যাবেন না

যাবেন না

কখন যে একদল মানুষ আমাকে ঘিরে ফেলেছে, তা আমি বুঝতে পারিনি। হাত ধরে যিনি আমাকে আজ এই হাটের মধ্যে এনে ছেড়ে দিয়েছিলেন, চোখের পলক ফেলতে-না-ফেলতেই তিনি ভ্যানিশ। বুঝতে পারছিলুম যে, আমারও এখন সরে পড়া দরকার।…
আগুনের দিকে

আগুনের দিকে

রাস্তাগুলি ক্রমে আরও তপ্ত হয়। স্বজন, সঙ্গীর সংখ্যা ক্রমে আরও কমে আসে। হাতের মুদ্রায় তবু জাইয়ে রেখেছ বরাভয় হাওয়ার ভিতরে তবু ভাসে তোমার সৌরভ। আর তাই চতুর্দিকে ছত্রাকার ধড়মুণ্ড-আলাদা-করা শব দেখেও আমাকে এগিয়ে যেতেই হয়,…
উলঙ্গ রাজা

উলঙ্গ রাজা

সবাই দেখছে যে, রাজা উলঙ্গ, তবুও সবাই হাততালি দিচ্ছে। সবাই চেঁচিয়ে বলছে; শাবাশ, শাবাশ! কারও মনে সংস্কার, কারও ভয়; কেউ-বা নিজের বুদ্ধি অন্য মানুষের কাছে বন্ধক দিয়েছে; কেউ-বা পরান্নভোজী, কেউ কৃপাপ্রার্থী, উমেদার, প্রবঞ্চক; কেউ ভাবছে,…
কবিতা ‘৭০

কবিতা ‘৭০

এক-একটা কবিতা যেন সুতানুটি-গোবিন্দপুরের রাত্রিকে ফিরিয়ে আনে। এক-একটি কবিতা যেন অকস্মাৎ টান্‌ মেরে হটিয়ে দেয় ময়দানের সবুজ গালিচা। গঙ্গাসাগরের দিকে অগ্রসরমান যাত্রিবোঝাই নৌকাকে এক-একটি কবিতা যেন রমনীর নখে, ওষ্ঠে, জঙ্ঘাদেশে, হাতের মুদ্রায় বিষাক্ত ফুলের মতো…
কলঘরে চিলের কান্না

কলঘরে চিলের কান্না

এখনও তোমার সেই ডানা ঝাপটানোর শব্দ শুনতে পাই; এখনও তোমার সেই দারুন বিলাপ কানে বাজে। গগণবিহারী চিল, খর দীপ্র দুপুরবেলায় তুমি এক আকাশের থেকে অন্য আকাশের দিকে তেজস্বী ও স্বভাবত-সঙ্গিবিহীন সম্রাটের মত সহজ উল্লাসে বাতাসে…
জোড়া খুন

জোড়া খুন

লোভ আমাকে অরণ্যের দিকে টেনে আনে। তারপর অচেনা সেই অরণ্যের মধ্যে ভয় আমাকে দিগ্বিদিকে ছুটিয়ে নিয়ে বেড়ায়। আমি ঠিক করেছিলুম, আমার এই যুগল-শত্রুকে আমি শেষ না করে ছাড়ব না। আগে আমি লোভের মরামুখ দেখব। তারপর…
না এলে না-ই বা এলে

না এলে না-ই বা এলে

না এলে না-ই বা এলে, তাই বলে কি এ-জন্মে আমার পরিত্রাণ নেই? তুমি যত ধোঁকা দাও, তুমি যত চালাক মাছের মতো দূরে-দূরে ঘোরাফেরা করো, আমারও ততই জেদ বেড়ে যায়, আমি শব্দনির্বাচনে তত সতর্ক হবার চেষ্টা…
রক্তপাত, পড়ন্ত বেলায়

রক্তপাত, পড়ন্ত বেলায়

আজকের মতো খেলা তো প্রায় খতম হতে চলল। আর মাত্র মিনিট পাঁচেক বাকি। যাও বাছা, মাঠে গিয়ে এই পাঁচটি মিনিট তুমি কোনোক্রমে দাঁড়িয়ে থাকো। চেয়ে দ্যাখো, আলো পড়ে এসেছে। চেয়ে দ্যাখো, ওদের বোলারদের চোখ। লোভে…
স্বপ্নে-দেখা ঘরদুয়ার

স্বপ্নে-দেখা ঘরদুয়ার

পুকুর, মরাই, সবজি-বাগান, জংলা ডুরে শাড়ি, তার মানেই তো বাড়ি। তার মানেই তো প্রাণের মধ্যে প্রাণ, নিকিয়ে-নেওয়া উঠোনখানি রোদ্দুরে টান্‌-টান্‌। ধান খুঁটে খায় চারটে চড়ুই, দোলমঞ্চের পাশে পায়রাগুলো ঘুরে বেড়ায় ঘাসে। বেড়ালটা আড়মোড়া ভাঙছে; কুকুরটা…
হ্যালো দমদম

হ্যালো দমদম

আমার হাতের মধ্যে টেলিফোন; আমার পায়ের কাছে খেলা করছে সূর্যমণি মাছেরা। পিচ-বাঁধানো সড়কের উপর দিয়ে নৌকো চালিয়ে আমি পৃথিবীর তিন-ভাগ জল থেকে এক-ভাগ ডাঙায় যাব। সেই নৌকোর জন্যে আমি বসে আছি; আর, পাঁচ মিনিট পরপর…