১.
শখের গোয়েন্দা বল্টু’র নাম এখন সবার মুখে মুখে।উনি যেহেতু কয়েকটি কেস সলভ করেছেন তাই অনেক জায়গা থেকে ওনাকে অভিনন্দন জানানো হচ্ছে।
তবে,অনেক আজেবাজে কেসও হাতে আসছে। এই তো সেদিন একজন কল করে বলল-
“ভাই,আমার মনটা একজন চুরি করে নিয়ে গেছে। আপনি এটা এনে দেন”
একথা শুনে তো বল্টুর মাথায় রক্ত উঠে গেল। তাই,সে খট করে মোবাইলটা বিছানায় ছুড়ে ফেলল।
তাই,তিনি ঠিক করলেন একটা অফিস ভাড়া করবেন এবং সঙ্গে একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট রাখবেন।
তো, তিনি কয়েকটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিলেন যে,”আগামী এত তারিখে ওমুক জায়গায় একজন অফিস সহকারী নিয়োগ দেয়া হইবে।”
…………………………….
তো তিনি প্রচুর হম্বিতম্বি করে একটা দুই রুমের অফিস ভাড়া করে ফেললেন।
২.
আজ অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ করার দিন।
তো তিনি কোট-টাই পরে সাহেব সেজে অফিস গেলেন।
তিনি আসা করছিলেন প্রায় বিশ-পঁচিশ জন প্রার্থী আসবে। কিন্তু,গিয়ে দেখেন মাত্র একজন এসেছে।তা দেখে তো ওনার মাথায় রক্ত উঠে গেল।
তো তিনি গিয়ে ওই মেয়েটাকে বললেন-“আপনি বাসায় চলে যান।আমার কোনো অ্যাসিস্ট্যান্ট দরকার নাই। আমি অ্যাসিস্ট্যান্টের খেতা পুড়ি।যান।”
তিনি অনেক জোরেই কথাটি বলেছিলেন।
তিনি দেখলেন মেয়েটি কাদঁতে কাদঁতে চলে যাচ্ছে।
………………………….
বল্টু এখন জেলে বসে আছেন। বাংলা সিনেমায় যেরকম দেখায় সেরকম নয়। চারদিক দুর্গন্ধে ভরা। বিকট গন্ধ আসছে।
উনার জন্য এই অভিজ্ঞতা প্রথম।
উনি এখনও ঘোরের মধ্যে আছেন।
ওনাকে যে ওসি গ্রেফতার করে এনেছে সে বলল যে একটা মেয়ে ওনার বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছে। জিডিতে উল্লেখ আছে,উনি সেই মেয়েটির সাথে বেইমানী করেছেন। তাকে চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রতারিত করেছেন।
“ওসি সাহেব”-আস্তে করে ডাক দিলেন বল্টু সাহেব।
“হ্যা,বলুন।”
“আমি কি সেই মেয়েটার সাথে কথা বলতে পারি?”
“কোন মেয়ে? ”
“যে আমার নামে জিডি না বিডি করেছে”
“হ্যা পারেন।দেখেন মামলা ডিসমিস করা যায় কিনা?”
“আপনি ওনাকে পাঠিয়ে দেন”
…………………………………
৩.
বল্টু সাহেব আর সেই মেয়েটি মুখোমুখি দাড়িয়ে আছে।
বল্টু জেলের মধ্যে আর সেই মেয়েটি বাহিরে।
“এই মেয়ে তুমি সে না যাকে আমি নিয়োগ দেব না বলে তাড়িয়ে দিয়েছিলাম?”
“হ্যা”
“তাহলে তুমি মামলা করবা?”
“আমি আপনার অনেক বড় ভক্ত। তাই,আমার অনেক সখ আপনার অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে কাজ করা।কিন্তু,আপনি আমার তো ইন্টভ্যুউ নিলেন না বরং আমাকে তাড়িয়ে দিলেন”
“এত বকর বকর না করে আমাকে এখান থেকে বের কর”
“বের করব তবে একটা শর্ত আছে”
“কি শর্ত?”
“শর্ত হলো আপনি আমাকে আপনার অ্যাসিস্ট্যান্ট বানাবেন।রাজি থাকলে এই স্ট্যাম্পে সই করেন”
“স্ট্যাম্পে কেন সই করতে হবে?”
“বাহ! আপনাকে আমি বের করলাম আপনি আমাকে অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ করলেন না তা হবে না।”
“তা তোমার নাম কি?”
“নীলিমা”
“কলম দাও সই করি”
“এই তো লক্ষী ছেলের মত কথা”
……………………………………….
বল্টু আর নীলিমা একটা কফি হাউজে বসে আছে।
বল্টু যতই নীলিমার কথা শুনছে ততই অবাক হচ্ছে।তিনি মনে হয় একটা খাঁটি অ্যাসিস্ট্যান্ট পেয়েছেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের অফিসের কাজ ভালই হচ্ছে।তবে,তারা কোনো কেস এখন অব্দি হাতে পান নি।