ক্যামেরা

ক্যামেরা

এবারে জাপান যাবার সময় আমাদের কাগজের ফোটোগ্রাফার রজত সেন বলেছিল, “সুবীরবাবু, অনেক দিন ধরে আমার শখ একটা জাপানী শিকন ক্যামেরা। তা আপনি যখন জাপান যাচ্ছেন, তখন যদি আমার জন্য একটা ক্যামেরা নিয়ে আসেন।” আমি বলেছিলাম,…
শেষ দৌড়

শেষ দৌড়

শীতকালে বারান্দায় মাদুর পেতে বসে সমু। পুবের লম্বা বারান্দায় সকালের রোদ্দুর ভারী মিষ্টি লাগে। উঠবার সময় সূর্য বাগানের গাছগাছালির ফাঁক দিয়ে অনেক রোদ্দুরের বর্শা ছুঁড়ে দেয়। বই থেকে মুখ তুলে সমু এক-একবার দেখে নেয়। এখন…
রাক্ষস

রাক্ষস

বাড়ির পাশের খেলার মাঠটাতে ঝগড়া বেধে গেল সেদিন খুব। অনেক লোক জড় হয়ে গেল। পাড়ার দু’-একজন বুড়ো ভদ্রলোকও এসে হাজির হয়েছিলেন। কী যেন বলছিলেন হাত নেড়ে নেড়ে। জানালার কাছে বসে বসে পিকলু দেখছিল সব। কিন্তু…
হাওয়া বদল

হাওয়া বদল

গ্রামের জ্ঞাতি কবরেজ-ঠাকুর্দা, কলকাতার নাতি নিমাইচরণের বাড়িতে এসে দাঁড়ানো মাত্রই প্রায় ধিক্কারের গলায় বলে উঠলেন, ‘‘কী রে নিমে, সংসারের মালপত্তর শুধু নিজের পেটেই চালান করিস? ছেলেমেয়েগুলোকে স্রেফ হাওয়া খাইয়ে রাখিয়?’’ এই অভাবিত আক্রমণে নিমাইচরণ থতমত…
কলম্বাসের বাবা

কলম্বাসের বাবা

ভবানীপুর স্পোর্টিং-এর সঙ্গে আমাদের ক্লাবের খেলা, কাল বিকেল তিনটেয়-খবরটা গৌতম আগেই দিয়ে গিয়েছিল। তারপর আধ ঘণ্টাও হয়নি-জানলা দিয়ে দেখতে পেলাম সাইকেল থেকে কেষ্টাকে নামতে। ঊর্ধ্বশ্বাসে পড়ার টেবিল ছেড়ে দৌড়েছি। খুব সময়ে পৌঁছে গেছি যা হোক।…
রেস

রেস

সেদিন শুনলাম কুহু আর কেকাতে আড়ি হয়ে গেছে। হামেশাই হয়ে থাকে। যেখানে যত ভাব, সেখানে তত আড়ি। ওরা তো ছেলেমানুষ। বড়রাও কম যান না। এই তো কদিন আগে মিসেস কাঞ্জিলাল বলছিলেন ওঁদের ‘গৃহলক্ষী ক্লাব’-এর মেম্বার…
আঠা দিয়ে মুণ্ডু আঁটা

আঠা দিয়ে মুণ্ডু আঁটা

দুকড়ি মাঝি, অথবা তেমাথা মাঝি। আমার তোমার একটা করে মাথা, দুকড়ির তিনটে। যেখান থেকে জঙ্গলের শুরু, তার ঠিক আগেই দুকড়ির বাড়ি। বাড়ির সামনে দুকড়ি প্রায়ই উবু হয়ে বসে থাকে। হাঁ, তিন মাথাই তার-এক, দুই, তিন…
কালোদার গল্প

কালোদার গল্প

কালোদা যখন আমাদের বাড়িতে কাজ করতে আসে, আমরা তখন কুলটিতে থাকতাম। কালোদা দেখতে কীরকম বলছি। তার গায়ের রঙ আর মাথার চুলের মধ্যে কোনটা বেশি কালো বলা ভারি মুশকিল। চেহারায় বেশ লম্বা আর রোগা। মুখে কখনও…
হরিণের কান্না

হরিণের কান্না

দুপুরের নীচে সমস্ত নদীটা দেখাচ্ছে যেন হাজার-হাজার হীরে-বসানো বিরাট একটা অলংকার। লঞ্চে চলেছি, মাথার ওপর চিল ডাকছে ঠিকই, কিন্তু লঞ্চের ভট-ভট শব্দে স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি না। মাঝে-মাঝে ছোঁ মেরে জল থেকে মাছ তুলে নিয়ে দূরে…
হরিণের মায়ায়

হরিণের মায়ায়

যে লোকটা বাঁধছিল, সে হরিণের শিঙের গোড়ার বাঁধন শক্ত করতে-করতে বলল, ‘‘আমি এটাকে নদীর ওপার থেকে ধরে নৌকোয় করে এতটা টেনে এনেছি ছেড়ে দেবার জন্যে নয়। ব্যাটা দিব্যি আসছিল, ডাঙায় পা দিয়েই দড়ি ছিঁড়ে দে…