এবার ইভা
তাকে সত্য কথা না বললে কিছুতেই যেতে দিবে না।
ইভা:-রানা তুমি এরকম কেন করছ।আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি।তাই তোমার অবহেলা আমাকে তিল তিল করে মারছে।
আজকে তুমি আমাকে এর কারন না বলে কিছুতেই যেতে পার না।বলতেই হবে আজ
রানা:-দেখ আমি এই মুহুর্তে তোমাকে কিছুই বলতে পারব না।আর চলে যাও এখান থেকে তারাতারি।
ইভা:-তুমি কেন এসব করছ কি দোস করেছি আমি।(কাদো কাদো কন্ঠে)
রানা:-এখন সময় নেই আমার আমি যাই
আর কিছুক্ষন থাকলে হয়ত রানা কেদেই ফেলত।ইভা চলে যাবে সেই মুহুর্তে রানার কান্নার আওয়াজ পেল।দুর।থেকে শুনতে পেল রানা বলছে
:-আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি।কিন্তু দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দাও।আমি যে আমার মা-বাবাকে হারাতে পারব না।
এ কথা বলে অনেক কাদতে থাকে।ইভা তখন আবার নিজ রাজ্যো ফিরে যায় এর রহস্য বের করতে।এদিকে রানার অদ্ভুদ রকমের জ্বর আসে।
কোন ডাক্তারই এ রোগের কথা জানতে পারল না।অনেক রকম পরিক্ষা আর বিখ্যাত ডাক্তার দেখায়েও কোন লাভ হল না।
রানা বুঝতে পারল যে তার দিন শেষ।সে কিছুদিন এই পৃথিবীকে শেষ দেখা দেখতে চাইল।
.
.
এদিকে ইভা অসুখের খবর জানতে পেয়ে তার জাদু দিয়ে অনেক কষ্টে ঔষধ বানালো।এবং ডাক্তার সেজে তাকে পরম যত্নে খাইয়ে দিল।
রানা আচমকা ঠিক হয়ে গেল এবং রানার জীবন বাচানোর জন্য মেয়েটির উপর তার বাবা-মা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল।
ইভা তখন রাজ্যো ফিরে তার বাবার সাহাজ্যো জানতে পারল যে এই কাজ টা জীন জগতের এক জীনের কাজ যে তাকে
আগে অনেক ভালবাসতো।কিন্তু ইভা তাকে পাত্তা দিত না।তাও জীন টি তাকে সমানে ভালবেসে গিয়েছে কিন্তু যখন
সে ইভার সাথে অন্য একজনকে দেখেছে রাগে তখন ফেটে পরেছে।একজন সাধারন মানুষ তার ইভাকে ভালবাসে এটা
কিছুতেই মানা যাবে না।তাই সে এ কান্ডটি করেছে।এ কথা জানার পরেই কাউকে কিছু না বলেই ইভা চলে যায় সে জীনের কাছে।
রাগে সে।আক্রমন করে কিন্তু শক্তিশালি জীন ইভাকে পরাস্থ করে আর তাকে নিজ রজ্যো এক গুহায় বন্দি করে ফেলে
সোহেল রানার মনে কেমন যেন কু ডাক গাইতে থাকে।ইদানিং স্বপ্নে সে ইভার চিতকার শুনতে পায়।
সেই জ্বীন সেই গুহা এবং গুহার মধ্যো বন্দি ইভাকে।আবার ইদানিং কলেজেও ইভাকে না দেখতে পেয়ে তার মন খারাপ হতে লাগল।
একদিকে ভালই হয়েছে মেয়েটার কারনে যা ঝামেলা হয়েছিল সব মিটে গেছে।কিন্তু ইভাকে যে সে ভালবাসে।প্রচুর ভালবাসে।
আবার সেই জীন তার কিছু ক্ষতি করল না তো যে তার মা ও বাবাকে মারার হুমকি দিয়েছে।না মাথা কাজ করছে না।
খুব মন ছটফট করছে ইভাকে দেখার জন্য।মেয়েটিকে ওভাবে বলা উচিত ছিল না।রানা আবার হয়রানিতে ভুগলেও বাড়িরয় কাউকে
সে বুঝতে দিল না ব্যাপার টা।কিন্তু তার এই মানষিক টেনশন দুর করতে ইভার সন্ধানে চলে গেল ফারিয়ার বাসায়।ফারিয়া ইভার
ফ্রেন্ড এবং কলেজে তার সাথে বারংবার কথা বলতে দেখেছে।বোধহয় ও কিছু জানে কিনা এই আশায় তার বাসায় আসা।
বাসাটি খুজতে সময় লাগলেও পৌছিয়ে কলিং বেল টিপল।নির্জন লোকশুন্য একাকায় বাড়িটা।জানে কেডা কোন
বাপের আমলে বিণামূল্যো এই ভাংগাচুড়া বাড়িটা পেয়েছিল।কিভাবে মানুষ এইরকম এক পরিবেশে থাকতে পারে কে জানে।
না আছে আশে পাশে কোন দোকান,না ছে হাসপাতাল এমনকি ঔষধের দোকান ও নেউ।শহরের মধ্যো কে জেন গ্রামের অংশ
এনে থুয়ে দিয়েছে।সমস্ত ভাবনাকে গায়েব করে দিয়ে ফারিয়া দরজা খুলল।ফারিয়াও সোহেল রানাকে পছন্দ করত কিন্তু কখনও
বলতে পারে নাই।আজকে চোখের সামনে রানাকে দেখতে পেয়ে অনেক খুশি হয়ে দরজা খুলে দিল।রানা দেখল বাসায় সে একা
রয়েছে।ফারিয়া বলল যে তার মা ও বাবা বাইরে কাজে গেছে এবং একথা বলে রান্নাঘরে গেল কিছু খাবার নিয়ে আসতে।
ওমা একি রানার পছন্দের সকল খাবার আনা হয়েছে।কিন্তু রানার এখন কোন বিষয়ে আগ্রহ নেই।তার সুধু ইভার সন্ধান দরকার।
অনেক দিন না দেখায় চিন্তিত হয়ে গেছে।দুই দিব হলেও দুই বছর মনে হচ্ছে তা।
রানা:-আচ্ছা যে কারনে এখানে আসা।তুমি ইভা কোথায় আছে বলতে পার
ফারিয়া:-না দুই দিন হল আমার সাথে দেখা আর হয় নাই কেন বলত
রানা:-আসলে এই দুই দিন না দেখায় খুব টেনশন হচ্ছে কেন জানি।প্রতিদিন কলেজে আসত কেন যে আসছে না।কিছু হয়ে গেল নাকি
ফারিয়া:-আরে নাহ।দেখ কোথায় বেরাতে গেছে হয়ত।আর টেনশন করছ কেন খামাখা একটা মেয়ের জন্য
রানা:-ও শুধু মেয়ে নয় আমার জন্য
ফারিয়া:-কেন এয়ারহোস্টার সে!!
রানা:-কথার মাঝখানে বা হাত ঢুকিও না।আসলে ইভাকে আমি অনেজ ভালবাসি।বলতে পারব না আমি তোমাকে কতটা
আমি ইভাকে ভালবাসি।ওর প্রথম Hi বলার থেকেই আমি ওকে ভালবাসি
ফারিয়া:-নিস্তব্দ
রানা:-কি হল কিছু বল।বিশ্বাস হচ্ছে না বুঝি।এটাকে সারপ্রাইজ বলতে পার
ফারিয়া:-হুম।এর থেকে বড় সারপ্রাইজ আমার লাইফ এ কোনদিন পাইনি।আচ্ছা ইভার ব্যাপারে কিছু জানলে বলবানি
রানা:-আচ্ছা তাহলে আসি
ফারিয়া দরজা বন্ধ করে অনেক্ষন কাদতে থাকল।তার প্রথম ভালবাসা হারিয়ে গেল
.
.
এদিকে পরীদের রাজ্যো তান্ডব শুরু হয়ে গেছে।রাজা তার মেয়েকে তন্ন তন্ন করে খোজা শুরু করতে লাগল।
রাজ্যো সবযায়গায় খবর ছরিয়ে পরল।পুরা রাজ্যো বিষন্নতা ছরিয়ে পরেছে।ইভার কোব সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না ভাবতেই সবার বুক কেপে উঠল।
ইভার মা কাদতে কাদতে ভাশিয়ে ফেলেছে।তাকে সান্তনা দিবে নাকি ইভার বোন মেঘাকে শান্তনা দিবে।
ইভার মা:-ওগো আমদের মেয়ে ইভা কোথায় চলে গেল।তুমি তারাতারি যেখান থেকে পার আমার মেয়েটাকে নিয়ে আস।
মেঘা:-হ্যা আব্বু প্লিজ তুমি আপুকে তারাতারি খুজে বের কর।
বাবা:-আচ্ছা এভাবে মরা কান্না কাদছ কেন তোমরা
–তা কাদব না।ইভা মেয়ে আমার দুই দিন বাসায় আসে না।ও তো কোনদিনও এমন করে নাই।আমি বলছি তুমি তারাতারি সৈন্য পাঠাও
বাবা:-হতে পারে কোন অভিজানে গেছে।আচ্ছা দারাও আমি দেখছি
–দেখছি না তারাতারি কিছু কর।আমি আমার ইভাকে দেখতে চাই।
রাজামশাইক টেনশনে পরে গেছেন।সবযায়গায় এলান করা হয়েছে এমনকি জীনজগতেও এ খবর ছরিয়ে পরে।
.
.
সোহেল রানা এদিকে ইভার কলেজে যায় এবং তার ব্যাপারে কিছুই তেমন জানা যায় না।কেমন সন্দেহের সৃষ্টি হয় তার মনে।
কলেজে এদিকে যার কমবেশি ইভার সাথে কথা বলে তারাও নাকি কোনদিনও ইভার বাড়ি দেখেনি।কলেজের মধ্যো তাদের বন্ধুত্তের সীমাবদ্ধ।
আবার ইভা নাকি কারো সাথে বেশি কথা বলত না।চুপচাপ মেয়েটা কেমনে রানার সাথে এত কথা বলত বুঝতে পারে না।
ইভার চার ফুট হাওয়ায় ভাসা,জীনের সাথে ইভার সম্পর্ক আরো যাবতীয় প্রমান রানার মনে প্রচুর সন্দেহের সৃষ্টি জাগায়।কিছুই মিলাতে পারছে না রানা।
এদিকে মেঘা অর্থাত ইভার বোন রানার কাছে আসল ও ইভার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করল এই ভেবে যদি সে কোন কিছু তার ব্যাপারে জেনে থাকে।
মেঘা:-তুমি কি ইভার ব্যাপারে কিছু জান
রানা:-কিসের ব্যাপারে?
মেঘা:-আসলে কিছুদিন তার দেখা পাচ্ছি না।খুব ভয় লাগছে তাই বল্লাম
রানা:-ভয় তো আমারো লাগছে কিন্তু আমিও তো একই ভাবে তাকে খুজছি।আচ্ছা ইভার বাসা কোথায় যান?
মেঘা কিছু না বলে হতাশা হয়ে চলে গেল।মেঘা মনে করেছিল তার বোন রানার কাছে আছে।কিন্তু সেই আশাও বিফলে গেল
.
.
জীনজগতে কেউ জানে না যে তাদের ই একজন ইভাকে আটকে রেখেছে।এদিকে ইভা অনেক কষ্টে ওখানে রয়েছে।
সেই দানব টা এসে প্রতিবার তার কাছে প্রথমে ভালবাসার কথা বলে,না শুনলে অনেক কাকুতিমিনতি করে।
তবুও না শুনলে অনেক মারধোর করে আর পরে নিজেকে শাস্তি দেয় ইভাকে মারার জন্য।একদিন জীনটি প্রচন্ড রেগে যায়
–তোর আমাকে ভালবাসতেই হবে।দরকার হয় জোর করে আদায় করে নিব
–পারবি না।কারন জোর করে কখনও ভালবাসা আদায় করা যায় না
–মানুষের ডায়লগ এখানে দিস না।আর হ্যা তোর রানারও এক ব্যাবস্থা করছি।অনেক ভালবাসার শখ জেগেছে না তার মনে।
আমি তাকে মৃত্য দিয়ে তার নাম তোর মন থেকে মুছে দিব
–রানার গায়ে হাত দিলে আমি তোকে ছারব না।ও আমার প্রান
–হা হা হা।রানাকে তাহলে মরতে হবে
এই বলে দানবটি চলে যায়।এদিকে সেই দানবটার বোন আসে এবং ইভাকে মুক্তি করে দেয়
আগন্তক:-ভাইয়া আসার আগে চলে যাও
ইভা:-ধন্যবাদ তোমাকে।কিন্তু তোমার ভাইয়া আমার রানাকে মারতে গেছে
–সে নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না।আমি রাজাকে কিছুক্ষনের মধ্যোই এই সংবাদ পৌছে দিব
ইভা আর অপেক্ষা করল না।চলে গেল তার রাজ্যো।এদিকে তার পরিবারের সবাই ইভাকে ফিরে পেয়ে অনেক খুশি হল।
ইভা তার বাবাকে সম্পুর্ন ঘটনা টা জানায়।এটাও বলে কিভাবে সেই দানবটি রানাকে ভয় দেখিয়েছে।
ইভা তার বাবার কাছে বিচার চেতেই তার বাবা জীনের রাজ্যো গিয়ে তার পরিচালনায় সেই দানবটির শাস্তি হয়।
এদিকে খুসিতে সে রানাকে সেই গাছটার কাছে আসতে বলে যেখানে সে প্রথম রানাকে দেখেছিল।
রানা আসতেই ইভার কাছে তার সন্দেহের প্রকাশ করে।তার আসল পরিচয় জানতে চায়।এরই মধ্যো মেঘা বড় দুইটা পাখনা মেলে নিচে আসে।
রানা অনেক অবাক ও ভয় পায়।ইভা বলে এটি তার ছোট বোন।আর যাবতিয় সব কথা বলে যে কখন কোথায় সে তার প্রেমে পরে
সোহেল রানা তার নিজ চোখ ও কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না।এমনিতেও ভিতু টাইপের হলেও আজ কেন যেন ভয় লাগছে না।
শুধু এক অদ্ভুদ শিহরন বয়ে চলেছে সারা শরীর এর মধ্য দিয়ে।ইভাকে সে কি বলবে সঠিক বুঝে উঠতে পারছে না।
বাংলা,হিন্দি সব ছিনেমার ডায়লগ যা মনে ছিল তাও ভুলে গেছে
ইভা:-কি হল কিছু বলছ না
রানা:-আমি জানতাম তোমাকে পরীর মত দেখতে।কিন্তু তুমি…..
ইভা:-কেন বিশ্বাস হচ্ছে না
রানা:-আচ্ছা শুনেছি রুপকথার পরীরা নাকি তিনটি বর প্রদান করে
ইভা:-৩ টির কথা যানি না।তবে আমার কাছে একটি বর আছে।আর সেটা তুমি
রানা:-বিয়ে করলাম কবে।তবে শালিকে বারবার উরতে মানা কর।অদ্ভুদ লাগছে
ইভা:-একটু আগেই তো বল্লা আমাকে বিয়ে কর নাই।তবে আমার বোনকে শালি বল্লা কেন
মেঘা:-তবে যাই বল আমি দুলাভাইকে কেমন surprise দিলাম
রানা:-ওয়ে বাবা।ওখানে।সবাই আবার ইংরেজি জানে নাকি!!
মেঘা:-নয় তবে আপুর মুখে শুনেছি।মনে হয় আমার দুলাভাই এর কাছ থেকে শিখেছে
ইভা:-আমার কিন্তু একটা জিনিস নিয়ে এখনও ভয় হচ্ছে
রানা:-কি বিষয়ে?
ইভা :-আচ্ছা তুমি কি আমাকে আবার আগের মত ভালবাসতে পারবা।জান আমি কখনও তোমাকে হারাতে চাই না।
এজন্য আজ পর্জন্ত তোমার কাছে এই সত্যটা লুকিয়ে এসেছি।এখন যদি ছেরে চলে যাও আমি কিন্তু বাচতে পারব না
রানা:-বাংলা ছিনেমার কমন ডায়লগ এটা।আচ্ছা তুমি এত ডায়লগ পেলা কোন জায়গায়?
ইভা:-তুমি মজা করছ।আগে বল সারাজীবন আমাকে ভালবাসবা কিনা
রানা:-হুম ভালবাসতে পারি তবে এক শর্তে
ইভা:-কি?
রানা:-আমাকে তোমার রাজ্যে নিয়ে যেতে হবে।অনেক শখ পরীদের দুনিয়াটা দেখার
ইভা:-হাত ধর
রানা:-তোমার বোনের সামনে 🙂 আচ্ছা ধরলাম
.
.
ইভা রানাকে নিয়ে তাদের রাজ্যো নিয়ে গেল।রানা আস্তে আস্তে মেঘের উপরে যাচ্ছে।নিচে তাকানোর সাহস নেই তার।
মনে মনে তবুও অনেক উত্তেজনা কাজ করছে।ছোটবেলায় শুধু রুপকথার গল্প শুনেই গেছে।কোনদিনও বিশ্বাস না
করলে অনেক রকমের অনুভুতি কাজ করত।কল্পনায় নিজেকে পরীর দেশে খুজে নিত আর আজ তাকে এক পরী যাকে
সে অনেক ভালবাসে সে তাকে তার স্বপ্ন পুরন করতে সাহায্য করছে।কিছুক্ষনের মধ্যোই তারা রাজ্যে ফিরে এল।ছোটবেলায়
রানা পরীদের দেশ সম্পর্কে যা শুনেছিল বা অন্যান্য জায়গা হতে যা জেনেছিল তার কিছুই দেখতে পেল না।তবে অন্যরকম ছিল যায়গাটা।
এদিকে শালি দেখি জ্বালিয়ে পুরিয়ে খেল।কোথায় রাজ্যো টা ঘুরিয়ে দেখাবে তা নয় নিজের প্রশংসা করতে ব্যাস্ত আর তার বাবার
বাহাদুরি নিয়ে ব্যস্ত।আচ্ছা সেটা তো হবে কিন্তু শশুরমশাই কে তো দেখা যাচ্ছে না।ইভা রানাকে তার মা-বাবার সাথে পরিচয়
করাতে নিয়ে আসল।শশুরমশাই এর বিশাল ডানা দেখতেই রানা ব্যাস্ত।এদিকে তার শাশুড়ি কে অনেক সুন্দর লাগছে দেখতে
যেখানে তার শশুরমশাই ততটা সুদর্ষন নয়।বলেই ফেলল তার ইভার মায়ের সৌন্দর্যের কথা।ভাগ্যিস মুখ ফসকে শশুরমশাই
এর কালা চেহারার কথা বের হয় নাই।তবে মেয়ে দেয়া তো দুরের কথা ওকে রাজ্য হতে চুড়ে নিচে ফেলা হত।রানা একদিকে
আবার পটানোর এক্সপার্ট।ইভার মা-বাবাকে।পটাতে তার বেশি সময় লাগল না।কিন্তু হনুমান মার্কা শশুরমশাই কে পটাতে
বেশ কিছু সময় খরচ হল।বান্দা কোন কিছুতেই খুশি হচ্ছিল না।তবে সামনে যেই হোক না কেন পটানো রানার কাছে সোজা।
দিকে মেঘা তার শালি রানাকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে গেল।রানাকে এমনিতেও দেখতে রাজ্যোর প্রায় সব লোক ছুটে এসেছে।
নিজেকে ছেলিব্রিটি মনে হচ্ছে।কিন্তু রানা আসলে জানে না তারা তাকে নয় ইভার মানুষ্য প্রেমি কে দেখতে এসেছে।
দিকে রানা রাজ্যে বিভিন্ন যায়গা পরিদর্শন করল।ভাগ্যিস ভাল পৃথিবীর মত এখানে কসমেটিক্স এর দোকান নেই।
কলে হয়ত আজকে তার।পকেট খালি হয়ে যেত।আচ্ছা বাংলাদেশে টাকা চলে আমেরিকায় ডলার।এখানে কি চলে ভাবতে থাকে
.
.
ভাবতে ভাবতে একা একা একটু দুরে যেতেই ফারিয়াকে দেখতে পায়।এই তো সেই ফারিয়া যাকে সে ইভার সাথে দেখেছিল।
কিন্তু এ এখানে কিভাবে এল।ফারিয়ার বাসা ছিল নির্জন স্থানে।কোন বাঘ খেয়ে ফেলায় মরে ভুত হয়ে আসেনিতো।
ল্পনার জগত কে ভেংগে ফেলে ফারিয়া বলল
–আমি তোমাকে ভালবাসি।সেই কলেজ স্কুলে পরার সময় থেকে।আমি জীন এর সন্তান এটা ভেবে ভয় পাবে বলে বলা হয়ে ওঠেনি।
কিন্তু আর নয়।ইভার অনেক আগ হতে আমি তোমাকে ভালবাসি।তুমি চাইলে আমি ইভার থেকেও বেশি সুন্দরের রুপ ধারন করব
–কিন্তু আমি ইভাকে ভালবেসে ফেলেছি।তার রুপের জন্য নয় আমি তার মনকে ভালবেসে ফেলেছি।তাই আমার কাছে
তোমাকে ভালবাসা সম্ভব নয়।দয়া করে বোঝার চেষ্টা কর
–কিন্তু আমি তোমাকে ইভার থেকেও বেশি ভালবাসা দিব
–আমি তোমাকে বলে বোঝাতে পারব না আমি ইভাকে কতটা ভালবাসি।শুধু এটাই বলতে পারব ওকে চাড়া আমি ১ মুহুর্ত ভাল থাকতে পারব না
–তুমি যেটাকে ভালবাসা ভাবছ ওটা আসলে ভালবাসা নয়।আমি তোমাকে প্রকৃত ভালবাসি
–আমি জানিনা তুমি আমাকে কতটা ভালবাস।কিন্তু আমিও ইভাকে চাড়া থাকতে পারব না।দয়া করে আমাকে তুমি ভুলে যাও
রানা তার শালিকে নিয়ে ওখান থেকে চলে গেল আর গোটা ব্যপারটা সবার থেকে লুকিয়ে রাখল।
.
.
রানা ইভাকে নিয়ে আবার পৃথিবীতে আসল।কিন্তু ঘরে এসে দেখে যে তার মা বাবা ঘরে নেই।তাই ইভাকে নিয়ে অপেক্ষা করতে লাগল।
হটাৎ ইভা অদ্ভুদ রকমের একটি দৃশ্য তার চোখে ভেসে উঠতে দেখল।দেখতে পেল কেউ দু জন কাপলস কে বেধে রেখেছে মানুষের চামরা দিয়ে।
রানাকে নিয়ে গেল এ ব্যাপারে খোজ নিতে।ইভা আস্তে আস্তে সে যায়গায় প্রবেশ করতে দেখল সেই কাপলস রানার মা-বাবা আর
তাদের সামনে ইভার সেই প্রেমি দানবটি।তবে সেই দানবের চোখে ইভার জন্য ভালবাসা নেই।আছে খুন করার অগ্নিময় চোখ।
এই মুহুর্তে ইভার রাজ্য হতে কেউ আসতে পারবে বলে মনে হয় না তাদের বাচাতে।আর ইভার কাছে সেই দানবটির সাথে লড়াই করার পর্যাপ্ত শক্তি নেই।
ইভা ভয় পেল না।ইভা সেই দানবটির সাথে লড়াই করল।রানার সাথে বেয়াদবি করার শাস্তি তাকে পেতেই হবে।সর্ব শক্তি নিয়ে দানবটির
সাথে লড়াই করতে লাগল।রানার চোখের সামনে পুরা ঘর আলোতে ভরে যাচ্ছে।বিকট শব্দ তে কেপে ওঠে পুরা বাড়ি।কিন্তু এক পর্জায়ে
হেরে যায় ইভা এবং সেই দানবটি ইভাকে আঘাতের পর আঘাত করতে থাকে।ইভার বাকশক্তি আর যেন নেই।একচোখে রানার দিকে
তাকিয়ে থাকে এবং তাকে আভয় দেয়ার চেষ্টা করে যে সে ঠিক আছে।কিন্তু সেই চেষ্টা একান্তই মিথ্যা।কারন রানার চোখ হাত সব বাধা।
আহা কি কষ্ট হচ্ছে আমার রানার।জানোয়ারটা তাকে বেধে রেখেছে কত কষ্টই না হচ্ছে না তার।এদিকে রানা ইভার আঘাত সহ্য করতে
না পেরে অজ্ঞান হয়ে গেছে।ঘুমের মধ্যো রানার চেহারা অনেক মায়াবি লাগছে।অনেক ইচ্ছা করছে তার কপালে আলতো করে এক চুমা
একে দিতে।কিন্তু সেই সামর্থ যে ইভার নেই।দানবটা শেষমেষ তার সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করল।ইভার চোখ থেকে এক ফোটা পানি বের হল।
চোখ বন্ধ হয়ে আসছে।সেই দানবটি রানাকে হত্যা করার জন্য হাত বারায়।ইভা তখন বিকট চিতকার দিয়ে ওঠে।মেঘা তখন হাল্কা ভয়ের
উপলব্ধি টের পায় নিজের মধ্যো।তাই সে দেখতে যায় কি চলছে।রানার কাছে এসে বিষয় তা বুঝতে পেরে তারাতারি নিজের রাজ্যো ফিরে
আসে।তার মা-বাবাকে খবর দেয় এর ব্যাপারে।এ মুহুর্তও ব্যায় না করে সৈন্য নিয়ে এসে হাজির হয় সেই দানবটির সামনে।নিজের মেয়ের
নিস্তব্দ শরীর টা দেখে রাগে দুঃখে সেই জ্বিনের পুরা শরীর বিক্ষিপ্ত করে দেয়।এসব তারই ভুল।যদি সে ঠিক সময় আসতে পারত তাহলে তার
আদরের মেয়ে তার কলিজার টুকরাকে হারাতে হত না।একসময় দেখল রাত হয়ে গেছে চারদিকে অন্ধকার আবার ভুমিকম্প হচ্ছে।
কিন্তু পরে বুঝল যে না এটা শুধুমাত্র তার নিজের সাথে হচ্ছে।কি করবে বুঝতে পারছে না।ইভার নিস্তেজ শরীর নিয়ে চলে যায় নিজ রাজ্যো।
ও যাওয়ার আগে রানাকে তার বাসায় পৌছে দিয় আসে
.
.
রানা ঘুম থেকে উঠে ইভার খোজ করতে লাগে।কালকের ঘটনা তাকে পাগল করে দিয়েছে।সে যায়গায় ফিরে যায় যেখানে ইভা
তাকে ভালবাসে প্রথম,ইভার পছন্দের স্থান।কিন্তু সেখানে ইভার সন্ধান পায় না রানা।অবশেষে সেই স্থানে যায় যেখানে শেষবারের
মত ইভার সাথে তার দেখা হয়েছিল।কিন্তু সেখানেও রানার নিরাশা বেরে যায়।ইভার কোন ক্ষতি হয় নি তো।দানবটি ইভাকে কতই
আঘাত না করেছে রর সে কিছুই করতে পারে নি।নিজেকে কাপুরুষ বলে মনে হচ্ছে।ভালবাসার জন্য কিছুই করতে পারল না।
হয়ত দানবট ইভাকে আবার বন্দি বানিয়ে নিয়ে গেছে।কিন্তু রানা তো আসলে জানেই না যে তার ইভা আর নেই।এদিকে কোথা
থেকে ফারিয়া এসে পথে বাধা এসে দারাল।তার ভালনাসা আদায় করার সময় হয়ে গেছে তার।এত সব পরিকল্পনা তো রানাকে
পাওয়ার লোভে।সে তো তার ভাইকে ইভার প্রতি উত্তেজনা করে তাকে মারার জন্য পাঠিয়ে দেয়।তবে তার ভাইও মারা যায় এতে
কিন্তু ফারিয়ার বিশেষ কোন দুঃখ হয়নি এতে।কারন সে রানার ভালবাসায় পুরা পাগল হয়ে উঠেছে।যেকোন পর্জায় রানাকে তা চাই।
রানার অবহেলা তিল তিল করে খেয়ে ফেলছে ফারিয়ার হৃদয়কে।না এটা হতে দেয়া যাবে না।ইভা কেন কেউ রানার হতে পারে না
শুধুমাত্র ফারিয়া ছারা।রানা তার কল্পনার জগত ভেংগে দিয়ে জিজ্ঞাসা করল
–কেন এসেছ এখানে?
–শুধু তোমাকে চাই
–এখন প্লিজ আমার কাছ থেকে চলে যাও।ইভার কোথায় আছে সেটা ভেবে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি।আর এখন তুমি বিরক্ত কর না
ফারিয়া অনেক রেগে ওঠে।সে তার কানে আর ইভার নামটা সহ্য করতে পারছে না
–ইভা,ইভা,ইভা শুধু এটাই করতে পার।ইভা মারা গেছে।হ্যা হ্যা আমি মেরেছি তাকে
হটাত বর রকমের ধাক্কা খায়।কিন্তু তার ইভার উপর অনেক ভরসা আছে
–এখন ফালতু কথা বলার সময় আমার কাছে নেই।আর ইভার কোন সন্ধান যদি নাই থাকে খামাখা কানের সামনে এসে চিল্লাইও না
ফারিয়া তখন ওখান থেকে চলে যায় পরীর রাজ্যো তার প্রমান দেখানোর জন্য
.
.
এদিকে ইবার বাবা এক বয়স্ক জ্বীন এবং শক্তিশালি ও জ্ঞানীও বটে তাকে নিয়ে।আসে।অনেক দেখার পর তিনি বলেন
–ইভাকে বাচানো সম্ভব নয়।তবে একটা উপায় আছে
–তারাতারি বলুন কি সেই উপায়
–ইভার শরীর এক মৃত শরীরে প্রবেশ করানোর সাথে সাথেই আমার শক্তিতে তিন দিনএর জন্য প্রান ফিরে পাবে
–কিন্তু পরে
–ইভার ভালবাসায় পাগল এক যুবকের হৃতপিন্ড ওই লাশে প্রবেশ করানোর সাথে সাথেই ইভা বেচে যাবে
–আপনি তাই করুন দয়া করে আমার মেয়েকে বাচান
–আচ্ছা আপনি হৃতপিন্ড ব্যাবস্থা করুন
ইভার বাবা চিন্তা করে ব্যাকুল কে এমন হতে পারে।সেই দানবটি তো তার নিজের আঘাতে মারা গেছে।তবে আর কোন যুবক আছে
যে ইভাকে ভালবাসে।হ্যা রানার কথা মনে পরেছে তার।তবে যেই হাতে রানার জীবন বাচিয়েছে সেই হাতে তাকে মারতে হবে।
না তার পারতেই হবে।অন্তত ইভার জন্য হলেও।এদিকে ইভার আত্তা মৃত এক মেয়ের শরীরে প্রবেশ করানো হয়েছে।ইভার ফিরে
আসায় সবাই খুশে হয়ে ওঠে।ইভাও প্রচুর কান্না করে ভেবেছিল আর তার মা-বাবা আর আদরের বোনটাকে আর দেখতে পারবে না।
এদিকে যখন দুঃখময় সৃতি চলছিল অন্যদিকে ফারিয়া রানার কাছে এসে ইভার শরীর নিয়ে আসে প্রমান স্বরুপ আর বলে ইভাকে
বাচাতে তাকে মারতে আসছে ইভার বাবা।রানা তখন বলে যে সে তার হৃতপিন্ড দিয়ে হলেও ইভাকে মরতে দিবে না।কিন্তু ফারিয়া
এ ব্যাপারে বাধা দিয়ে তাকে খুব গোপন স্থানে নিয়ে গিয়ে বন্দি করে রাখল
.
.
এদিকে ইভার বাবা পাগলের মত রানাকে খুজতে থাকে।অন্যদিকে ইভা সম্পুর্ন ব্যাপারটি জানতে পেরে চলে যায় রানার কাছে।
রানা তখন ফারিয়াকে বলতে থাকে যে সে বেচে থাকতে ইভার কোন ক্ষতি হতে দিবে না।এদিকে ইভার বাবা তাদেরকে খুজে পায় ও
রানাকে মারার জন্য হাত বারায়।রানার মনে কোন ভয় নেই আরো মনে খুশি কাজ করছে।ইভার জন্য কোনদিন কিছুই করতে পারে নি।
শুধু ইভাই করে চলেছে।আজ তার জন্য কিছু করার সুযোগ এসেছে।সবচেয়ে মুল্যবান জিনিস টা ইভাকে দিয়ে যাবে।কিন্তু তা হল না।
ইভা তার বাবার সামনে এসে দারাল।কিন্তু মেয়েকে বাচানোর নেশায় ইভাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল।মানুষের শরীরে থাকায় ইভার শক্তিও
ছিল না বাধা দেয়ার।হটাত ইভার মাথায় একটা বুদ্ধি এল।রানার দিকে একটি মুচকি হাসি দিয়ে ছুরি দিয়ে নিজ শরীরে আঘাত করল।
চারপাশে নিস্তব্দ পরিবেশ।বাংলা ছিনেমার ডায়লগ ছারা মেয়েটা আজ বাংলা ছিনেমার মতই নিজের জীবন উতসর্গ করে দিল।
সব গুলিয়ে যাচ্ছে রানার।নিস্তব্দ পরিবেশে ইভার শরির রানার দিকে একদৃষ্টি তে চেয়ে আছে।সে ধিরে ধিরে ইভার কাছে যায়।
এই বুঝি ইভা তাকে থাপ্পর মেরে বলে তারাতারি দেখা করতে।কিন্তু না…আর ইভা তাকে কিছুই করতে পারবে না।রানাকে স্বাধিন করে দিয়ে চলে গেছে।
রানা পাগলের মত কাদতে থাকে।কে আজ থেকে তার খেয়াল রাখবে।কেই বা তাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে।আবার কেই বা তাকে এতটা ভালবাসবে।
চোখের সামনে সব ঘোলাটে হয়ে যায়।হটাত রানা কি ভেবে ইভার হাত থেকে ছুরি টা নেয় আর নিজ শরীরে আঘাত করে
.
.
নাহ রানা মারা যায়নি।ইভার বাবা রানাকে আটকিয়ে ফেলে।সে ইভার শেষ সৃতি তাকে কিভাবে মরতে দিতে পারে।
রানাকে বাচতে হবে ইভার মা-বাবার জন্য বাচতে হবে।
.
…………………………….(সমাপ্ত)……………………….