ওলো সোনার বরণী, তোমার সিন্দুর নি নিবারে সজনি! রাঙা তোমার ঠোঁটরে কন্যা, রাঙা তোমার গাল, কপালখানি রাঙা নইলে লোকে পাড়বে গালরে; তোমার সিন্দুর নি নিবারে সজনি! সাঁঝের কোলে মেঘরে-তাতে রঙের চূড়া, সেই মেঘে ঘষিয়া সিন্দুর…

বাঁশরী আমার হারায়ে গিয়েছে বালুর চরে, কেমনে ফিরিব গোধন লইয়া গাঁয়ের ঘরে। কোমল তৃণের পরশ লাগিয়া, পায়ের নুপুর পড়িয়াছে খসিয়া। চলিতে চরণ ওঠে না বাজিয়া তেমন করে। কোথায় খেলার সাথীরা আমার কোথায় ধেনু, সাঝেঁর হিয়ায়…

নিশিতে যাইও ফুলবনে রে ভোমরা নিশিতে যাইও ফুলবনে। জ্বালায়ে চান্দের বাতি আমি জেগে রব সারা রাতি গো; কব কথা শিশিরের সনে রে ভোমরা! নিশিতে যাইও ফুলবনে। যদিবা ঘুমায়ে পড়ি- স্বপনের পথ ধরি গো, যেও তুমি…

নদীর কূল নাই-কিনার নাইরে; আমি কোন কূল হইতে কোন কূলে যাব কাহারে শুধাইরে? ওপারে মেঘের ঘটা, কনক বিজলী ছটা, মাঝে নদী বহে সাঁই সাঁইরে; আমি এই দেখিলাম সোনার ছবি আবার দেখি নাইরে; আমি দেখিতে দেখিতে…

ও মোহন বাঁশী! বাজাও বাজাওরে কানাই! ধীরে অতি ধীরে; আমি জল আনিতে যমুনাতে, ও বাঁশী শুনব ফিরে ফিরেরে কানাই! ধীরে অতি ধীরে। কলসী ভরার ছলে, তোমার ছায়া দেখব জলেরে কানাই! আমি হারায়ে পায়ের নূপুর, ও…

ও তুই যারে আঘাত হানলিরে মনে সেজন কি তোর পর, সে ত তোরি তরে কেন্দে কেন্দে বেড়ায় দেশান্তর; রে বন্ধু! তোরি তরে সাজাইলাম বন-ফুলের ঘর, রে বন্ধু মন-ফুলের ঘর, ও তুই ভোমর হয়া হানলি কাঁটা…

ও আমার গহিন গাঙের নায়া, ও তুমি অফর বেলায় লাও বায়া যাওরে- কার পানে বা চায়া। ভাটির দ্যাশের কাজল মায়ায়, পরাণডা মোর কাইন্দা বেড়ায়রে- আবছা মেঘে হাতছানি দ্যায়, কে জানি মোর সয়া। এই না গাঙের…

উজান গাঙের নাইয়া! কইবার নি পাররে নদী গেছে কতদূর? যে কূল ধইরা চলেরে নদী সে কূল ভাইঙ্গা যায়, আবার আলসে ঘুমায়া পড়ে সেই কূলেরি গায়; আমার ভাঙা কূলে ভাসাই তরীরে যদি পাই দেখা বন্ধুর। নদীর…

আরে ও রঙিলা নায়ের মাঝি। তুমি এই ঘাটে লাগায়ারে নাও লিগুম কথা কইয়া যাও শুনি। তোমার ভাইটাল সুরের সাথে সাথে কান্দে গাঙের পানি, ও তার ঢেউ লাগিয়া যায় ভাসিয়া কাঙ্খের কলসখানি। পূবালী বাতাসে তোমার নায়ের…

আমার বন্ধু বিনোদিয়ারে প্রাণ বিনোদিয়া; আমি আর কতকাল রইব আমার মনেরে বুঝাইয়ারে; প্রাণ বিনোদিয়া। কি ছিলাম, কি হইলাম সইরে, কি রূপ হেরিয়া, আমি নিজেই যাহা বুঝলাম না সই, কি কব বুঝাইয়ারে; প্রাণ বিনোদিয়া। চোখে তারে…