৯৫ কেজি ওজনবিশিষ্ট নব্যপ্রেমিকের আজ মন ভাল নেই।মন খারাপের কারণ তার ওজন। বিষয়টা বিস্তারিত বলা প্রয়োজন। তার ২ মাস আগে একটা নতুন প্রেম শুরু হয়। চোখ ধাঁধানো এক সুন্দরির সাথে। এখন দুইমাস পর সেই প্রেমিকার বান্ধবীরা নব্যপ্রেমিককে দেখার ইচ্ছা পোষণ করে। বিষয়টা গুরুতর রূপ ধারণ করে যখন প্রেমিকার হঠাৎ মনে পড়ে যে নব্যপ্রেমিকের ওজন ৯৫ কেজি। এখন ৯৫ কেজি ওজনের বয়ফ্রেন্ডকে কিভাবে বান্ধবীদের সাথে পরিচয় করাবে সেই টেনশনে নব্যপ্রেমিকের সুন্দরি প্রেমিকার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়,কাপাকাপি শুরু হয়,বুক ব্যাথা শুরু হয়,,খিচুনি হতে গিয়েও হয় না। বেশ কয়েকদিন নব্যপ্রেমিকের প্রেমিকা দুঃস্বপ্ন দেখে চিৎকার দিয়ে ঘুম থেকে ওঠে। স্বপ্নে দেখে তার বান্ধবীরা তার বয়ফ্রেন্ডকে দেখে সবাই হার্ট এটাক করে মরে গেছে। এবং সেই বান্ধবীদের ভূত, “তোর জন্য আমরা মরে গেলাম অকালে,” এই বলে খপ করে প্রেমিকারে গিলে খেয়ে ফেলছে। আর স্ট্রেস নিতে না পেরে প্রেমিকা শেষ পর্যন্ত নব্য প্রেমিককে বলল,,”তুমি কি ১৫ দিনের মধ্যে ওজন ১৫ কেজি কমিয়ে ৮০ করতে পারবা? তোমাকে আমার বান্ধবীরা দেখতে চেয়েছে।” নব্যপ্রেমিক বলল,,”এটা কোন ঘটনা,তোমার জন্য সব করতে পারি” কিন্তু প্রেমিকা চোখের আড়াল হতেই নব্যপ্রেমিক এক দৌড়ে চলে আসল তার ডেটিং এক্সপার্ট বেস্টফ্রেন্ডের পরামর্শ নিতে। অনেক খুজে দেখল,টি শার্ট,হাফপ্যান্ট আর বাথরুমের চটি পরা ডেটিং এক্সপার্ট একটা কালা চশমা চোখে দিয়ে দুইপাশে দুইটা সুন্দরির কাধে হাত রেখে বেলস পার্কের বেঞ্চে বসে আছে। সুন্দরিরাও প্রেমভরা দৃষ্টি তে ডেটিং এক্সপার্ট এর দিক তাকিয়ে আছে। নব্য প্রেমিক: দোস্ত, ১৫ দিনে ১৫ কেজি ওজন কমানোর টিপস দে। ডেটিং এক্সপার্ট : ব্যস্ত আছি। পরে দেখা কর। নব্য প্রেমিক: তুই আসবি এখন আমার সাথে নইলে কিন্তু সেই কিলার এসমাইল কাহিনী এদের বলে দেব। ডেটিং এক্সপার্ট শিগগিরি উঠে নব্যপ্রেমিকের মুখ চেপে ধরল। ডেটিং এক্সপার্ট : (সুন্দরিদের দিকে ফিরে) আমি তোমাদের রাতে কল দিব। আর বিষয়টা যেন মাথায় থাকে। (শয়তানি হাসি একটা) মেয়েদুটো একসাথে বলল,,”যাহ দুষ্টু”। এই বলে চলে গেল। ডেটিং এক্সপার্ট : মামা,তুই এভাবে আমারে ব্লাকমেইল করতে পারলি? নব্যপ্রেমিক: রাখ বলদ,আমার কি হবে এটা বল। মেয়ের বান্ধবীরা আমাকে দেখতে চাইছে। ৯৫ কেজি নিয়ে ওদের সামনে গেলে তো মেয়েরে নিয়ে হাসাহাসি করবে,অথবা পড়া পানি এনে ছিটা দিবে,যে আমি ব্লাক ম্যাজিক করছি কিনা। ডেটিং এক্সপার্ট : সত্যিই করছস না ব্লাক ম্যাজিক? নব্যপ্রেমিক ডেটিং এক্সপার্ট এর পিঠে একটা দড়াম করে কিল দিল। ডেটিং এক্সপার্ট পিঠ বাঁকা করে দাঁড়িয়ে বলল,,”মারিস কেন? আচ্ছা দেখতাছি ব্যাপারটা কি করা যায়।” নব্যপ্রেমিক : কিছু একটা বুদ্ধি বের কর ডেটিং এক্সপার্ট : (নব্যপ্রেমিকের আপাদমস্তক দেখে) মামা,তোর গার্লফ্রেন্ডের তো এমনিই স্ক্রু ঢিলা,তোরে তো ওইজন্যই বয়ফ্রেন্ড বানাইছে, এখন ওর বান্ধবীরা ওর স্ক্রু ঢিলা জানলে কি বেশি সমস্যা হবে? নব্যপ্রেমিক আবার কিল দিতে উদ্যত হলে ডেটিং এক্সপার্ট বলল,”আচ্ছা,আর ইয়ার্কি করমু না। চল আগে তোর ওজনটা মাপাই। ধর,ওজন ৯৫ না, ৯০। তাইলে ১৫ দিতে ৫ কেজি কমিয়ে ৮৫ করাই অনেক। বাকিটা বুঝাইয়া বলবি। আর ৬ ফুট প্রায় লম্বা হইলে ৮৫ কেজি কোন মোটার মধ্যে পড়ে না” নব্যপ্রেমিক দেখল কথা ঠিকই বলছে। অতঃপর তারা ওজন মেশিনওয়ালার কাছে গেল ওজন মাপাতে। ডেটিং এক্সপার্ট : (মেশিনওয়ালাকে) মামা,আমার দোস্ত ওজন মাপাইবে। মেশিনটা বাইর করেন মেশিনওয়ালা: (নব্যপ্রেমিককে দেখে) মামা,আমার মেশিন ভাইঙ্গা যাইব। না খাইয়া মইরা যামু। ডেটিং এক্সপার্ট : ধুর হালা, মেশিন বাইর কর। মেশিনওয়াল ওজন মেশিন নিয়ে একটা দৌড় দিল। ডেটিং এক্সপার্ট পিছে পিছে দৌড় দিয়ে মেশিনওয়ালার উপর ঝাপিয়ে পড়ল। মেশিন ছিটে রাস্তায় পড়ল। এই ফাঁকে নব্যপ্রেমিক মেশিনের উপর দাড়াল। মেশিনের রিডিং দেখে নব্যপ্রেমিক ওজন মেশিনের উপর দাঁড়িয়ে দাড়িয়েই অজ্ঞান হয়ে গেল। পিটাপিটি বন্ধ করে ডেটিং এক্সপার্ট আর মেশিন ওয়ালা নব্যপ্রেমিকের দিক তাকাল।মেশিন ওয়ালা বলল,,”আল্লাহ বাচাইছে,মেশিন ভাঙে নাই আমার” ডেটিং এক্সপার্ট উঠে গিয়ে নব্যপ্রেমিককে নাড়া দিয়ে বলল,,”দোস্ত,কি হইছে?” এটা বলে সে নিজেই ওজন মেশিনের রিডিং এর দিক তাকাল। দেখল,লেখা আছে “১৯৫” এটা দেখে ডেটিং এক্সপার্টও অজ্ঞান হয়ে গেল। নব্যপ্রেমিকের মন তাই ভীষণ খারাপ। ব্রেকাপ এর ভয়ে ওজন সম্পর্কিত নতুন ব্যাপারটা গার্লফ্রেন্ডকে জানাল না। এদিকে ডেটিং এক্সপার্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ১৯৫ কেজি ওজন দেখে তার জ্বর এসে গেছে। জ্বরের ঘোরে আবোল তাবোল বলতেছে,, “১৯৫ কেজি,,,, আসেন ভাই নিয়া যান,, ১৯৫ কেজি মাত্র,,,” যাই হোক,, নব্যপ্রেমিক ব্যায়ামাগারে ভর্তি হল। ১৫ দিনে তার ওজন ১৯৫ থেকে ৮০ কেজিতে আনতে হবে। জ্ঞানীরা বলেন,মানুষের অসম্ভব কিছুই নেই। নব্যপ্রেমিক নিঃসন্দেহে একজন মানুষ। তাই সে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ,ওজন তাকে কমাতেই হবে। ব্যায়ামাগারের ট্রেইনারকে নব্যপ্রেমিক বলল,,” আংকেল, নিউ গার্লফ্রেন্ড,ওজন ১৫ দিনের মধ্যে ৮০ কেজি না হলে ভীষণ মাইন্ড করবে।” ট্রেইনার বলল,”তা বাবা তোমার বর্তমান ওজন কত?” নব্যপ্রেমিক বলল,,”১৯৫ কেজি” ট্রেইনার সেদিনই ব্যায়ামাগারের চাকরি ছেড়ে দিলেন। ব্যায়ামাগারের এতদিনের ট্রেইনার চলে যাবার পিছে হাত আছে ভেবে কর্তৃপক্ষ নব্যপ্রেমিককে তাড়িয়ে দিল ব্যায়ামাগার থেকে। এদিকে নব্যপ্রেমিকের গার্লফ্রেন্ড তার বেস্টফ্রেন্ডকে আর না থাকতে পেরে বলে দিল পুরো কাহিনী। যে তার বান্ধবীরা যে বলছে তার বয়ফ্রেন্ডকে দেখবে। কিন্তু তার বয়ফ্রেন্ড এর ওজন তো ৯৫ কেজি। কিভাবে দেখাবে? বেস্টফ্রেন্ড বলল,,”তুই কি ৯৫ কেজি জানার পরও ভালবেসেছিলি?” গার্লফ্রেন্ড: হ্যা বেস্টফ্রেন্ড: ছেলে কি টাকাওয়ালা,হ্যান্ডসাম? গার্লফ্রেন্ড: না বেস্টফ্রেন্ড: বাইক আছে? গার্লফ্রেন্ড: না,তবে সাইকেল আছে। কিন্তু ও চড়লে বাকা হয়ে যায় সাইকেল তাই চড়ে না। বেস্টফ্রেন্ড: (গার্লফ্রেন্ডের কান টেনে) কিছুই যখন ছেলের নাই,আর ৯৫ কেজি দেখেও যখন প্রেমে পড়তে পারছস,তাইলে বান্ধবীদের দেখাইতে সমস্যা কি? নাহয় টিটকারিই দিবে একটু,তাতে কি হইছে? তোর ভালবাসা,তোর গর্ব হওয়া উচিৎ গার্লফ্রেন্ড: আরে আমাকে যত টিটকারি মারুক।ওকে যদি ওরা অপমান করে? সেজন্যই তো ভয় পাচ্ছি। গার্লফ্রেন্ড মাথা নিচু করে বসে রইল। বেস্টফ্রেন্ড ওর পাশে নীরবে বসে মুচকি হাসতে লাগল,আর বলতে লাগল,,”হায়রে প্রেম।” এদিকে গার্লফ্রেন্ডকে ফেসবুকে আর্মির এক লেফটেন্যান্ট অনেক জ্বালাইত। প্রেম করব প্রেম করব বলে। সেই লেফটেন্যান্ট বিশাল বড়লোকের ছেলে,সেই হ্যান্ডসাম। বডিও বেশ ভাল। গার্লফ্রেন্ড তাকে পাত্তা না দেওয়ায়,ডাইরেক্ট বাসায়ই প্রস্তাব পাঠায়। গার্লফ্রেন্ডের বাপ মা রাজি হলেও গার্লফ্রেন্ড নব্যপ্রেমিকের জন্য প্রত্যাখ্যান করে। এখন সেই লেফটেন্যান্ট ভীষণ খেপে যায়। সে যখন দেখে গার্লফ্রেন্ডের প্রেমিক আসলে বিশাল মোটা,দেখতেও বেঢপ,টাকাপয়সাও তেমন নাই। তখন হিংসায় জ্বলতে থাকে। ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দিতে থাকে,,”সুন্দরি মেয়েদের চয়েজ এত্ত খারাপ” অথবা,,”রিয়েল লাভ তারা বোঝে না,প্রেম করে অসুরের সাথে” অথবা,,ফেইক আইডি খুলে মেসেজ দিতে থাকে, “প্রেমিকের কিন্তু ঘাপলা আছে,, ” অথবা “প্রেমিক লুচ্চা” এই টাইপ। এত জ্বালানোর পর বাধ্য হয়ে গার্লফ্রেন্ড যখন নব্যপ্রেমিককে বলে দিল সব কথা নব্যপ্রেমিক সেই লেফটেন্যান্ট এর কাছে গিয়ে বলেছিল, “ওর আশেপাশে যদি আর তোকে দেখি,তোর উর্ধ্বস্তন কর্মকর্তাদের নালিশ দিব,তোর চাকরি কেমনে থাকে দেখব” লেফটেন্যান্ট তখন ফেসবুকে পোস্ট দিছিল,,”বাস্তবে নায়িকারা ভিলেনদেরই হয়,, (কান্নার ইমো) ” যাই হোক, লেফটেন্যান্ট কিন্তু হাল ছাড়ে নি। সে নব্যপ্রেমিক আর তার গার্লফ্রেন্ডের ব্রেকাপ ঘটানোর উপায় খুজতে নিয়মিত নব্যপ্রেমিককে ফলো করত। একটু বেচাল কিছু করার অপেক্ষায় থাকত,, যেমন সিগারেট খাইলেই ভিডিও করবে,বা কোন মেয়ের সাথে কথা বললেই “লুচ্চা ভিডিও” করে গার্লফ্রেন্ডের কাছে পাঠাবে এই ছিল তার প্লান। এখন নব্যপ্রেমিক তো সিগারেট খায় না, মেয়েদের সাথেও মেশে না। তাই এতদিন লেফটেন্যান্ট ঘুরঘুর করেও কিছু করতে পারল না। কিন্তু ফলো করে যেই দেখল নব্যপ্রেমিক এর ওজন ১৯৫ কেজি,অমনি বাসায় এসে “রূপবানে নাচেরে কোমর দুলাইয়া” গাইতে গাইতে নাচতে নাচতে ভাবল,,আর ঠেকায় কে। এবার গার্লফ্রেন্ডকে এটা বললেই ব্রেকাপ হবে,আর গার্লফ্রেন্ড তাকে বিয়ে করবে। ওদিকে যেদিন গার্লফ্রেন্ডকে কথাটা বলতে যায় লেফটেন্যান্ট সেদিনই গার্লফ্রেন্ড তার বেস্টফ্রেন্ডকে স্বীকার করতেছিল যে, সে ৯৫ কেজি হলেও নব্যপ্রেমিককে ভালবাসে। এটা শুনে লেফটেন্যান্ট একটু কনফিউশন এ পড়ল। ৯৫ কেজি নব্যপ্রেমিককে যদি মেয়ে ভালবাসে,তাহলে কি ১৯৫ কেজি ওজনের নব্য প্রেমিককেও ভালবাসবে? শেষ পর্যন্ত সে সিদ্ধান্ত নেয়,নাহ,এভাবে হবে না,নব্যপ্রেমিকের সাথে গার্লফ্রেন্ড ব্রেকাপ করবে না। তাই নব্যপ্রেমিককে দিয়েই ব্রেকাপ করাবে। সে জবরদস্ত একটা প্লান করল। সে ঘুরে ঘুরে দেখল নব্যপ্রেমিকের বেস্টফ্রেন্ড ডেটিং এক্সপার্ট জ্বরে দুর্বল শরীর নিয়েও বন্ধুর ওজন কমানোর উপায় খুজতে ছুটাছুটি করছে। লেফটেন্যান্ট করল কি,লেংটি পড়ে দাড়ি চুল লাগিয়ে কিছু পাগল হওয়ার ওষুধ নিয়ে ডেটিং এক্সপার্টের বাসার পাশের মাঠটায় এসে বসে থাকল। সাইনবোর্ড লাগাল,,”লেংটা বাবার বিধ্বংসী আবিষ্কার, ১৫ দিনে ওজন কমবে ১১০ কেজি” ডেটিং এক্সপার্ট সেটা দেখে আনন্দে লাফাতে লাফাতে নব্যপ্রেমিককে আনতে গেল। এদিকে লেফটেন্যান্ট যে দোকান থেকে পাগল হওয়ার ওষুধ কিনেছিল। সেই দোকানের পাশে ছিল তখন নব্যপ্রেমিকের গার্লফ্রেন্ডের বেস্টফ্রেন্ড। মেয়েটা শুনল আড়ি পেতে যে লেফটেন্যান্ট দোকানদারকে মোটা টাকা দিয়ে বলছে,,”এই ওষুধ এক মোটুরে খাওয়াইয়া পাগল বানামু,হালায় আমার বউ ভাগাইয়া নিছে” এটা গিয়ে বান্ধবী নব্যপ্রেমিকের গার্লফ্রেন্ডকে বলে দিল। নব্যপ্রেমিকের গার্লফ্রেন্ড নব্যপ্রেমিককে ফোন দিতে লাগল। কিন্তু চার্জ নাই বলে নব্যপ্রেমিক মোবাইল বাসায় রেখেই ডেটিং এক্সপার্ট এর সাথে মাঠে চলে গেল। এদিকে প্রেমিকা জানত যে নব্যপ্রেমিকের ওই একটাই বন্ধু আছে সারা দুনিয়ায়,সে হল ডেটিং এক্সপার্ট। এবং ওদের আড্ডার জায়গা সেই মাঠ। প্রেমিকা তার বান্ধবীকে নিয়ে এক দৌড়ে সেই মাঠে গেল। গিয়ে দেখল,, ওজন কমানোর বিধ্বংসী ওষুধ লেংটা বাবা লেফটেন্যান্ট এর হাত থেকে মাত্র নিল নব্যপ্রেমিক। প্রেমিকা দৌড়ে গিয়ে নব্যপ্রেমিকের হাত থেকে পাগলের ওষুধ টা ফেলে দিল। নব্যপ্রেমিক: আহা এ কি? আমার ওজন কমানোর বিধ্বংসী ওষুধ প্রেমিকা: শাট আপ। তোর ওজন ৯৫ কেন, ২০০ কেজি হলেও তোকেই ভালবাসি। নব্যপ্রেমিক: বাট তোমার বান্ধবীরা? প্রেমিকা নব্যপ্রেমিককে জড়িয়ে বুকে মুখ লুকিয়ে বলল,,”আই ডোন্ট কেয়ার।” এদিকে লেংটা বাবা লেফটেন্যান্ট লাফাতে লাফাতে বলল,,”এই হালার চেয়েও আমি অযোগ্য? রাতে ঘুমাইতে পারি না,, আর বাই দ্য ওয়ে,,এর ওজন ৯৫ না, ১৯৫ ” এটা শুনে প্রেমিকা জড়ানো অবস্থায়ই নব্যপ্রেমিকের মুখের দিক তাকাল। প্রেমিকার বান্ধবী এই বাড়তি ১০০ কেজির শক সইতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে গেল। এদিকে লেফটেন্যান্ট একটা ছুরি বের করল। বলল,,”এই মোটু থাকলে তো তোরে আর পাব না, দাড়া,মোটুর চর্বি কমিয়ে দিই।” লেফটেন্যান্ট এগোতেই ডেটিং এক্সপার্ট ঝাপিয়ে পড়ল লেফটেন্যান্ট এর উপর। দুইজন মোচড়ামুচড়ি করতে করতে পাশের গ্যাস বেলুন ওয়ালার ভ্যানে গিয়ে পড়ল,লেফটেন্যান্ট এর ছুরি ছিটকে গেল। লেফটেন্যান্ট গ্যাসবেলুন গুলোর সুতা দক্ষ হাতে ডেটিং এক্সপার্ট এর কোমড়ে বেধে দিল। ডেটিং এক্সপার্ট আকাশে উঠতে লাগল। চিল্লিয়ে বলল,,”মামা,বাঁচা,,,” নব্যপ্রেমিক দৌড়ে এসে ডেটিং এক্সপার্ট এর কোমড় পেচিয়ে ধরল। আতংকের সাথে খেয়াল করল,,তাকে শুদ্ধ বেলুন গুলো আকাশে উঠে যাচ্ছে। প্রেমিকা বিস্ময়ের সাথে স্বগতোক্তি করল,”এ কেমন শক্তিশালী বেলুন” এদিকে বেলুনওয়ালা পিছপিছ ছুটতে ছুটতে বলল,,”এই মামারা,আবার বেলুনের দাম দিয়া যান” বেলুন তখন ডেটিং এক্সপার্ট আর নব্যপ্রেমিককে নিয়ে আস্তে আস্তে আরী উপরে উঠছে। বাতাস তাদের ভাসিয়ে নিচ্ছে। এদিকে লেফটেনেন্ট প্রেমিকার সামনে এসে বলল,,”ভালবাসা দিবি কিনা বল” প্রেমিকা চোখ বড় করে তাকিয়ে রইল। লেফটেনেন্ট বলল,,”সামনে ক্যাপ্টেন পরীক্ষা, মন বসে না পড়ার টেবিলে” প্রেমিকা আস্তে আস্তে পিছু সরল। বলল,”সে কি? এ বাংলা সিনেমার নাম কেনো বলে?” লেফটেন্যান্ট ও পিছপিছ দৌড়াতে দৌড়াতে বলল,,”এই মন তোমাকে দিলাম,এ বাধন যাবে না ছিড়ে,কোপা শামসুউউউউউ,,,,” এবার প্রেমিকা সিউর হল লেফটেন্যান্ট প্রেমের ডায়ালগ মুখস্ত করতে গিয়ে বাংলা সিনেমার নাম মুখস্ত করে এসেছে। সে দৌড়াতে দৌড়াতে বলল,,”হেল্প,হেল্প মি,,,” এদিকে বেলুন ১৫ ফিট উপরে উঠার পর আস্তে আস্তে নব্যপ্রেমিকের হাত পিছলাতে লাগল,পতন ঠেকাতে সে ডেটিং এক্সপার্ট এর স্টাইলিশ হাফপ্যান্ট খামছে ধরল। ডেটিং এক্সপার্ট চেচিয়ে বলল,,”এ্যাই শালা,প্যান্ট ধরে টানোস কেন?” নব্যপ্রেমিক কিছু বলার আগেই ডেটিং এক্সপার্ট এর প্যান্ট খুলে প্যান্ট সহ নিচে পড়ে গেল। নিচে প্রেমিকার পিছে বাংলা সিনেমার নাম জপতে জপতে লেফটেন্যান্ট দৌড়াচ্ছিল। লেফটেন্যান্ট যখনই বলল,,”বুকের ভিতর আগুন জ্বলে,,,” তখনই ১৫ ফুট উপর থেকে ডেটিং এক্সপার্ট এর হাফপ্যানট সহ নব্যপ্রেমিক তার ঘাড়ে এসে পড়ল। হাফপ্যান্ট টা তার মাথার আশেপাশে জড়িয়ে গেল। লেফটেনেন্ট নব্যপ্রেমিক এর ওজন আর ডেটিং এক্সপার্ট এর এক সপ্তাহ না ধোওয়া হাফপ্যান্টের গন্ধের দ্বিমুখী আক্রমণের অজ্ঞান হয়ে গেল। এদিকে ডেটিং এক্সপার্ট কে নিয়ে গ্যাসবেলুন রেইন্ট্রি গাছের মাথায় বেধে রইল। ডেটিং এক্সপার্ট চেচাতে লাগল,,”আমাকে উদ্ধার করতে কেউ আসো, আর কাইন্ডলি একটা প্যান্ট নিয়ে আসো,আমি আন্ডারওয়ার পরি নি,,,” ১ সপ্তাহ পর…. নব্যপ্রেমিক,প্রেমিকা,ডেটিং এক্সপার্ট আর প্রেমিকার বান্ধবী রেস্টুরেন্ট এ গেল খেতে। খাওয়া শেষ হয়ে বের হলে তারা দেখল সামনে ওজন মেশিন নিয়ে এক লোক দাঁড়ানো। প্রেমিকার বান্ধবী বলল,,”১ সপ্তাহ আগে মেপেছিলাম ৪৮ কেজি ছিল,ডায়েটিং করছি,জিরো ফিগার বানাবো,দেখে আসি ওই মেশিনে মেপে,ওজন কত হল।” সবাই মেশিনওয়ালার কাছে আসার পর নব্যপ্রেমিক দেখল,,এটা সেই মেশিনওয়ালা,যার মেশিনে ওজন মাপাতে গিয়েই এত কান্ড। প্রেমিকার বান্ধবী মেশিনে দাড়াতেই অজ্ঞান হয়ে গেল। সবাই দেখল, ওজনের রিডিং এসেছে,, “১৪৮ কেজি” সবাই ধরাধরি করে বান্ধবীকে হাসপাতালে নিয়ে গেল,বান্ধবী জ্বরের ঘোরে আবোলতাবোল বলছে,, “৪৮ থেকে ১৪৮ কেমনে হল?” ডেটিং এক্সপার্ট নব্যপ্রেমিকের কানে কানে বলল,”মামা,ওজন মেশিনে ভুল ছিল।”
গল্পের বিষয়:
হাস্যরস