ঘাটের কথা

ঘাটের কথা

পাষাণে ঘটনা যদি অঙ্কিত হইত তবে কতদিনকার কত কথা আমার সোপানে সোপানে পাঠ করিতে পারিতে। পুরাতন কথা যদি শুনিতে চাও তবে আমার এই ধাপে বইস; মনোযোগ দিয়া জলকল্লোলে কান পাতিয়া থাকো, বহুদিনকার কত বিস্মৃত কথা…
অধ্যাপক

অধ্যাপক

প্রথম পরিচ্ছেদ কলেজে আমার সহপাঠীসম্প্রদায়ের মধ্যে আমার একটু বিশেষ প্রতিপত্তি ছিল। সকলেই আমাকে সকল বিষয়েই সমজদার বলিয়া মনে করিত।  ইহার প্রধান কারণ, ভুল হউক আর ঠিক হউক সকল বিষয়েই আমার একটা মতামত ছিল। অধিকাংশ লোকই…
ইচ্ছেপূরণ

ইচ্ছেপূরণ

সুবলচন্দ্রের ছেলেটির নাম সুশীলচন্দ্র। কিন্তু সকল সময়ে নামের মতো মানুষটি হয় না। সেইজন্যই সুবলচন্দ্র কিছু দুর্বল ছিলেন এবং সুশীলচন্দ্র বড়ো শান্ত ছিলেন না। ছেলেটি পাড়াসুদ্ধ লোককে অস্থির করিয়া বেড়াইত, সেইজন্য বাপ মাঝে মাঝে শাসন করিতে…
প্রিয় পিতামাতার বকবকানি

প্রিয় পিতামাতার বকবকানি

কি রে ফরহাদ? এতো রাত জেগে কি করছিস এখনো? পড়াশোনার তো কোন খোঁজখবর নেই। শুধু মোবাইল টেপাটেপি করেই রাতদিন পার। আর শ্যামলকে দেখ! এখনো ওর রুম থেকে পড়াশোনার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। আর আমার গাধাটি শুধু…
গিন্নি

গিন্নি

ছাত্রবৃত্তি ক্লাসের দুই-তিন শ্রেণী নীচে আমাদের পণ্ডিত ছিলেন শিবনাথ। তাঁহার গোঁফদাড়ি কামানো, চুল ছাঁটা এবং টিকিটি হ্রস্ব। তাঁহাকে দেখিলেই বালকদের অন্তরাত্মা শুকাইয়া যাইত। প্রাণীদের মধ্যে দেখা যায়, যাহাদের হুল আছে তাহদের দাঁত নাই। আমাদের পণ্ডিতমহাশয়ের…
রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা

রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা

যাহারা বলে, গুরুচরণের মৃত্যুকালে তাঁহার দ্বিতীয় পক্ষের সংসারটি অন্তঃপুরে বসিয়া তাস খেলিতেছিলেন, তাহারা বিশ্বনিন্দুক, তাহারা তিলকে তাল করিয়া তোলে। আসলে গৃহিণী তখন এক পায়ের উপর বসিয়া দ্বিতীয় পায়ের হাঁটু চিবুক পর্যন্ত উত্থিত করিয়া কাঁচা তেঁতুল,…
অমৃত

অমৃত

দেড় বছরের ছোট্টো মেয়ে রুমার রাতে প্রস্রাব করে ভিজিয়ে দেওয়া কাঁথাগুলো ধুয়ে শুরু হলো কুলসুমার দিন। এই রমজান মাসেও স্বামীকে সাত সকালে উঠে যেতে হয় অফিসে। তিনি তো রাতে ঘুমান আরাম করে। কিন্তু, ছোট্টো রুমা…
ভয় নাকি ভূতের স্বপ্ন

ভয় নাকি ভূতের স্বপ্ন

এই অতনু শোন, ডাকটা শুনেই বুকের ভিতরটা ধড়ফড় করতে লাগলো। ভয় পাবো বলে আগে থেকেই সিগারেট জ্বালিয়েছি। হুমম বল, বলতেই পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখি কেউ নেই। শরীরটা তখন আরও বেশি শিউরে উঠলো। বুকটা আরও বেশি…
কঙ্কাল

কঙ্কাল

আমরা তিন বাল্যসঙ্গী যে ঘরে শয়ন করিতাম, তাহার পাশের ঘরের দেয়ালে একটি আস্ত নরকঙ্কাল ঝুলানো থাকিত। রাত্রে বাতাসে তাহার হাড়গুলা খট্‌খট শব্দ করিয়া নড়িত। দিনের বেলায় আমাদিগকে সেই হাড় নাড়িতে হইত। আমরা তখন পণ্ডিত-মহাশয়ের নিকট…
সম্পত্তি-সমর্পণ

সম্পত্তি-সমর্পণ

প্রথম পরিচ্ছেদ বৃন্দাবন কুণ্ড মহাক্রুদ্ধ হইয়া আসিয়া তাহার বাপকে কহিল, “আমি এখনই চলিলাম।” বাপ যজ্ঞনাথ কুণ্ড কহিলেন, “বেটা অকৃতজ্ঞ, ছেলেবেলা হইতে তোকে খাওয়াইতে পরাইতে যে ব্যয় হইয়াছে তাহার পরিশোধ করিবার নাম নাই, আবার তেজ দেখো…