এ কেমন বিদ্যাসাগর

এ কেমন বিদ্যাসাগর

আমার শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের দিনগুলি আজ হাজার টুকরো হয়ে হাজার জায়গায় ছড়িয়ে আছে। আমার বালিকাবয়সী কন্যা যেমন নতজানু হয়ে তার ছিন্ন মালার ভ্রষ্ট পুঁতিগুলিকে একটি-একটি করে কুড়িয়ে নেয়, আমিও তেমনি আমার ছত্রখান সেই বিগত-জীবনের…
চন্দন-মুর্তি

চন্দন-মুর্তি

বৌদ্ধ ভিক্ষু বলিতে যে-চিত্রটি আমাদের মনে উদয় হয়, একালের সাধারণ বাঙালীর চেহারার সঙ্গে সে-চিত্রের মোটেই মিল নাই। অথচ, যাঁহার কথা আজ লিখিতে বসিয়াছি সেই ভিক্ষু অভিরাম যে কেবল জাতিতে বাঙালী ছিলেন তাহাই নয়, তাঁহার চেহারাও…
ইন্দ্রতূলক

ইন্দ্রতূলক

ইতিহাসের পণ্ডিত বলিলেন, গল্প শোনো। কাল রাত্রে প্রাচীন ইতিহাসের এক পুঁথি পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছিলুম খুবই স্বাভাবিক। ইতিহাসের পুঁথি পড়িতে পড়িতে ঘুমাইয়া পড়ে না এমন মানুষ আমি দেখি নাই। পণ্ডিত বলিতে লাগিলেন, ঘুমিয়ে এক স্বপ্ন…
আদিম

আদিম

এই কাহিনীতে আদৌ স্থান কাল পাত্র-পাত্রীর প্রকৃত নাম বদল করিয়া লিখিতেছি। মহারাজ সূর্যশেখর শত্রু জয় করিয়া স্বরাজ্যে ফিরিয়াছেন। মরুভূমির পরপারে নির্জিত শত্রু মাথা নত করিয়াছে। মহারাজ সূর্যশেখর সহস্র বন্দী ও সহস্র বন্দিনী সঙ্গে করিয়া আনিয়াছেন।…
দাদার কীর্তি

দাদার কীর্তি

না, দাদা, তোমার বিয়েটা না হলেই নয়। অভ্ৰভেদী গাম্ভীর্য রক্ষা করিবার জন্য দাদা টেবিলের উপর পা তুলিয়া দিয়া চেয়ারের উপর আড় হইয়া বসিলেন। চক্ষু অর্ধমুদ্রিত করিয়া বলিলেন, হুঁঃ, নিজের চরকায় তেল দে। আমি বলিলাম, তেল…
অষ্টম সৰ্গ

অষ্টম সৰ্গ

সেদিন সন্ধ্যার আকাশে দ্রুত সঞ্চরমাণ মেঘের দল শিপ্রার বিষর্ষিকীত বক্ষে ধূমল ছায়া ফেলিয়া চলিয়াছিল। বৃষ্টি পড়িতেছে না বটে, কিন্তু পশ্চিম হইতে খর আদ্ৰ বায়ু বহিতেছে–শীঘ্রই বৃষ্টি নামিবে। ছিন্ন ধাবমান মেঘের আড়ালে পঞ্চমীর চন্দ্ৰকলা মাঝে মাঝে…
অমিতাভ

অমিতাভ

যত অসম্ভব কথাই বলি না কেন, যদি একজন বড় পণ্ডিতের নাম সেই সঙ্গে জুড়িয়া দিতে পারি, তবে আর কথাটা কেহ অবিশ্বাস করে না। আমি যদি বলি, আজ রাত্ৰিতে অন্ধকার পথে একেলা আসিতে আসিতে একটা ভূত…
তোমার জন্য ভাবি না

তোমার জন্য ভাবি না

তুমি তোমার ছেলেকে অহোরাত্রি অসংখ্য মিথ্যার বিষ গলিয়েছ। শৈশবে সে হাসেনি, কেননা সমবয়সীদের সে শত্রু বলে জানত। যৌবনে সে নারীকে ভালবাসেনি, কেননা নারীকে সে নরক বলে জানে। ধীরে-ধীরে সেই অকালবার্ধক্যের দিকে সে এখন এগিয়ে যাচ্ছে,…
পাতাগুলি

পাতাগুলি

পাতাগুলি উল্টেপাল্টে নিজেকে দেখায় যখনই বাতাস এসে নাড়া দিয়ে যায় বৃক্ষের বাড়িতে অশ্বত্থের পাতা এক্ষুনি সবুজ, কিন্তু পরক্ষণে সাদা। হাক্লান্ত দৌড়চ্ছে গাড়ি, মস্ত একটা ফিতে খুব দ্রুত গুটিয়ে তুলছে কেউ, রোদ্দুরে ঝিমোচ্ছে শক্ত লালমাটির ঢেউ…
খুকুর জন্য

খুকুর জন্য

যার যেখানে জায়গা, যেন সেইখানে সে থাকে। যা মনে রাখবার, যেন রাখে নিতান্ত সেইটুকু। খুকু, ঘরে একটা জানলা চাই, বাইরে একটা মাঠ। উঠোনে একটিইমাত্র কাঠ- গোলাপের চারা আস্তেসুস্থে বড় হোক, কিচ্ছু নেই তাড়া। একদিন সকালে…