২০০৬ সালে আমার বন্ধু আব্বাস তার তিনবছরের লুতুপুতু প্রেমে চরমভাবে বাঁশ খাইছিল। সে তখন নিজের ওপর এতটা আনকন্ট্রোল হইছিল, নিজের পাশাপাশি তার প্রাক্তন প্রেমিকারে মাইরা ফেলার মতো প্রাণঘাতিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হইছিল। আরেক বন্ধু নয়ন তার বেগতিক অবস্থা দেইখা তারে পরামর্শ দিলো আসামের এক কুফর আলীর কাছে যাইতে, যিনি কি না একঘন্টার ভেতরে তার প্রাক্তন প্রেমিকার তামাম জিন্দেগীর কিচ্ছাখতম কইরা ফেলতে পারবেন।
নয়নের পরামর্শ মতো অনেক খোঁজাখুঁজি কইরা পাহাড়ি পথ ডিঙাইয়া আমি আর আব্বাস একদিন আসামের কালা জাদুকর কুফর আলীর কাছে পৌঁছাইতে সক্ষম হইলাম। তিনি সবশুনে বললেন__ কাজ হইবে, তবে এক লক্ষ টাকা লাগবে! সেই সঙ্গে শ্মশানের মাটি, নতুন মুর্দার চোখ, বিধবা নারীর আঁচল, কুত্তার দুধ আর প্রাক্তন প্রেমিকার মাথার একজোড়া চুল সহ আরো কত কী ভুংভাং সংগ্রহ কইরা তার কাছে নিয়া যাইতে হইবে। এভাবে দুইমাস আসামে আর বাড়িতে দুই বন্ধু এটা ওটা নিয়া ঠিকঠাক দৌড়াদৌড়ি করলাম। একটা মাইয়ারে মারতে গিয়া আমাদের বিরক্তি একসময় চরম পর্যায়ে পৌঁছাই গেলো। কারণ, এটা নিয়া গেলে কুফর আলী বলতেন ওটা লাগবে, ওটা নিয়া গেলে বলতেন এটা লাগবে না। দুইমাসের তিক্ত ভয়ংকর অভিজ্ঞতার পর যখন সবকিছু ঠিকঠাক ম্যানেজ কইরা ফেললাম, তখন কুফর আলী বললেন, প্রেমিকার দাদার জন্ম তারিখ ও তাদের বিয়ের তারিখ লাগবে!
সেটা কি আমাদের দেশে সম্ভব? মেজাজ গেলো বিগড়ে, তাও সম্ভব কইরাছি যেভাবেই হোক। ফাইনাল যেইদিন প্রাক্তন প্রেমিকারে বান মারা হইবে সেইদিন কুফর আলী বললেন, একটা সাদা মুরগা লাগবে! যেটা কোনোদিনও মুরগীর পিছনে দৌড়ায় নাই, এক্কেরে জন্মগত চিরকুমার। এটা এখন কই পাই? মাথার ছুটও নাকি সাদা হইতে হইবে। উঠল প্রেমিক আব্বাসের সাংঘাতিক রাগ, কোত্থেকে মুরগা একটা ধইরা সাদা পেইন্ট কইরা নিয়া আসলো কুফর আলীর কাছে। সাদা মুরগা দেইখা কুফর আলীর চোখ তো এক্কেবারে ছানাবড়া। আমতা আমতা কইরা কুফর আলী জিজ্ঞেস করলেন__
“ইয়ে বাবাজি, এই মুরগা পাইলে কই? জগতে সাদা মুরগাও আছে?”